হাজিরা ‘কালো পাথরে’ চুমু খায় কেন?

মক্কায় হজ করতে গিয়ে একটি পাথরে চুমু খেতে দেখা যায় হাজিদের। পাথরটি ‘হাজরে আসওয়াদ’ বা কালো পাথর নামে পরিচিত। কিন্তু হাজিরা এই পাথরে চুমু খায় কেন? এর উত্তর আলোচনার আগে পাথরটির পরিচয় তুলে ধরছি।

হাজরে আসওয়াদ বা কালো পাথর একটি জান্নাতি পাথর। হজরত জিবরাইল আ. পাথরটি বহন করে নিয়ে এসেছিলেন। ইবরাহিম আ. এটি কাবা শরিফের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে স্থাপন করেছিলেন। পাথরটি অনেকটা ডিম্বাকৃতির। এর রং কালো। জমিন থেকে এর উচ্চতা ১.১০ মিটার। এই পবিত্র ও মোবারক পাথরের সমান্তরাল থেকেই তাওয়াফ আরম্ভ হয় এবং এখানে এসে শেষ হয়। হাজরে আসওয়াদ মূলত এক খ- ছিল। পরবর্তীতে তা বিভিন্ন দুর্ঘটনায় ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যায়। সর্বশেষ বিভিন্ন আকৃতির আটটি টুকরো অবশিষ্ট ছিল। হাজরে আসওয়াদের এই টুকরোগুলোকে একত্রিত করে রূপার বেড়ি দিয়ে ঘিরে দেয়া হয়েছে। সর্বপ্রথম আব্দুল্লাহ ইবনে জুবায়ের রা. রূপার বেড়ি তৈরি করেন। হাজরে আসওয়াদের সর্বশেষ তারমিম বা সংস্কার হয় ১৪২২ হিজরিতে বাদশাহ ফাহাদের সময়ে।

হাজরে আসওয়াদ যখন জান্নাত থেকে অবতীর্ণ হয় তখর এর রং ছিল সাদা, পরবর্তীতে মানুষের পাপ একে কালো করে দেয়। এ পাথরে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চুমু খেয়েছেন এবং এর পূর্বে অন্যান্য নবীরাও চুমু খেয়েছেন। অতএব তাওয়াফকারীর জন্য এপাথরে চুমু দেয়া অথবা হাত বা অন্য কোনো কিছু দিয়ে স্পর্শ করা মুস্তাহাব। আর অক্ষম হলে এর দিকে ইশারা করবে এবং তাকবির বলবে।
হাজরে আসওয়াদের অনেক ফজিলত ও বৈশিষ্ট্য রয়েছে। ইবনে আব্বাস রা. বর্ণিত হাদিসে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, অবশ্যই আল্লাহ তায়ালা কেয়ামতের দিন এই রুকুন (হাজরে আসওয়াদ) কে উত্থিত করবেন, তখন তার দুটি চোখ হবে যা দিয়ে সে দেখবে এবং তার জিহ্বা হবে যা দিয়ে সে কথা বলবে এবং যে ব্যক্তি সঠিকভাবে তাকে স্পর্শ করেছে তার ব্যাপারে সাক্ষী দিবে। [তিরমিজি, ইবনে মাজাহ]। ইবনে ওমর রা. বলেন, আমি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, ‘নিশ্চয় এই দু’টি রুকন (হাজরে আসওয়াদ ও রুকনে ইয়ামানি) স্পর্শ করলে পাপসমূহ ঝরে যায়।’ [আহমাদ ও নাসায়ি]।



মন্তব্য চালু নেই