হিন্দু বিতাড়নে বাংলাদেশে সব সরকারে ঐক্য প্রবল : সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত
বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা এবং সাবেক মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছেন, বাংলাদেশে যে ধরণের সরকারই ক্ষমতায় থাকুক না কেন, সবার মধ্যেই সংখ্যালঘুদের বিতাড়নে ঐক্যবদ্ধ মনোভাব লক্ষ্য করা গেছে।
বৃহস্পতিবার রাতে চ্যানেল আই’তে প্রচারিত বিবিসি বাংলার প্রবাহ টেলিভিশন অনুষ্ঠান তিনি বলেন, “একটা মজার ব্যাপার হলো – সাম্প্রদায়িক, অসাম্প্রদায়িক, জঙ্গিবাদী কিংবা উগ্র-সাম্প্রদায়িক যে সরকারই থাকুক না কেন, হিন্দু বিতাড়নে বা ধর্মীয় সংখ্যালঘু বিতাড়নে এখানে একটা প্রবল ঐকমত্য আছে।”
হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের প্রতিবেদন অনুসারে, ২০০১ সাল পরবর্তী ১৩ বছরে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে ২০,০০০-এর বেশি।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্য বলছে, ২০১৩ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষদের বাড়ি-ঘর-মন্দির ও পূজা মণ্ডপে ভাংচুর এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনা ছিল ২,৫০০-এর বেশি। আর চলতি বছর অক্টোবর পর্যন্ত প্রায় ৩০০টি হামলার ঘটনা ঘটেছে।
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, বর্তমানে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়াতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে ব্যবহার করা হচ্ছে এবং কোন সুষ্ঠু তদন্ত-প্রমাণ না করেই হামলা চালানো হচ্ছে।
ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষেরা মনে করছেন অতীতে হামলার বিভিন্ন ঘটনার বিচার না হওয়ায় এসব হামলা থামছে না। হিন্দু সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে এ জন্য আলাদা আইনের প্রয়োজনীয়তার কথাও বলা হচ্ছে।
তবে অভিজ্ঞ পার্লামেন্টারিয়ান মি. সেনগুপ্ত মনে করেন যে আইনের সমস্যা নয়, বরং এখানে রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও মানসিকতার বিষয়গুলো জড়িত।
“অসাম্প্রদায়িকতা এমন একটা জিনিস, যা আইন করে কাউকে শেখানো যাবে না।”
বাংলাদেশে হিন্দু জনসংখ্যা কমে আসছে এ কথা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, “আমি তো ইসলামিক রিপাবলিক অব বাংলাদেশ করার জন্য মুক্তিযুদ্ধ করিনি”।
সাম্প্রতিক সময়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও পাবনা সহ দেশের বেশ কিছু স্থানে হিন্দুদের ওপর হামলা-ভাংচুরের ঘটনার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ব্যবস্থা নিতে হবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
“প্রধানমন্ত্রী, যার জন্যে আমরা এখন অপেক্ষা করছি, সাম্প্রতিক পাবনা থেকে শুরু করে যে ঘটনাগুলো ঘটেছে, সেই সম্পর্কে তাকে অবশ্যই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে”।
রাজনৈতিক দলগুলো পারস্পরিক দোষারোপের সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে না আসলে এসব বিভেদ-বিভাজন আরও বাড়বে বলেও মি. সেনগুপ্ত আশংকা করেন।বিবিসি বাংলা।
মন্তব্য চালু নেই