স্ত্রীর জিম্মায় জামিন পান কাদের সিদ্দিকী

সিএমএম আদালতে ম্যাজিস্ট্রেট মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন, এ মন্তব্য করে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, ‘শেষবার যখন আদালতে হাজির হয়েছিলাম, আদালত তখন আমাকে স্ত্রীর জিম্মায় জামিন দেন। এতোদিন আমি স্ত্রীর হেফাজতে ছিলাম। এখন শুনি আমার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে।’

বুধবার বিকেলে মোহাম্মদপুরের বাবর রোডে নিজ বাসায় এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

এ সময় তিনি বলেন, ‘শেষবার যেদিন আমি আদালতে গিয়েছিলাম, সেদিন লোহার খাঁচায় দাঁড়িয়ে আমি কথা বলেছিলাম, যেখানে চোর-ডাকাতরা দাঁড়িয়ে আদালতে কথা বলে। আদালত আমার জিম্মায় আমাকে জামিন দিতে চেয়েছিল।আমি রাজি হইনি। আমি বলেছিলাম, পুলিশ থাকতে আমি নিজের জিম্মায় জামিন নিব না। তখন আমার স্ত্রীর জিম্মায় আমাকে জামিন দেন আদালত।’

কাদের সিদ্দিকী অভিযোগ করেন, আইনের মাধ্যমে পুরস্কারের পরিবর্তে তিরস্কারের ব্যবস্থা করছে সরকার। এই সরকার নিজেকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি মনে করে।অথচ একজন রাজাকারকে নিয়ে কথা বলার জন্য একজন মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।কোথায় পুলিশ? গতকাল থেকে আমি দরজা খুলে বসে আছি।আমি জেলে যেতে প্রস্তুত আছি।সারাজীবন জেল খাটব, তবু কারো সঙ্গে আপস করব না।’

তিনি বলেন, ‘২০১৩ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বলেছিলাম, বর্তমানে যাদের বিচার হচ্ছে তারা হলো চুনোপুঁটি।কিন্তু যারা রাজাকার তৈরি করেছিল, যারা পাকিস্তানের হুকুম তামিল করেছিল, তাদের আগে বিচার হওয়া দরকার।আমি তো কোনো মুক্তিযোদ্ধা সম্পর্কে কথা বলিনি।আমি তৎকালীন এডিসির (মহিউদ্দিন খান আলমগীর) বিচার চাইতে পারি।আরো অনেকের বিচার চাইতে পারি।মামলা হলে আমি তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেব।এটা আমার মুখের কথা নয়।ওই সময় কে কী করেছে, তাদের সবার নাম গেজেটে আছে।’

কাদের সিদ্দিকী অভিযোগ করেন, যিনি আমার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন তিনি (রুহুল আমীন) নিজেকে একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন।তার বর্তমান বয়স অনুযায়ী ১৯৭১ সালে বয়স ছিল সাড়ে ১৩ বছর।যা আদালতের দৃষ্টিতে আনা হয়েছিল।এ ছাড়া জনাব রুহুল আমীন সাহেব তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহিউদ্দিন খান আলমগীরের লিখিত অনুমতি নেননি।

তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকারকে সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে উঠে মানবতাবিরোধীদের বিচার করতে হবে। হোক সে দলের কিংবা হোক সে দলের বাইরের।আমার বিরুদ্ধে যদি চুরি-ডাকাতির মামলা দিয়ে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করত, তবে আমি মানতাম।বিচারিক আদালতে আমার বিচার হতো।কিন্তু একজন রাজাকারের বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য গ্রেফতারি পরোয়ানা, এটা কোনোভাবেই মানা সম্ভব না।দলীয়ভাবে এর তীব্র নিন্দা জানাই।এতে যদি একজন মুক্তিযোদ্ধার জেল হয়, হোক।’

কাদের সিদ্দিকীর স্ত্রী বেগম নাসরিন সিদ্দিকীও একইভাবে কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আমি আমার স্বামীকে নিয়ে ভয় পাই না।পুলিশ তাকে পারলে ধরে নিয়ে যাক।এর জন্য কোনো মামলাও দায়ের করা হবে না।জেলখানাতেই তাকে রাখতে চাই।’

এরপর কাদের সিদ্দিকী গেজেট বই বের করে জীবিত কয়েকজনের নাম বলেন। যারা যুদ্ধের সময় বিভিন্ন জেলায় বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।



মন্তব্য চালু নেই