২০৪১ সালের মধ্যে বাল্যবিয়ের অবসান: প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশে ২০৪১ সালের আগেই বাল্যবিয়ের অবসান ঘটানোর অঙ্গীকারের কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ইতোমধ্যে স্কুলে যাওয়ার ক্ষেত্রে মেয়েরা ছেলেদের চেয়ে এগিয়ে গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের সামনে এক অনুপ্রেরণাদায়ী বক্তৃতায় নারীর অগ্রগতি নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের নানা উদ্যোগের কথা তিনি তুলে ধরেন।
শেখ হাসিনা বলেন, “আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, ২০৪১ সালের মধ্যে আমাদের সমাজে বাল্যবিয়ের অবসান হবে। এরই মধ্যে আমরা বেশ কিছু কার্যকর উদ্যোগ নিয়েছি, যার মাধ্যমে এই লক্ষ্য বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।”
জাতিসংঘ অধিবেশন উপলক্ষে নিউ ইয়র্কে অবস্থানরত শেখ হাসিনা শুক্রবার সন্ধ্যা কাটান কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়ার্ড লিডারস ফোরামে ‘গার্লস লিড দ্য ওয়ে’ শীর্ষক বক্তৃতার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নেরও উত্তর দেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
এক ছাত্রীর প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ বাল্যবিয়ের প্রবণতা রোধ করতে চায়। এ লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যসহ উন্নত দেশগুলোর রীতি পর্যালোচনা করে দেখা হচ্ছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা যায়, এ দেশে ৭৭ শতাংশ নারীর বিয়ে হয় ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ার আগে। এর মধ্যে ২৪ শতাংশ ১৫ বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই বিয়ের পিঁড়িতে বসতে বাধ্য হয়।
যোগ্য ও পছন্দসই পাত্র ‘হাতছাড়া’ না করতে অভিভাবকরা ১৮ বছর বয়সের আগেই মেয়েদের বিয়ে দেন বলে ওই গবেষণায় উঠে এসেছে।
বাংলাদেশের আইনে ছেলের বয়স ২১ ও মেয়ের বয়স ১৮ বছরের কম হলে তা ‘বাল্যবিয়ে’ এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে গণ্য করা হয়।
কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের প্রধানমন্ত্রী জানান, তার সরকার এ আইন সংশোধন করে সময়োপযোগী করার উদ্যোগ নিয়েছে।
তিনি বলেন, “সব বাধা বিপত্তি ভেঙে মেয়েরা জাতি গঠনের পথে এগিয়ে যাবে, সেটাই আমার শান্তি আর উন্নয়ন চিন্তার অন্যতম ভিত্তি।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বে মেয়েদের অগ্রগতি এখনও অসম পর্যায়ে রয়েছে। সংঘাতময় এলাকাগুলোতে মেয়েরা অনেক পিছিয়ে। বিশ্বের ৬ কোটি শিশু এখনও স্কুলে যেতে পারছে না, যাদের অধিকাংশই মেয়ে। তবে বাংলাদেশে ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা এখন বেশি স্কুলে যাচ্ছে।
মন্তব্য চালু নেই