চিকিৎসকের অবহেলায় রোগীর মৃত্যু

রামেকে সাংবাদিক পেটানোর প্রতিবাদে মিছিল-সমাবেশ, ওসি প্রত্যাহার

চিকিৎসকের অবহেলায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় খবর সংগ্রহের জন্য সাংবাদিকরা হাসপাতালে গেলে ইন্টার্ন ডাক্তাররা তাদের মারধর ও ক্যামেরা ভাঙচুর করে। রোববার মধ্য রাতে এমন ঘটনা ঘটে। তারই প্রতিবাদে সোমবার দুপুরে বিক্ষোভ মিছিল-সমাবেশ করেছে সাংবাদিক সমাজ।
এদিকে চিকিৎসকদের হামলার সময় কর্তব্যরত পুলিশের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ ওঠায় সাংবাদিকদের দাবির প্রেক্ষিতে রাতেই বোয়ালিয়া থানার ওসি সাইদুর রহমান ভূইয়াকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
জানা গেছে, ইন্টার্ন ডাক্তারদের মারধরে চ্যানেল২৪ এর ক্যামেরাপারসন রায়হানুল ইসলাম, যমুনা টেলিভিশনের ক্যামেরাপারসন রাসেল, মাছরাঙার মাসুদ, এটিএন নিউজের রুবেলসহ ৫ জন গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এছাড়া এ ঘটনায় ১২ সাংবাদিক আহত হয়েছেন। ভাঙচুর করা হয়েছে চারটি ক্যামেরা।
এর আগে রোববার একুশে টেলিভিশনের অনুসন্ধানমূলক ‘একুশের চোখ’ অনুষ্ঠানের ক্যামেরাম্যানসহ ৬ সাংবাদিককে পিটায় স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালের শিক্ষানবীশ চিকিৎসকরা। সেই সঙ্গে তাদের সঙ্গে থাকা ক্যামেরা, বুম ও মোবাইল ভাঙচুর করা হয়। আহত কয়েক সাংবাদিককে ঢাকায় নেয়া হয়েছে।
এ ঘটনার প্রতিবাদে সেখানকার কর্মরত সাংবাদিকরা মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ কর্মসূচি ঘোষনা করে। দুপুরে রাজশাহীর সাহেব বাজারের জিরোপয়েন্ট এলাকায় এ কর্মসূচি পালিত হয়।
এদিকে, হামলার খবর পেয়ে রাতেই সাংবাদিক সংগঠনের নেতা ও রাজশাহীর সকল গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা হাসপাতালে ছুটে যান। পুরো ঘটনার প্রতিবাদে সাংবাদিকরা রাতেই হাসপাতালে সামনে অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ জানান। এ সময় সাংবাদিকরা দায়িত্বে অবহেলার জন্য ওসি সাইদুর রহমানকে প্রত্যাহারসহ হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানায়।
এক পর্যায়ে পুলিশের উপর চড়াও হন সাংবাদিকরা। খবর পেয়ে সেখানে ছুটে যান রাজশাহী-১ (সদর) আসনের সাংসদ ও হাসপাতাল পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফজলে হোসেন বাদশা, রাজশাহী-৩ আসনের সাংসদ আয়েন উদ্দিন, সিটি মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, পুলিশ কমিশনার মাহবুর রহমান ও হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম নাসির উদ্দিন। অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা সাইদুরকে তাৎক্ষণিকভাবে সবার সামনেই প্রত্যাহার করেন পুলিশ কমিশনার।
সাংসদ ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, “সোমবার এ ঘটনার তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। ভিডিও ছবি দেখে সাংবাদিকদের উপর হামলার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।”
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আ.স.ম বরকত উল্লাহ বলেন, হাসপাতালে কেন এবং কীভাবে এ সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি করা হবে। তদন্ত করে এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সাংবাদিকদের উপর হামলায় দুঃখ প্রকাশ করে তিনি বলেন, দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।


মন্তব্য চালু নেই