হঠাৎ শরীর ফুলে যাওয়া?
নারী, পুরুষ এবং ছোট-বড় যেকোনো বয়সেই পানি জমে শরীর ফুলে যাওয়ার মতো সমস্যা হতে পারে। কখনো হঠাৎ, কখনো আবার ধীরে ধীরে দেখা দিতে পারে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় শরীরের পানি আসার নাম হলো ইডিমা। ইডিমার অর্থ শরীরে অস্বাভাবিক এবং অতিরিক্ত জলীয় অংশ জমে যাওয়া। সাধারণত পায়ে বা মুখে প্রথম এ লক্ষণ দেখা দিলেও পানি জমতে পারে পেটে বা বুকেও। এ কারণে শরীরের ওজন বেড়ে যায়, শ্বাসকষ্ট হয়, পেট ফুলে যাওয়াসহ নানা উপসর্গ দেখা দিতে পারে। দেহের যে অংশটি হঠাৎ ফুলে গেছে তাতে বুড়ো আঙুল দিয়ে কিছুক্ষণ চাপ দিয়ে রাখলে দেখবেন দেবে গেছে। তখন বুঝতে হবে যে শরীরে পানি জমেছে। তবে বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে এমনটি লক্ষণ না-ও বোঝা যেতে পারে।
দীর্ঘক্ষণ পা ঝুলিয়ে বসা, গর্ভাবস্থা, মাসিকপূর্ববর্তী প্রি-মেন্সট্রুয়াল সিনড্রোম ইত্যাদি কারণে পা ফুলে যেতে পারে। এগুলো সাময়িক এবং এতে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। অনেক ক্ষেত্রে অ্যালার্জি, প্রদাহর কারণে শরীরের ত্বকে সাময়িক ইডিমা হতে পারে। কোনো কারণে লসিকাপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হলেও এটা দেখা দিতে পারে। এছাড়া কিছু ওষুধের কারণেও শরীরে পানি আসতে পারে।তবে পানি নামার কিছু গুরুতর কারণও আছে। যেমন:
কনজেসটিভ হার্ট ফেইলুর
হৃৎপিণ্ডের পাম্প করার ক্ষমতা কমে গেলে প্রথমে শরীরের নিচের অংশে বা পায়ে পানি আসে।
লিভার সিরোসিস
যকৃতের সমস্যায় পেটে পানি জমা হয়, পরে সারা শরীরেও জমতে পারে।
কিডনিরোগ
নেফ্রোটিক সিনড্রম, গ্লেমারিউলোনেফ্রাইটিস, ক্রনিক কিডনি ডিজিস ইত্যাদি রোগীর মুখ-পা-হাত ফুলে যায়। সাধারণত প্রস্রাবের পরিমাণও কমে যায়।
অপুষ্টি জনিত কারণ
রক্তে আমিষ বিপজ্জনক হারে কমে গেলে শরীরে পানি আসে। এছাড়া কিছু হরমোনজনিত রোগ, যেমন: থাইরয়েডের সমস্যায় পা বা মুখ ফুলতে পারে।
মনে রাখতে হবে, শরীরে পানি জমা কোনো রোগ নয় বরং তা লক্ষণমাত্র। অনেকে ভাবেন, পানি জমা মানে কিডনি বিকল, কিন্তু দেখতেই পাচ্ছেন সব সময় তা না-ও হতে পারে। তাই রোগের ইতিহাস, সঠিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করে চিকিৎসা নিতে হবে। শরীরে পানি আসাকে তাই গুরুত্বের সঙ্গে নিন।
মন্তব্য চালু নেই