৪৮ ঘণ্টায় আসামি ধরার আশ্বাসে রাজপথ ছাড়লো বিক্ষুব্ধরা

রাজধানী ঢাকার কাকরাইলের উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী সুরাইয়া আক্তার রিশা হত্যার আসামি ওবায়দুল খানকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে পুলিশ। তাদের অনুরোধ ও আশ্বাসে আপাতত কাকরাইল মোড় ছেড়েছে রিশার পরিবার, সহপাঠী ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা।

প্রতিবাদে উত্তাল কাকরাইল মোড়

আজ সোমবার দুপুর ১২টার দিকে স্কুলের শিক্ষার্থীরা কাকরাইল মোড় অবরোধ করে রিসা হত্যাকারীকে গ্রেপ্তারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে। রাজধানীর ব্যস্ততম এই সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করায় আশপাশের সড়কগুলোতে ব্যাপক যানজট তৈরি হয়। বেলা সোয়া দুইটার দিকে শিক্ষার্থীরা কাল দুপুর ১২ পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত করেন। এ সময়ের মধ্যে আসামি গ্রেপ্তার না হলে আবার আন্দোলন শুরু হবে বলে তারা জানিয়েছে।

গত ২৪ আগস্ট কাকরাইলে উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের সামনে ছুরিকাঘাতে আহত হয় রিশা। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল সে মারা যায়।

রিশার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে গতকালই কাকরাইল মোড়ে উইলস লিটল ফ্লাওয়ারের শিক্ষার্থীসহ অনেকে এই হত্যার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করে।

বিচার চাইলেন শিক্ষামন্ত্রীও

রাজধানী ঢাকার কাকরাইলের উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী সুরাইয়া আক্তার রিশা হত্যার বিচার দাবিতে সকাল থেকে বিক্ষোভ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির সব শিক্ষার্থী। বেলা ১২টার দিকে এখানে আসেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।

বিক্ষুদ্ধরা তার আগে থেকেই কাকরাইল মোড়ে অবস্থান নিয়েছেন। রিশার পরিবারের সদস্য ও সহপাঠীরাও এখানে আছেন।

আন্দোলনকারীদের সঙ্গে একাত্ম্য হয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘যারা আমাদের শিক্ষার্থীদের হত্যা করে তারা মানুষ নামে পশু। এই হত্যা আমি মেনে নিতে পারি না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আমি এ বিষয়ে যোগাযোগ করে এসেছি। আমিও এই হত্যার বিচার চাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের কারও গায়ে আঘাত মানবো না। তাদের নিরাপত্তা চাই। কোনও শিক্ষার্থী ভুল করলে আমাকে বিচার দেবেন, আমি তা দেখবো।’

নাহিদ বলেন, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেছি, সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও পরিবারের দাবি খুনির বিচার। এটা অবিলম্বে কার্যকর করতে হবে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’

রিশায় হত্যায় অভিযুক্ত ওবায়দুলের ছবি গণমাধ্যমে এসেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সে এখন আর অপরিচিত নয়। তাকে যে যেখানে দেখবেন সেখানেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে খবর দিয়ে তাকে ধরিয়ে দেবেন।’

এখনো অধরা আসামি ওবায়দুল

নিহত রিশার মা তানিয়া হোসেনের অভিযোগ, ওবায়দুল খান নামের এক পোশাক তৈরির কারিগর রিশাকে ছুরিকাঘাত করেছে।

রিশা আহত হলে পর দিন তিনি বাদি হয়ে রমনা মডেল থানায় ওবায়দুল খানকে একমাত্র অভিযুক্ত করে একটি মামলা করেন।

মামলায় বাদি জানিয়েছেন, তারা রাজধানীর ইস্টান মল্লিকা মার্কেটের বৈশাখী টেইলার্সে কাপড় সেলাই করতে যেতেন। সেখানে কর্মরত কাটিং মাষ্টার ছিল ওবায়দুল খান। সে প্রায়ই রিশাকে উত্ত্যক্ত করত। বিষয়টি রিশা তার মাকে বলেছে। সে রিশাকে ছুরিকাঘাত করেছে।

উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের এক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘পুলিশকে অবশ্যই উইলস লিটিল ফ্লাওয়ার স্কুলের মূল গেটের সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করতে হবে। কে তাকে ছুরিকাঘাত করেছে তার সবকিছু উন্মোচন হতে পারে ওই ভিডিও ফুটেজে।’

অভিযুক্ত ওবায়দুল খানকে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এ বিষয়ে রমনা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান বলেন, ‘মূল আসামিকে গ্রেপ্তার করতে বিভিন্নস্থানে অভিযান চালানো হচ্ছে।’



মন্তব্য চালু নেই