তিন সিটিতেই প্রার্থী চূড়ান্ত

হাজী সেলিমকে দলে টানতে পারে আ.লীগ

ঢাকা উত্তর, দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। যদিও ঢাকায় দলীয় প্রার্থীর ব্যাপারে অনেক আগেই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিলেন দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ঢাকা দক্ষিণে সাঈদ খোকন এবং উত্তরে আনিসুল হককে প্রার্থী করার আগের সিদ্ধান্তই বহাল রেখেছেন শেখ হাসিনা। তবে খোকনের বিরুদ্ধে ঋণ খেলাপির অভিযোগ রয়েছে। এ জটিলতায় তার প্রার্থিতা আটকে গেলে হাজী সেলিমকে দলে টানা হবে। হাজী সেলিম বর্তমানে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য। তিনি কোনো দলের সমর্থন না নিয়েই মেয়র পদপ্রার্থী হিসেবে প্রচারণাও শুরু করেছেন।

আর চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হচ্ছেন দলটির চট্টগ্রাম মহানগর সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন।

বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের এক অনুষ্ঠানিক বৈঠকে এসব সিদ্ধান্তের কথা জানান প্রধানমন্ত্রী। বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে সাড়ে ৬টা পর্যন্ত রুদ্ধধার বৈঠক হয়।

বৈঠক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, বৈঠকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে মহানগরের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছিরকে দলের প্রার্থী করার মনোভাব প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তাকে প্রার্থী করা হবে। শুক্রবার সন্ধ্যায় নেতাদের ডেকে তার সমর্থন চূড়ান্ত ঘোষণা করা হবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘ঢাকায় দুই সিটিতে পূর্ব ঘোষিত প্রার্থী বহাল থাকবে। তবে ব্যাংক ঋণ জটিলতায় যদি দক্ষিণের প্রার্থী সাঈদ খোকন প্রার্থী হতে না পারে তাহলে হাজী সেলিমকে সমর্থন দেয়া হতে পারে। কোনও ভাবেই একাধিক প্রার্থী থাকবে না আওয়ামী লীগের। মেয়র নির্বাচনে না হলেও দলে মূল্যায়ন করা হবে যোগ্যদের।’

এদিকে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটিতে দল সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে ১৫টি সংসদীয় আসনে পৃথক স্বেচ্ছাসেবক কমিটি ও এ দুই কমিটিকে দেখভাল করতে দুটি নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করার বিষয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে।

বৈঠকে প্রথমে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী করা নিয়ে আলোচনার সূত্রপাত করেন ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, ‘এ সিটিতে রাজনৈতিক বিবেচনায়ই দলীয় প্রার্থী ঠিক করা উচিৎ। যার পক্ষে দলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীরা মাঠে নামবেন তাকেই সমর্থন দেয়া উচিৎ। কারণ দলীয় প্রার্থীকে জয়লাভ করাতে হলে সঠিক প্রার্থীকেই মনোনয়ন দিতে হবে। না হলে বিগত নির্বাচনের মতো এবারও পরাজয় হবে।’ তার এ বক্তব্য সমর্থন দেন দলের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফের এ বক্তব্যের প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সবাইকে তো সুযোগ করে দিতে হবে। এ সিটির সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন সাহেবের বয়স হয়েছে, ঠিকমতো চলাফেরাও করতে পারেন না। এখানে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছিরকে প্রার্থী করা হবে। তবে আগামীকাল বিকালে চট্টগ্রামের সব পর্যায়ের নেতাদের ডেকে কথা বলা হবে।’

ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা নানা প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে দিয়ে সময় পার করছি। এখন নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। নিজেদের কারণে অন্যের হাতে ক্ষমতা চলে যাবে এমন অবস্থা মেনে নেয়া হবে না। দল যাকে সমর্থন দেবে তাকে জয়ী করতে নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করতে হবে সবাইকে। ঢাকার ১৫টি নির্বাচনী এলাকায় ১৫টি নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করতে হবে। দু’জন কেন্দ্রীয় নেতা ও স্ব স্ব আসনের দলীয় এমপিরা এ কমিটির নেতৃত্ব দেবেন। তবে যেখানে দলীয় এমপি নেই সেখানে থানার সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক দায়িত্ব পালন করবেন। এসব কমিটিকে সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পৃথক দুটি নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করা হবে।’

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, সাবেক মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, সাহারা খাতুন, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম প্রমুখ।



মন্তব্য চালু নেই