নানা গুঞ্জন :

হঠাৎ সাজানো হচ্ছে মহিলা ভিআইপি সেল

চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগারে হঠাৎ করেই সংস্কার কাজ করা হচ্ছে। কারা সপ্তাহ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর পরিদর্শনের মাস খানেক পরে হঠাৎ করেই কারাগারের রজনীগন্ধা-১ এবং রজনীগন্ধা-২ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে কর্তৃপক্ষ। ভিআইপি বন্দিদের জন্য নির্দিষ্ট দু’তলা এ ভবন দুটি নিয়ে কর্তৃপক্ষের ব্যস্ততা বেড়ে যাওয়ায় চলছে নানা আলোচনা আর জল্পনা কল্পনা।

ভিআইপি ওই সেলের সব ধরনের আসবাবপত্র ঘষামাজা ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে। এর মধ্যেই নিশ্চিত করা হয়েছে বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ ব্যবস্থা। চুনকামও করা হচ্ছে। বিশেষ পরিচর্যার আওতায় এসেছে ভিআইপি সেলগুলোর সামনের ফুল বাগানগুলোও।

কারা সূত্রমতে, অত্যন্ত গোপনীয় ও দ্রুততার সঙ্গে ভিআইপি মহিলা সেলটি সাজানোর কাজটি সম্পন্ন করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল সুপার জাহানারা বেগম জানান, মহিলা কারাগারটির বন্দীর ধারণ ক্ষমতা ২০০ জনের। তবে এ কারাগারে এখন আড়াইশ’ নারী বন্দি রয়েছে। সম্প্রতি শেষ হওয়া ‘কারা সপ্তাহ’ উপলক্ষে সারাদেশের সব কারাগারের মতোই এখানেও সংস্কার কাজ করা হচ্ছে। এ ছাড়া পরিচর্যা তো করতেই হয়।

নতুন কোনো নারী ভিআইপির জন্য বিশেষ সংস্কার কাজ করা হচ্ছে কিনা প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘ভিআইপিদের নিয়ে কোনো সংবাদ থাকলে সেটা সাংবাদিকরাই তো ভাল বলতে পারে।’

তবে কারা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ডিভিশনপ্রাপ্ত নারী বন্দিদের জন্য যে কোনো সময় প্রয়োজন পড়তে পারে ভিআইপি সেল। তাই দীর্ঘদিন ধরে অব্যবহৃত ভিআইপি সেলগুলো প্রস্তুত করার কাজ চলছে। ভিআইপি নারী বন্দিদের জন্য নির্ধারিত সেলগুলো দীর্ঘদিন অব্যবহৃত অবস্থায় ছিল। এসব সেল ব্যবহারের উপযোগী করা হচ্ছে। কারা সপ্তাহ উপলক্ষে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিদর্শন উপলক্ষে কাশিমপুরের কারাগারে চুনকাম থেকে শুরু করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানো হয়েছিল। তবে এরই মধ্যে দেড় মাস কেটে গেছে। ধূলো-ময়লা জমে গিয়েছিল ভিআইপি সেলের আসবাবপত্রে।

কারাগারের একটি সূত্র জানায়, কাশিমপুর মহিলা কারাগারে ভিআইপি বন্দিদের রাখার জন্য দুটি ভবনে ১২টি কক্ষ রয়েছে। তবে এসব কক্ষ দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার করা হচ্ছিল না। গত ২০১৩ সালে সর্বশেষ বিএনপির শীর্ষ স্থানীয় নেত্রী ও সাবেক মন্ত্রী সেলিমা রহমান এবং সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আখতারকে ভিআইপি সেলে রাখা হয়েছিল।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঊর্ধ্বতন এক কারা কর্মকর্তা জানান, হঠাৎ করেই ভিআইপি সেলগুলো সাজানো ও গোছানো হচ্ছে। কিছুদিন আগেও রজনীগন্ধা-১ এবং রজনীগন্ধা-২-এর অনেকগুলো কক্ষে লোহার খাট থাকলেও ছিল না জাজিম, তোশক, বালিশ। টয়লেটেও পানি সরবরাহ ঠিকমতো হতো না। পানির ট্যাংকে জং ধরে যাওয়ায় পানি চুইয়ে পড়ত। তবে বর্তমানে সবগুলো কক্ষই টিপটপ। প্রতিটি টয়লেটেই লাগানো হয়েছে হাই কমোড। নতুন করে চুনকাম করায় চাকচিক্যও বেড়েছে দেয়ালগুলোতে।

কারাবিধি অনুযায়ী ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দিদের যেসব সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার কথা, তার সবকিছুরই ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সব মিলিয়ে ভিআইপি বন্দিদের জন্য কাশিমপুর কারাগারের মহিলা সেল পুরোটাই প্রস্তুত রাখা হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই