হরিণকে গুলি করে হত্যার ভিডিও প্রকাশ : মালিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা

বাংলাদেশের চট্টগ্রামে একটি খামারের হরিণকে গুলি করে হত্যার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ ওয়েবসাইটে ছড়িয়ে দেয়ার পর ওই খামারের মালিকের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ দায়ের করতে যাচ্ছে বন বিভাগ।

মইন উদ্দিন নামে ওই খামারীর বিরুদ্ধে বন বিভাগের অভিযোগ, তিনি বন্যপ্রাণী পালন বিষয়ে লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গ করেছেন। তাই তার বিরুদ্ধে ফৌজদারী অভিযোগ দায়ের করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে বনবিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন।

ওই খামাার মালিক তার নিজ খামারের একটি চিত্রল হরিণকে নৃশংসভাবে গুলি করে হত্যার ভিডিও ধারণ করে ইউটিউব সহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগর মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন বলে অভিযোগ।

বন্যপ্রানী সংরক্ষণ কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, মঈন উদ্দীন নামে ওই খামারীর হরিণ পালনের লাইসেন্স বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। কর্মকর্তারা আরো জানিয়েছেন, খামারটিতে অভিযান চালিয়ে ষোলটি চিত্রল হরিণ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।

ইউটিউবে পোস্ট করা ভিডিওতে দেখা যায় এক ব্যক্তি তার খামারে থাকা হরিণগুলোকে খাবার দিয়ে প্রলুব্ধ করছেন এবং এক পর্যায়ে সেগুলোর একটিকে গুলি করে আহত করছেন।
চিত্রল হরিণ

এর পর একটি ছুরি নিয়ে আহত হরিণটিকে জবাই করতে দেখা যায় ওই ব্যক্তিকে। পরিশেষে তিনি অন্য কয়েকজনসহ বন্দুক নিয়ে মৃত হরিণটির সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তোলার জন্য পোজ দিচ্ছেন।

সপ্তাহখানেক আগে সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত এই ভিডিওটি অনলাইনে ব্যাপক সমালোচনার সূত্রপাত্র ঘটায়।

চট্টগ্রামের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা গোলাম মাওলা বলছেন, বনবিভাগ ওই খামারটিকে চট্টগ্রামের হিলসাইড মাল্টি ফার্ম বলে চিহ্নিত করে এবং ভিডিওর বন্দুকধারী ব্যক্তিটিকে ওই খামারের মালিক মঈনউদ্দিন বলে শনাক্ত করেছে।

ঢাকায় বন্যপ্রানী বিষয়ক বন সংরক্ষক ড. তপন কুমার দের সঙ্গে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে তিনি আলোচিত ঘটনাটিকে নৃশংস বলে উল্লেখ করেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আলোচিত হরিণ খামারটির মালিক মঈন উদ্দিন মূলত অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী। বর্তমানে তিনি অস্ট্রেলিয়ার সিডনি শহরেই রয়েছেন। তার ফেসবুক পাতায় গিয়ে বিবিসির তরফ থেকে বার্তা পাঠানো হলে তিনি তাতে কোন সাড়া দেননি।

তবে ফেসবুকে তিনি একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন যেখানে তিনি কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন। চট্টগ্রামের বন কর্মকর্তা মিস্টার মাওলাও জানিয়েছেন, মঈনউদ্দীন তার সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করেছিলেন এবং ক্ষমা চেয়েছেন।

বন বিভাগ জানাচ্ছে, বাংলাদেশে বেসরকারি উদ্যোগে চিত্রল হরিণ প্রতিপালনের জন্য অনুমোদন দেয়া হলেও এর জন্য কোন সুস্পষ্ট বিধিমালা ছিল না।

এর আগে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে প্রায় তিনশোর মতো লাইসেন্স প্রদান করা হয়েছে গত ছ’মাস ধরে নতুন লাইসেন্স প্রদান বন্ধ রয়েছে এবং এখন নতুন করে একটি বিধিমালা প্রনয়ণের কাজ চলছে।



মন্তব্য চালু নেই