১০ টাকার চালে অনিয়ম, ২৬ পরিবেশকের লাইসেন্স বাতিল
হতদরিদ্রদের জন্য ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রি কর্মসূচিতে অনিয়মের অভিযোগে ময়মনসিংহের নান্দাইল ও লক্ষ্মীপুররে মোট ২৬ পরিবেশকের লাইসেন্স বাতিল হয়েছে। এর মধ্যে নান্দাইলেই বাতিল হয়েছে ২৪ জনের লাইসেন্স।
পরিবেশকদের বিরুদ্ধে বরাদ্দের চেয়ে চাল কম দেয়া, হতদরিদ্রের বদলে স্বচ্ছলদের অন্তর্ভূক্ত করা, কার্ড ছাড়া চাল বিক্রি করাসহ নানা অভিযোগ রয়েছে।
গত ৭ সেপ্টেম্বর কুড়িগ্রামের রৌমারীতে ১০ টাকা কেজি দরের চাল বিতরণ কর্মসূচি উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর দেশের বিভিন্ন এলাকায় এই চাল বিক্রি শুরু হয়। উদ্বোধনের দিনই এই কর্মসূচিতে কোনো অনিয়ম হলে তা বরদাশত না করার হুঁশিয়ারি দেন খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম।
কিন্তু শুরু থেকেই পরিবেশক ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতি, ঘুষ, ওজনে কারচুপি বা পুরো চালই বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এই প্রেক্ষিতে গত ৫ অক্টোবর জাতীয় সংসদে দেয়া ভাষণে ১০ টাকা কেজি দরের চালে কোনো অনিয়ম হলে জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দেন।
প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের দুদিন পর নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় এক ইউপি চেয়ারম্যান এবং তালিকায় অন্তর্ভূক্ত কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। তাদের সবাই বিত্তশালী হয়েও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি
নান্দাইলে সরকারি কর্মকর্তার পরিদর্শনে অনিয়মের প্রমাণ
বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে পরিবেশকদের অনিয়মের খবর প্রকাশিত হওয়ার পর নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহনুর আলম পরিবেশক নিয়োগ কমিটির জরুরি সভা করে অভিযুক্তদের লাইসেন্স বাতিলের সিদ্ধান্ত নেন।
স্থানীয়রা জানান, সপ্তাহের শুক্র, শনি ও মঙ্গলবার খাদ্য সরবরাহকারীদের দোকানে ব্যানার টানিয়ে সকাল নয়টা থেকে বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত চাল বিক্রি করার কথা থাকলেও তারা তা করছেন না। তাদের বিরুদ্ধে এমন নানা অনিয়মের অভিযোগ পেয়ে উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) তামিম আল ইয়ামীন চাল বিক্রির কার্যক্রম পরিদর্শনে যান।
পরিদর্শনে পরিবেশকদের দোকান বন্ধ, ওজনে কম দেয়া, কার্ড ছাড়াও চাল বিক্রির প্রমাণ পাওয়া যায়। এ রবিবার নিয়ে ন্যায্যমূল্যে চাল বিক্রির উপজেলা কমিটির জরুরি সভা বসে। পরে ওই সভায় ২৪ জনের লাইসেন্স বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহনুর আলম জানান, চাল বিতরণে স্বচ্ছতা আনার জন্য ২৬ হাজার উপকারভোগীর কার্ড পুনঃপরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে।
লক্ষ্মীপুরে চাল বিতরণ না করে বিক্রি
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার ভাদুর, চন্ডিপুর ও ইছাপুর ইউনিয়নে ১০টাকা কেজি দলে চাল বিক্রিতে অনিয়মের অভিযোগে দুইজনের ডিলারশিপ বাতিল করা হয়েছে। এরা হলেন ওই আবুল খায়ের ও হাছান তারেক।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবু ইউসুফ জানান, উপজেলা আইনশৃঙ্খলা উন্নয়ন কমিটির সভায় তাদের ডিলারশিপ বাতিল করার সিদ্ধান্ত হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন লক্ষ্মীপুর-৪ রামগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য এম এ আউয়াল।
এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবু ইউসুফকে প্রধান করে তিন সদস্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, উপজেলার ভাদুর, চন্ডিপুর ও ইছাপুর ইউনিয়নে পরিবেশকরা হতদরিদ্রদের মধ্যে চাল বিক্রি না করে আত্মসাৎ করেন। এ নিয়ে ভাদুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদ হোসেন ভূঁইয়া গত শনিবার রাতে তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।
এ নিয়ে রবিবার দুপুরে আইনশৃঙ্খলা উন্নয়ন সভায় ডিলার আবুল খায়ের ও হাছান তারেকের ডিলার বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়।
মন্তব্য চালু নেই