স্বাস্থ্যকর মিষ্টি খাবার

মিষ্টি খাবার নিয়ে আধুনিক মানুষের ভয়ের শেষ নেই। স্ট্রোক, ডায়াবেটিস ও স্থুলতাসহ নানাবিধ সমস্যার জন্য মিষ্টি খাবারকে দায়ী করা হয়। এ সমস্যায় সাধারণত সাদা চিনিকে দায়ী করা হয় বেশী। তাই চিনি ছাড়া চা, কফি, সেমাই এখন খুবই পরিচিত শব্দ।

চিনি ছাড়া মিষ্টি খাবার হয় না— এমন ধারণা কারো মাথায় থাকলে, সেটা ভুল ধারণা। বরং বিকল্প মিষ্টকারকের ব্যবহারে আমরা মজাদার নানা খাবার পেতে পারি। ওই সব মিষ্টি উপাদান সাদা চিনির চেয়ে বেশী উপকারী। এতে নানা ধরনের পুষ্টিকর খনিজ উপাদান বিদ্যমান। এগুলো রসনায় তৃপ্তি দেয়, শরীরও ভাল রাখে।

নিচে তেমন কিছু খাবারের কথা জেনে নিন—

মিষ্টি খাবার হিসেবে মধু অতি পরিচিত। এর পুষ্টিগুণের শেষ নেই। কফ ও এ্যালার্জি জাতীয় সমস্যায় ভাল উপকার পাওয়া যায় মধু ব্যবহারে। সাদা চিনির চেয়ে মধু বেশী মিষ্টি। চিনির চেয়ে দুই-তৃতীয়াংশ কম মধু ব্যবহার করে খাবারে একই পরিমাণ মিষ্টত্ব আনা যায়। এ ছাড়া মধু ব্যবহারে খাবারের স্বাদ বাড়ে, সার উপাদানও বাড়ে। বাসায় তৈরি সস ও সালাদে মধু ব্যবহার করে ভিন্ন ধরনের স্বাদ আনা যায়। এ ছাড়া প্রতিদিন এক চামচ মধু হাতের তালুতে নিয়ে চেটে চেটে খেতে পারেন। বেশ উপকার পাবেন, মিষ্টি কিছু না খাওয়ার শোকও ভুলবেন সহজে।

মিষ্টকারক উপাদান হিসেবে কিসমিসের ব্যবহারে যে কোনো মিষ্টি খাবারের স্বাদে পরিবর্তন আসে। সেমাই বা পোলাওয়ে কিসমিসের ব্যবহার আমাদের দেশে অতি পরিচিত।

খেজুরে আছে ৬০ ভাগ চিনি। এতে শুকনো অবস্থায় চিনি সংরক্ষিত হয়। এর কারণে মিষ্টকারক গুণ বেশী মাত্রায় থাকে। তবে চিনির সিরা লাগে এমন খাবারে খেজুর ব্যবহার না করাই ভালো। বরং শেঁকে তৈরি মিষ্টি খাবারের জন্য খেজুর ভালো উপাদান। এ ছাড়া নানান ধরনের ফল দিয়ে তৈরি ডেজার্টে খেজুর ব্যবহার করা যায়। আর খেজুর তো এমনিতেই খাওয়া যায়। ধুয়ে নিন, খেলে ফেলুন। মিষ্টি খাবারের চাহিদা মিটে গেল।

খেজুরের রসও মিষ্টকারক উপাদান হিসেবে ভাল। বাংলাদেশে এখনো শীতকালে খেজুর রসে সেমাই রান্নার চল আছে। এ ছাড়া খেজুরের গুড় মিষ্ট উপাদান হিসেবে অতি পরিচিত। এখন তো রাস্তাঘাটে খেজুর গুড়ের চা পাওয়া যায়। এ ছাড়া মুড়ি বা চিড়া ভিজিয়ে গুড় দিয়ে খাওয়ার চল আছে।

আরেক ধরনের গুড় আছে, যা অপরিশোধিত আখের রস থেকে তৈরি করা হয়। এতে আয়রনসহ অনেক ঔষধি উপাদান রয়েছে। শিন্নি, পিঠাসহ বিভিন্ন খাবারের গুড়ের ব্যবহার অতি প্রচলিত একটি বিষয়। গুড় খাওয়ার ক্ষেত্রে সর্তক থাকা দরকার। এটি হঠাৎ করে রক্তে চিনির পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে পারে।

আপেল, স্ট্রবেরি, আম ও আনারসের মতো মিষ্টি ফল সহজেই ডেজার্ট হিসেবে পরিবেশন করা যায়। ফলগুলো জলপাই তেলে খানিকক্ষণ চুবিয়ে রেখে সঙ্গে যোগ করুন। এরপর ফলগুলো রান্না করুন।
উপরের বেশ কয়েকটি স্বাস্থ্যসম্মত ও প্রাকৃতিক মিষ্টকারক খাবারের কথা বলা হল। স্বাস্থ্যসম্মত ও প্রাকৃতিক হওয়ার মানে এই নয়, যথেচ্ছ খেতে বা খাবারে ব্যবহার করতে পারেন। বরং, আয় বুঝে ব্যয় করার মতো শরীরের সহনীয় মাত্রা বুঝেই খান। নইলে অচিরেই টের পাবেন।

তথ্য ঋণ : বিদেশী পত্রিকা



মন্তব্য চালু নেই