স্রেফ উড়ে গেল!
আর কোনও শব্দ কি শব্দকোষ থেকে বাছা যেতে পারে? মনে হয় না৷ মিউনিখের বুকে এভাবে রিয়াল ঝড় আছড়ে পড়বে ভাবতেও পারেননি পেপ গারদিওয়ালা৷ ম্যাচের একদম শেষ মুহূর্তে রোনাল্ডোর ফ্রিকিক ওয়ালে দাঁড়ানো ফুটবলারদের পায়ের তলা দিয়ে বুলেটের মতো জালে জড়িয়ে যেতেই মুণ্ডিত মস্তকে হাত বোলালেন পেপ৷
প্রতীকী! বলা যেতেই পারে৷ গতবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ চ্যাম্পিয়ন বায়ার্ন মিউনিখ ৪-০ গোলে বিধবস্ত রিয়াল মাদ্রিদের কাছে৷ যে বায়ার্ন কিছুদিন আগে পর্যন্ত অবিশ্বাস্য ফুটবল উপহার দিয়েছিল ফুটবল বিশ্বে! সেই বায়ার্নকেই কর্পূরের মতো উড়িয়ে দিল রিয়াল৷ একইসঙ্গে গত বারো বছরের মধ্যে এই প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে উঠল তারা৷ এই জয়ের নায়ক জোড়া৷ একজন রামোস৷ এবং অপরজন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো৷ দু’জনেই দুটি করে গোল করেন৷ শুধু তাই নয়, দুই পর্ব মিলিয়ে ৫-০ গোলে জিতল রিয়াল৷
ম্যাচের ১৬ মিনিটে কর্নার থেকে বুলেট হেডে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন রামোস৷ এবং দ্বিতীয় গোল করতেও তিনি বেশি সময় নেননি৷ চার মিনিটের মধ্যেই ডি’মারিয়ার ফ্রিকিকে ফ্লিক করেন পেপে৷ সেই বলেই দুরন্ত হেডে দ্বিতীয় গোল করে যান র্যামোস৷ গত ম্যাচে রিয়াল কোচ অ্যানচেলোত্তি প্রতি আক্রমণ নির্ভর ফুটবল খেলিয়ে ছিলেন দলকে৷ মঙ্গলবার রাতেও সেই পতিতেই দলকে খেলালেন৷ তবে আগের ম্যাচের তুলনায় কিছুটা বেশি আক্রমণাত্মক৷ বেঞ্জিমাকে সেণ্টার ফরোয়ার্ড করে রোনাল্ডো এবং আগুয়েরোকে দুই প্রান্ত ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছিলেন৷ যার ফলে একসঙ্গে তিনজনকে আটকাতে বায়ার্নের ডিফেন্ডারদের হিমশিম খেতে হয়েছে৷ এবং তারই ফলশ্রূতি তৃতীয় গোল৷ এবার রোনাল্ডো৷ বোয়েতাংয়ের বাড়ানো পাস ধরে জোরালো শটে গোল করে যান সিআর সেভেন৷ তৃতীয় গোল হজম করার পর সামান্য হলেও ম্যাচে ফেরার মরিয়া চেষ্টা করে বায়ার্ন৷ কিন্ত্ত সোয়ানস্টেইগার সেভাবে পারফরম্যান্স করতে না পারার জন্য তাদের আক্রমণ দানা বাঁধেনি৷ তার উপর রবেনও ছিলেন অফ ফর্মে৷ ফলে যা হওয়ার তাই হল৷ গোটা ম্যাচেই সেভাব প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেনি বেয়ার্ন৷ প্রথম পর্বে হারার পর কার্ল হেইঞ্জ রুমিনিগে জানিয়েছিলেন, মিউনিখে গেলে উপযুক্ত প্রমাণ পাবে৷ বাস্তবে উল্টো ঘটল৷ প্রমাণ পেলেন রুমিনিগে৷ এইভাবে যে হারতে হবে সেটা বোধ হয় কেউই ভাবেননি৷
সিংহের গুহায় ঢুকে এভাবে সিংহ শিকার৷ ব্যাপারটা চমত্কারই৷ বলছিলেন রোনাল্ডো৷ তাঁর বক্তব্য, “আমরা চেয়েছিলাম ম্যাচটা জিততে, যেভাবেই হোক৷ নিজেদের কাজে সফল হতে পেরে ভাল লাগছে৷ তবে এখনও আরও একটা কাজ বাকি৷ খেতাব জয়কেই আমরা পাখির চোখ করছি৷ আশাকরি ফাইনালেও এই ফর্ম ধরে রাখতে পারব৷”
মন্তব্য চালু নেই