স্ট্রবেরী চাষে স্বামী স্ত্রীর ভাগ্য পরিবর্তন
সিরাজগঞ্জে স্ট্রবেরী চাষে ভাগ্য বদলে যাচ্ছে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা চন্দ্রকোনা গ্রামের হাসান আলী ও তার স্ত্রী রওশন আরার। গত বছরের সাফল্যর কারণে এবছর তাদের চাষের পরিধি বেড়েছে। বাণিজ্যিক ভাবে স্ট্রবেরী চাষ শুরু করেছেন তিনি। মাত্র ৩ মাসের ব্যবসায় হাসান আলী এখন লাখপতি। অত্যান্ত পুষ্টিগুন সমৃদ্ধ রসালো ফল হওয়ায় সিরাজগঞ্জে স্ট্রবেরী চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। ব্যাপক হারে স্ট্রবেরীর চাহিদা বাড়ছে। ব্যাংক ঋণ অথবা সরকারিভাবে আর্থিক সহায়তা পেলে এই প্রসারতা আরো দ্বিগুণ করার স্বপ্ন এই স্ট্রবেরী সফল চাষি পরিবারের।
চাষী হাসান আলী জানান, স্ট্রবেরী ফলের কথা শুনে উদ্বুদ্ধ হয়ে বগুড়া শেরপুরের এক খামার থেকে স্ট্রবেরী চারা নিয়ে আসি। গত বছর বাড়ির পাশে ৫০ শতক জমিতে স্ট্রবেরী চাষ করি। এর দেড় মাস পর থেকে গাছে ফল আসতে শুরু করে। ফল আসা পর্যন্ত তার খরচ হয়েছিলো ৫০ হাজার টাকা। খরচ বাদ দিয়ে তার লাভ হয়েছিলো ২ লাখ টাকা। সেই সাফল্যর কারণে এবছর তিনি ৪ লাখ টাকার বিনিময়ে ৪ বিঘা জমি বন্ধক নিয়েছেন। জমি ফেরত দিলে টাকাও ফেরত দেবে।
৪ বিঘা জমিতে এবার তিনি স্টেবেরী চাষ করেছেন। এতে তার খরচ হয়েছে ২ লাখ ১০ হাজার টাকা। স্বাসী স্ত্রীর পরিচর্যায় বাম্পার ফলনও হয়েছে। তবে হরতাল অবরোধের কারণে গত বছরের তুলনাই এ বছর দাম একটু কম। ২০১৪ সালে তিনি ৫শ থেকে ৬শ টাকা কেজি দরে স্টবেরী বিক্রি করেছেন। এবছর ৩শ থেকে ৪শ টাকা কেজি দরে স্টবেরী বিক্রি করছেন।
হাসান আলী ও তার স্ত্রীর স্ট্রবেরী চাষের সাফল্য দেখে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার শিয়ালকোল ও উল্লাপাড়া উপজেলার বোয়ালিয়াতে বাণীজ্যিক ভাবে স্ট্রবেরী চাষ শুরু করা হয়েছে। হাসান আলী আরো জানান, আমাদের দেশে রাবে ত্রি ও আমেরিকা এই দুই জাতের স্ট্রবেরী ফল পাওয়া যায়। তার মধ্যে রাবে ত্রি জাতের ফল অত্যন্ত সুস্বাদু। সিরাজগঞ্জে স্ট্রবেরী চাষের প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। তবে উচিঁঙ্গা পোকা ও পিঁপড়া গাছের কিছুটা সমস্যা করে। এছাড়া তেমন কোন সমস্যা নেই বলে তিনি জানান। তবে সরকারিভাবে আর্থিক সহযোগিতা পেলে তিনি আরো বেশি জমিতে স্ট্রবেরীর চাষ করবেন বলে তিনি জানান।
সিরাজগঞ্জ কৃষি কর্মকর্তা আরশেদ আলী জানান, সিরাজগঞ্জের শিয়ালকোল এলাকার মালঞ্চ গ্রামে ও উল্লাপাড়ার একটি গ্রামেও পরীক্ষামূলক স্ট্রবেরী চাষ করা হয়েছে। তাতে ফলন ও লাভ দুটোই ভাল হচ্ছে। স্ট্রবেরী খুব সুস্বাদু ও পুষ্টিকর ফল হওয়ায় সিরাজগঞ্জে এর ব্যাপক চাহিদা বাড়ছে। তিনি আরো বলেন স্ট্রবেরী ফল সংরক্ষণ করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা এখনও গড়ে উঠেনি। যার কারণে চাষীদের একটু সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। সংরক্ষণ ব্যবস্থা গড়ে তুলে বেশি বেশি স্ট্রবেরী চাষ করে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের অন্যান্য জেলা এবং বিদেশে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব। যা আমাদের দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখবে।
মন্তব্য চালু নেই