স্থানীয় নির্বাচন দলীয় করার পক্ষে নির্বাচন কমিশনও

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেই সুর মেলাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তাদের মতেও স্থানীয় নির্বাচন দলীয় করাই ভালো। বৃহস্পতিবার দুপুরে কমিশন সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মত ব্যক্ত করেন নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ।

এর আগে গত ১ এপ্রিল সংসদ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী স্থানীয় নির্বাচন দলীয় করার পক্ষে মত দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘স্থানীয় সরকার নির্বাচন নির্দলীয় হলেও হার-জিতের হিসাবটা হয় দলীয়ভাবে। তাই স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয়ভাবেই করা উচিৎ।’ এতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বাড়বে বলে মনে করেন তিনি। এছাড়া দলীয়ভাবে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক বরাদ্দ দেয়ার পক্ষেও মত দেন তিনি।

দুপুরে নির্বাচন কমিশনার শাহনেওয়াজ বলেন, ‘বড় দলগুলো যেভাবে নির্বাচনে জড়িয়ে পড়ছে এবং বাইরে থেকে তারা যেভাবে দলীয়ভাবে প্রার্থীদের সমর্থন দিচ্ছে এ কারণে সিটি নির্বাচন আমার মতে, দলীয় নির্বাচন হলেও খারাপ হয় না, বরং ভালোই হয়।’

তিনি দৃষ্টান্ত টেনে বলেন, ‘আমাদের পাশের দেশ ভারতেও স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয় ভিত্তিতে হয়। সরকার যদি এমন কোনো আইন করতে চায়, তাহলে আইনগতভাবে আমাদেরকে জানাতে হবে।’

এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘বর্তমানে নির্বাচন কমিশন দল ভিত্তিক প্রার্থিতা দিচ্ছে না গ্রহণও করছে না। সিটি নির্বাচনের আইনেও তা নেই। কিন্তু তারপরও দলগুলো প্রার্থীদের পেছন থেকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। এর থেকে ভালো হয় আইন করে সরাসরি সমর্থন দেয়া।’

একটি দল জোর করে কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করিয়ে নিচ্ছে- এ প্রসঙ্গে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে শাহনেওয়াজ বলেন, ‘এ বিষয়টি ইসির নয়। নির্বাচনী আইন অনুযায়ী এ বিষয়ে একক ক্ষমতা রিটার্নিং কর্মকর্তার। তিনি এ বিষয়ে বলবেন। আইনেও তাই-ই বলা আছে।’

আচরণবিধির লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলা হলেও নির্বাচন কমিশনের দৃশ্যমান কোনো ভূমিকা চোখে পড়ছে না- এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, ‘প্রতিদিনই আচরণিবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে ম্যাজিস্ট্রেটরা আর্থিক জরিমানা করছেন। যেখানেই আচরণবিধি লঙ্ঘন হবে ইসি সেখানে ব্যবস্থা নেবে। ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না, একথা সত্য নয়।’

তিনি বলেন, ‘আচরণবিধি লঙ্ঘনের ব্যাপার ইসির যতটা শক্ত হওয়ার দরকার ততটাই হবে। আচরণবিধি লঙ্ঘন রোধে আমরা ম্যাজিস্ট্রেটের সংখ্যা বাড়িয়ে দিয়েছি। যতদিন যাবে ম্যাজিস্ট্রেটের সংখা বাড়বে।’

উল্লেখ্য, ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে থেকেই দলীয় প্রার্থী নির্ধারণ তোড়জোড় শুরু করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি। এমনকি আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবনে প্রার্থীদের ডেকে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ ওঠে। আর এর পরিপ্রেক্ষিতেই তিনি সংসদে স্থানীয় নির্বাচন দলীয় করার পক্ষে মত দেন।

একই ভাবে জাতীয় পার্টি থেকেও প্রকাশ্যে দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন দেয়া হয়। দেরিতে হলেও বিএনপিও একই কাজ করেছে।



মন্তব্য চালু নেই