ব্যবস্থাপনার ঘাটতি নিয়েই শুরু হল মাসব্যাপী ২০তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা-২০১৫। মেলার প্রবেশ গেট থেকে শুরু করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সবকিছুতে অব্যবস্থাপনা লক্ষ্য করা গেছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে মেলা উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)।
মেলার প্রবেশ পথে সাংবাদিকদের হয়রানির শিকার হতে হয়। প্রথমে অনলাইন নিউজ পোর্টালের সাংবাদিকদের প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছিল না। পরে অনেকের টিকেট কেটে ঢুকতে হয়েছে।
গেটে কর্মরতরা জানায়, শুধুমাত্র ইত্তেফাক, প্রথম আলো, চ্যানেল আইসহ কয়েকটি পত্রিকা ও চ্যানেলের সাংবাদিকদের পাস দেয়া হয়েছে।
অনলাইনের নাম শুনে তারা বলেন, ‘বড় বড় পত্রিকার সাংবাদিকদের ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না আর আপনারা তো অনলাইন সাংবাদিক।’
কিন্তু রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) যুগ্ম সচিব এএফএম মনজুর কাদির বলেছিলেন, ‘সাংবাদিকদের কোনো পাস লাগবে না। শুধু আইডি কার্ড প্রদর্শন করলেই তাদের ঢুকতে দেয়া হবে।’
বাণিজ্যমন্ত্রণালয় থেকেও একই কথা বলা হয়েছে। কিন্তু গেটপাস ছাড়া সাংবাদিকদের প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না।
এছাড়াও মেলায় নিরাপত্তা বিষয়ে ঘাটতি দেখা গেছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে ২০০ সিসি ক্যামেরা বসানোর কথা থাকলেও হাতের গোনা কয়েকটি সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে।
মেলার গুরুত্বপূর্ণ জায়গা অস্থায়ী সচিবালয়ের ভেতরেও নেই কোনো সিসি ক্যামেরা। নিরাপত্তার ঘাটতির কারণে একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালের সাংবাদিকের ল্যাপটপসহ ব্যাগ চুরি হয়েছে।
যদিও মেলা শুরু হওয়ার আগে ইপিবির যুগ্ম সচিব বলেছিলেন, ‘নিরাপত্তা ব্যবস্থাও আগের তুলনায় বেশ জোরদার করা হয়েছে। এ জন্য মেলায় আগত দর্শনার্থী ও স্টল মালিকদের নিরাপত্তায় ৮০টি ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা (সিসি টিভি) স্থাপন করা হচ্ছে। কোনো অভিযোগের তাৎক্ষণিক সমাধানে মেলা প্রাঙ্গণে একজন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত থাকবে। এ ছাড়া আনসার, পুলিশ, র্যাব মেলা প্রাঙ্গণ ও বাইরে সার্বক্ষণিক টহলে থাকবে। থাকছে ফায়ার সার্ভিসের গাড়িসহ সব উপকরণ।’
নিরাপত্তার বিষয়ে জানতে চাইলে শেরে বাংলানগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা জোরদারে তৎপর। তবু কীভাবে যেনো একটি ব্যাগ চুরি হয়ে গেয়ে, বলতে পারছি না।’
প্রথম দিনে এক দর্শনার্থী অভিযোগ করে বলেন, ‘খাবারের স্টলে খেতে গিয়েছিলাম। একটা বার্গার নিয়েছি, খেতে গিয়ে দেখি তা নষ্ট হয়ে গেছে।’
এদিকে বাণিজ্য মেলা ঘুরে দেখা গেছে, অনেক স্টল ও প্যাভিলিয়নের কাজ এখনো সম্পূর্ণ হয়নি। অনেককেই স্টল সাজানোর কাজে ব্যস্ত থাকতে দেখা গেছে।
এর মধ্যে এশিয়া প্যাসিফিক জোন প্যাভিলিয়নে দেখা গেছে তাদের নির্মাণ কাজ এখনো শেষ হয়নি।
প্যাভিলিয়নের ম্যানেজার আসিফ আহমেদ বলেন, ‘আমাদের কিছু কাজ বাকী আছে। আশার করি দুএকদিনের শেষ হয়ে যাবে। তাছাড়া মেলার প্রথম দিকে তেমন জমে না। তাই আমাদের তেমন কোনো সমস্যা হচ্ছে না।’
এবার ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় বাংলাদেশের পাশাপাশি ১৪ দেশের ৪৮টি প্রতিষ্ঠান থাকছে।
এর মধ্যে অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য ও জার্মানি নতুন দেশ হিসেবে অংশ নিচ্ছে। সব মিলিয়ে থাকছে ৫০০টি স্টল।
মেলায় প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ৩০ এবং অপ্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ২০ টাকা প্রবেশমূল্য ধরা হয়েছে।
ভিআইপিদের আসা-যাওয়ার জন্য পৃথক গেটের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত মেলা উন্মুক্ত থাকবে।
মন্তব্য চালু নেই