স্কুলের পাশে গ্রেনেড বিস্ফোরণ, আহত অর্ধশতাধিক ছাত্রী
কুমিল্লার হোমনা উপজেলায় কফিল উদ্দিন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে গ্রেনেড বিস্ফোরণের বিকট শব্দে অন্তত অর্ধশতাধিক ছাত্রী আহত হয়েছে। এদের মধ্যে গুরুতর আহত ২৯ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনা ঘটে বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে।
পুলিশ ও বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ১২ জানুয়ারি হোমনা উপজেলার রামকৃষ্ণপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণকালে মাটির নিচ থেকে সাতটি অব্যবহৃত তাজা গ্রেনেড উদ্ধার করা হয়। হোমনা থানা পুলিশ তাজা গ্রেনেডগুলো উদ্ধার করে।
জানা গেছে, উদ্ধারকৃত গ্রেনেড ২৭ এপ্রিল বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সেনাবাহিনীর বোমা বিশেষজ্ঞ দল তিতাস নদীর পাড়ে নিষ্ক্রিয় করতে যায়। এ সময় প্রায় ৩শ’ গজ দক্ষিণে অবস্থিত কফিল উদ্দিন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দ্বিতল ভবনটি কেঁপে ওঠে।
এতে স্কুলের ছাত্রীদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আতঙ্কিত শিক্ষার্থীরা শ্রেণী কক্ষ থেকে দ্রুত বের হওয়ার চেষ্টা করে। বের হওয়ার সময় কেউ লাফিয়ে পড়ে এবং ভয়ে অর্ধশতাধিক ছাত্রী আহত হয়। এদের মধ্যে গুরুতর আহত ২৯ জনকে হোমনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
কয়েক ছাত্রী জানায়, ক্লাস করার সময় হঠাৎ বিকট শব্দে তাদের স্কুল ভবন কেঁপে ওঠে। এসময় ভূমিকম্প হয়েছে মনে করে দ্রুত বের হতে গিয়ে লাফিয়ে পড়ে আহত হয় অনেকে। এ ঘটনার পর থেকে অনেকের কানে শুনতে সমস্যা হচ্ছে।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক আবদুল মালেক জানান, দুপুরে ক্লাস চলাকালে হঠাৎ বিকট শব্দে ভবন কেঁপে ওঠে। এসময় ছাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে রুম থেকে বের হতে গিয়ে অনেকেই আহত হয়েছে। এদের মধ্যে ২৯ জনকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
হোমনা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল ফয়সল জানান, গত বছর হোমনা থানার পাশে তিতাস নদীর তীরে বালির নিচ থেকে ৭টি গ্রেনেড উদ্ধার করা হয়। গ্রেনেডগুলো নিষ্ক্রিয় করতে কুমিল্লা সেনানিবাস থেকে ১০ জনের একটি বিশেষজ্ঞদল বুধবার সকালে হোমনা থানায় আসেন।
তিনি জানান, বিশেষজ্ঞদলের নেতত্বে ছিলেন সেনা কর্মকর্তা মেজর মিশকাত বেগম তানিয়া। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে গ্রেনেডগুলো নিষ্ক্রিয় করার সময় বিকট শব্দ হয়। এতে পার্শ্ববর্তী কফিল উদ্দিন স্কুলের কিছু ছাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে আহত হয়।
এ ব্যাপারে আগেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে সতর্ক করার প্রয়োজন ছিল কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, নিষ্ক্রিয় করার সময় গ্রেনেডগুলো এত শব্দ হবে এটা ধারণার বাইরে ছিল। তবে শব্দের চেয়ে ভূমিকম্প আতঙ্কটাই ছাত্রীদের মাঝে বেশি ছিল।
এ ঘটনার খবর শুনে ছাত্রীদের অভিভাবক, হোমনা উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আজিজুর রহমান মোল্লা, ইউএনও কাজী শহিদুল ইসলাম, পৌর মেয়র অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম, স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জহিরুল হক, সদ্য সভাপতি মো আনোয়ার হোসেন বাবুল, থানা অফিসার আহত ছাত্রীদের দেখতে হাসপাতালে ছুটে আসেন।
মন্তব্য চালু নেই