স্ত্রীর পরকীয়া যেভাবে হাতেনাতে ধরবেন

মেঘলীনা :  সম্পর্কে সমস্যা হতেই পারে। হতে পারে তা প্রেমিক কিংবা প্রেমিকার সাথে, হতে পারে বন্ধু কিংবা কলিগের সাথে, হতে পারে স্বামী-স্ত্রী-মা-বাবা কিংবা ভাই-বোনের সাথেও। সম্পর্কের কোনো নিয়ম তো নেই যে সূত্র দিয়ে সমাধান করে ফেললেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই সমস্যাগুলো আমরা মনের মাঝে নিয়ে ঘুরি, প্রতিদিন তিল তিল করে কষ্ট পাই। কাউকে মনের কথা বলতে পারি না, বের হয়ে আসে না কোনো সমাধানও। সম্পর্কের ব্যাপারে আপনার সেই না বলা কথাগুলো নিয়েই মেঘলীনার নিয়মিত ব্লগ- “প্রিয় সম্পর্ক”। এখানে আপনি পাবেন ডেটিং টিপস হতে শুরু করে দাম্পত্য কিংবা পারিবারিক নানা খুঁটিনাটি সমস্যার সমাধান। যত্নে থাকুক আপনার প্রিয় সম্পর্কগুলো, ভালোবাসার সম্পর্কগুলো।

আজকের সমস্যা-
আপনি নিশ্চিত যে স্ত্রী পরকীয়া করছেন অন্য কোন পুরুষের সাথে, কিন্তু আপনার কাছে কোন প্রমাণ নেই। কীভাবে তাঁকে হাতেনাতে ধরবেন? কীভাবে প্রমাণ করবেন স্ত্রীর অবৈধ সম্পর্ক?

সমাধান:

সত্যি কথা বলতে কি, মানুষের মন তো বেঁধে রাখার কোন উপায় নেই। স্ত্রী যদি আপনাকে ফেলে অন্য কোন পুরুষে মত্ত থাকেন, সেটা আপনার দুর্ভাগ্য। তবে দাম্পত্য কিংবা ভালোবাসায় “পরকীয়া” হচ্ছে এমন একটি বস্তু, যা কেবল সন্দেহের ভিত্তিতে সত্য ধরে নেয়া ঠিক না। বরং চাই হাতেহাতে প্রমাণ। বলাই বাহুল্য যে, যিনি পরকীয়া করেন তিনি কাজটি খুব লুকিয়েই করেন। আর তাই হাতেনাতে পাকড়াও করাটা একটু কঠিনই বটে। কিন্তু সন্দেহ নিয়ে চুপচাপ বসে থাকলে আপনার মানসিক অশান্তি বাড়বে ক্রমশ। তাই বিষয়টা প্রমাণ করা জরুরী। আপনার নিজের জন্য তো বটেই, সম্পর্কের ভবিষ্যতের জন্যও। এইসব প্রমানের ওপরে ভিত্তি করেই সম্পর্কের বাকি পথটা তৈরি হবে, এবং আপনি ঠিক করতে পারবেন নিজের করণীয়।

যা করবেন :

* প্রথমেই সন্দেহের বশে চিল্লাচিল্লি বা রাগারাগি করে স্ত্রীকে সচেতন করে দেবেন না। তাতে সে আরও সতর্ক হয়ে যাবে আর আপনি কখনো তাঁকে ধরতে পারবেন না। খুব স্বাভাবিক থাকুক, তাঁকে আগে যেমন বিশ্বাস করতেন তেমনই আচরণ করুন। কেউ যেন কিছুই বুঝতে না পারে। কাজটি খুব কষ্টের, কিন্তু এই কষ্টটুকুন করতে হবেই।

* এবার ছোট ছোট কিছু বিষয়ে নজর দিন। খেয়াল করে দেখুন, তিনি সংসারের চাইতেও বেশী মনযোগী কোন কাজে? মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত থাকেন খুব, সারাদিন ফেসবুকিং করেন, নাকি বাইরে আড্ডা দেন খুব? চাকরিজীবী হলে তার কর্মক্ষেত্র সম্পর্কে একটু খোঁজখবর করুন, বাড়ির কোন পুরুষ আত্মীয়ের সাথে “বিশেষ” সম্পর্ক আছে কিনা সেটাও খতিয়ে দেখুন। একটু মনযোগ দিয়ে খতিয়ে দেখলেই বিষয়টা বুঝতে পারবেন যে প্রেমিকের সাথে যোগাযোগ মাধ্যম কোনটা কিংবা প্রেমিকটি কে।

* এবার আসুন মোবাইলের প্রসঙ্গে। পরকীয়া তিনি যে মাধ্যমেই করে থাকুন না কেন, সেলফোনে যোগাযোগ অবশ্যই হয়। অনেক সময় হতে পারে যে সম্পর্কটি কেবল ফোনেই। সুযোগ পাওয়া মাত্র তার ফোনটি চেক করুন। কাজটি অন্যায়, তবে যুদ্ধ আর ভালোবাসায় সবই ঠিক। ফোনে যা পাবেন, সেগুলোর একটি কপি নিজের ফোনে ট্রান্সফার করুন। ছবি, মেসেজ সব। নম্বর গুলো টুকে রাখুন।

*  স্ত্রীর ফোন কিছুতেই হাতের নাগালে পাচ্ছেন না? তিনি সর্বদা নিজের কাছে রাখেন? বা ফোন চেক করার মত পর্যাপ্ত সুযোগ পাচ্ছেন না? এক্ষেত্রে একটি 994381_696409070369391_1863951412_n36431_0কাজ করুন, ফোনটি সরিয়ে ফেলুন। ঘর থেকে প্রতিদিন তো কত কিছুই হারায়, একটি ফোনও হারাতে পারে। হ্যাঁ, এটাও নৈতিকতা বিরুদ্ধ কাজ। কিন্তু স্ত্রী যা করছেন, সেটাও তো তাই। ফোনটি চেক করা হলে নাহয় আবার ঘরের কোথাও ফেলে রাখবেন। খুঁজতে খুঁজতে তাঁরা ঠিক পেয়ে যাবেন। ফোন থেকে ফেসবুকিং করার অভ্যাস থাকলে এই ফোনের মাধ্যমে তার ফেসবুকেও ঢুকতে পারবেন। এক্ষেত্রে ফেসবুকটাও চেক করুন। যা পাবেন, চেষ্টা করুন তথ্যগুলো সব সংরক্ষণ করতে।

* আপনার সন্দেহ হয় স্ত্রী অন্য কারো সাথে ঘুরছেন? তাহলে এবার পালা হাতে নাতে ধরার। আপনি না থাকলে তিনি নিশ্চয়ই সেই লোকের সাথে যোগাযোগ করেন। স্ত্রী কি সারাদিন বাসায় একা থাকেন? তাহলে এক কাজ করুন, মাঝে মাঝেই অপ্রত্যাশিত ভাবে অফিস থেকে বাসায় চলে আসুন। এতেও যদি ধরতে না পারেন, তাহলে কয়েকদিন ট্যুরের নাম করে বাসা থেকে বের হন। অন্য কোন হোটেলে উঠে স্ত্রীর গতিবিধির দিকে নজর রাখুন। একেবারে নিশ্চিত ধরতে পারবেন স্ত্রীর প্রেমিককে।

* স্ত্রীকে নিয়ে দূরে কোথাও বেড়াতে যান, এটি সবচাইতে কার্যকরী উপায়। পরকীয়ায় মত্ত থাকলে স্ত্রী কখনোই আপনার সাথে একটানা অনেক দিন ছুটিতে অন্য কোথাও যেতে চাইবেন না। তারপরও তাঁকে নিয়ে যান, কেবল আপনারা দুজন। একাধিক সুযোগ বের হয়ে আসবে তাঁকে হাতেনাতে ধরার।

মনে রাখবেন :

* স্ত্রীর পরকীয়া ধরতে গিয়ে কখনো সন্তানদের জিজ্ঞাসাবাদ করবেন না। বাড়ির কাজের বুয়া, ড্রাইভার বা অন্য কাউকেও জিজ্ঞেস করবেন না। হ্যাঁ, বাড়িতে যদি আপনার মা কিংবা অন্য কোন আপনজন থাকে, তাঁদের সাহায্য নিতে পারেন। এমন কারো, যাকে আপনি খুব বিশ্বাস করেন। তাঁদেরকে বলুন আপনার মনে কষ্টের কথা। এবং স্ত্রী কী করছেন, না করছেন একটু নজর রাখতে বলুন।

* অনেকেই পৃথিবীতে আছেন, যা এত ধুরন্ধর যে কিছুতেই তাঁদের হাতেনাতে ধরা যায় না। যদি আপনি নিশ্চিত জেনে থাকেন যে স্ত্রী পরকীয়া করছেনই, তাহলে তাঁকে টাকা পয়সা বা আর্থিক সাপোর্ট দেয়া বন্ধ করে দিন। ফলে ঝগড়া শুরু হবে। আর এই ঝগড়া থেকে ক্রমশ এমন অবস্থা তৈরি হবে যে হয় স্ত্রী নিজেই প্রকাশ করে দেবেন, কিংবা এমন ভুল করে বসবেন যে ধরা পড়ে যান। মনে রাখবেন, অন্যায় কখনো চাপা থাকে না। তাই আজ না হোক কাল, ধরা তিনি পড়বেনই।

* সবচাইতে বড় যে কথা, ভেঙে পড়বেন না। চেষ্টা করুন মনকে শক্ত রাখতে। প্রতারকের জন্য কষ্ট পাওয়ার মানে নেই।

বিঃ দ্রঃ : ব্লগে প্রকাশিত মতামত একান্তই লেখকের নিজের



মন্তব্য চালু নেই