স্বপ্নে পাওয়া আবিষ্কার

প্রতিদিন নানারকম স্বপ্ন দেখি আমরা ঘুমের ভেতরে। শুধু আমরা নই, এমন স্বপ্ন দেখে থাকে প্রাণীজগতের অন্য সদস্যরাও। সাধারণ এই বিষয়টিকে খুব বেশি আমল দেয়না মানুষ। রাস্তায় দৌড়াচ্ছেন কিংবা পুরোন কোন জায়গায় ফিরে গিয়েছেন এমন স্বপ্নগুলোকে আদতে খুব একটা আমল দেওয়ারও কিছু নেই। কিন্তু আপনি কি জানেন যে এমন কিছু অত্যন্ত হাস্যকর আর স্বাভাবিক স্বপ্নের মাধ্যমেই মানুষের মাথায় এসেছিল অনেক বড় বড় সব আবিষ্কারের চিন্তা? চলুন জেনে নিই এমন কিছু স্বপ্নে পাওয়া আবিষ্কারকে।

১. গুগল

১৯৯৬ সাল। ল্যারি পেইজ তখন কলেজে ভর্তি হয়েছেন মাত্র। প্রায় সময়েই ভয়ে থাকতেন ল্যারি। এই বুঝি তাকে বের করে দেওয়া হল কলেজ থেকে। এই ভয়েই প্রতিরাতে অদ্ভূত সব স্বপ্ন দেখতেন তিনি। আর এই সব স্বপ্নের ভেতরে এমন একটি স্বপ্ন ছিল যেখানে তিনি ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড করছিলেন আর আলাদা আলাদা পিসিতে ইন্টারনেট জমা করছিলেন। স্বপ্নটা দেখার পরপরই ইচ্ছা হয় ল্যারির সত্যিই এমন করা যায় কিনা সেটা দেখার। অঙ্ক কষে একটা সময় অনেকগুলো ওয়েব পেইজকে সম্পর্কিত করার ধারণা তার মাথায় আসে আর তৈরি হয় গুগল। যার পরিচয় বর্তমানে আলাদা করে আর দেওয়ার কিছু নেই।

২. থিওরি অব রিলেটিভিটি

বিখ্যাত বিজ্ঞানী অ্যালবার্ট আইনস্টাইনের অত্যন্ত জনপ্রিয় তত্ত্ব, থিওরি অব রিলেটিভিটিও এই মানুষটির কাছে ধরা দিয়েছিল অদ্ভূত এক স্বপ্নের মাধ্যমে। স্বপ্নটি ছিল অনেকটা এরকম- আইনস্টাইন স্বপ্নে একটি শস্যক্ষেত দেখছিলেন। যেটার চারপাশে বেড়া থাকলেও সেই বেড়ার ফাঁক দিয়ে গরুরা মুখ ঢুকিয়ে শস্য খেয়ে নিচ্ছিল। বেড়ার তারে বিদ্যুৎ প্রবাহ থাকলেও সেটা গরুদের গায়ে লাগছিলো না। পুরো বিষয়টি দেখে আইনস্টাইন তারে হাত দিয়ে দেখলেন আসলেও সেটাতে বিদ্যুৎ প্রবাহ নেই। পরে খামার মালিককে বিষয়টি জানালে মালিক তারের মেরামত করে আর আইনস্টাই দেখতে পান সাথে সাথে একযোগে সব গরুরা লাফিয়ে তাদের মুখ সরিয়ে নিল। বিষয়টিতে মজা পেয়ে খামার মালিককে জানান আইনস্টাইন। সবটা শুনে মালিক জানান যে গরুগুলো একসাথে মুখ সরায়নি। এক এক করে সরিয়েছে। এই পর্যন্ত দেখেই ঘুম ভেঙে যায় বিজ্ঞানীর। একটি বিষয় সবার কাছে যে এক রকম নয়, দৃষ্টিভঙ্গীর কারণে আলাদা হয়ে যায় সেটা মাথায় আসে তার। তৈরি হয় থিওরি অব রিলেটিভিটির শুরুটা।

৩. ডক্টর জেকিল এন্ড মিস্টার হাইড

রবার্ট লুই স্টিভেনসনের ঘরে তখন টাকা-পয়সার বেশ টানাটানি। এর ভেতরে মাথায় কোন লেখা আসছেনা। প্রকাশকদের চাপ দিনকে দিন বাড়ছে। ঘরের চাপটাও কম নয়। ঠিক এমন একদিন রাতে ঘুমের ভেতরে ভয়ানকভাবে গুঙিয়ে উঠলেন রবার্ট। স্ত্রীর হাতের স্পর্শে জেগে উঠলেন বটে, তবে জেগে ওঠার পরপরই ঘুম থেকে কেন ডেকে দেওয়া হল সেটা নিয়ে রাগারাগি শুরু করলেন লেখক। কেন? কেন আবার? ঘুমের ভেতরেই যে এতদিনের কাঙ্ক্ষিত গল্পটি পেয়ে গিয়েছিলেন তিনি। তবে ভাবনাটা ভুল ছিলনা রবার্টের। স্বপ্নের গল্পটি নিয়ে লেখা তার ড. জেকিল আর মিস্টার হাইডের গল্প কিন্তু সত্যিই সারা জাগিয়ে দিয়েছিল পুরো বিশ্বে। আর ঘরের অভাব? সেটাও দূর করে দিয়েছিল বইটি।



মন্তব্য চালু নেই