২১ জঙ্গি ঠাণ্ডা মাথার খুনি : মাদক গ্রহণের প্রমাণ মেলেনি
দেশের বহুল আলোচিত গুলশানের আর্টিসান রেস্তোরাঁসহ কল্যাণপুর, নারায়ণগঞ্জ ও শোলাকিয়ায় নিহত ২১ জঙ্গি ছিলো ঠাণ্ডা মাথার খুনি। রাসায়নিক পরীক্ষাগারে তাদের ভিসেরা পরীক্ষায় ক্যাপ্টাগন, ইয়াবা বা অন্য কোনো ধরনের মাদক গ্রহণের প্রমাণ মেলেনি। সিআইডি রাসায়নিক পরীক্ষাগারের প্রধান ড. দিলীপ কুমার ঘোষ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, রাজধানীর গুলশান, কল্যাণপুর, নারায়ণগঞ্জ ও শোলাকিয়ার ঘটনায় নিহত মোট ২১ জঙ্গির ভিসেরা পরীক্ষার জন্য নমুনা (স্টমাক, লিভার, কিডনি ও রক্ত) পাঠানো হয়। পরীক্ষায় তাদের কারও দেহে ক্যাপ্টাগন, ইয়াবা কিংবা অন্য কোনো ধরনের মাদক গ্রহণের প্রমাণ মেলেনি।
গুলশানে দেশি-বিদেশি নাগরিকদের নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যার পরবর্তী দৃশ্যপট দেখে অপরাধ বিশেষজ্ঞরা ধারণা করেছিলেন আইএসের মতো দেশীয় জঙ্গিরাও হয়তো ক্যাপ্টাগন কিংবা ইয়াবাজাতীয় উদ্দীপক মাদক গ্রহণ করে মাদকাসক্ত অবস্থায় এসব হত্যাকাণ্ড ঘটায়। ফলে চিকিৎসকরা নিহত জঙ্গিদের ময়নাতদন্ত শেষে তাদের ভিসেরা পরীক্ষার জন্য মহাখালীর সিআইডি রাসায়নিক পরীক্ষাগারে নমুনা পাঠান। তবে নমুনা পরীক্ষায় নিহত জঙ্গিদের দেহে ক্যাপ্টাগন, ইয়াবা বা অন্য কোনো ধরনের মাদক গ্রহণের প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
ল্যাব সূত্রে জানা গেছে, শুধু গুলশানেই নয়, কল্যাণপুর, নারায়ণগঞ্জ কিংবা শোলাকিয়ায় নিহত জঙ্গিদের দেহেও মাদক গ্রহণের কোনো প্রমাণ মেলেনি। এছাড়া বিষজাতীয় কোনো কিছু গ্রহণের প্রমাণও পাওয়া যায়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগ থেকে গুলশানের ৭ জন, কল্যাণপুরের ৯ জন, নারায়ণগঞ্জের তিনজনের ভিসেরা ও রক্তের নমুনা সিআইডি রাসায়নিক পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়। এছাড়া ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ থেকে শোলাকিয়ার দুই জঙ্গির নমুনা পাঠানো হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ল্যাবের এক কর্মকর্তা জানান, জঙ্গিরা ঠাণ্ডা মাথায় খুন করেছে। গুলশান হত্যাকাণ্ডের ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, কি ধরনের ব্রেনওয়াশ হলে তারা এতটা অমানবিক হতে পারে।
সূত্রে আরো জানা গেছে, গতকাল বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সিআইডি ল্যাব থেকে নমুনা সংশ্লিষ্ট ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগে পাঠানো হয়।
উল্লেখ্য, গত ১ জুলাই (শুক্রবার) গুলশানের আর্টিসান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলার ঘটনায় ২০ জিম্মিসহ মোট ২২ জন নিহত হন। পরদিন সকালে সেনাবাহিনীর অপারেশন থান্ডারবোল্টে ৬ জঙ্গি নিহত হয়। এছাড়া রাজধানীর কল্যাণপুর, নারায়ণগঞ্জ ও শোলাকিয়ায় পৃথক ঘটনায় আরো ১৪ জন জঙ্গি নিহত হয়।খবর জাগো নিউজের।
মন্তব্য চালু নেই