সোমবার মোদি-মমতার বৈঠক : গুরুত্ব পাবে বাংলাদেশও

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি সোমবার বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন। বৈঠকে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে তিস্তা পানি বণ্টন ও সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের বিষয়টি অগ্রাধিকার পাবে বলে জানা গেছে।

বিশেষ করে, মমতার সাম্প্রতিক বাংলাদেশ সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকের বিষয়গুলো নরেন্দ্র মোদির কাছে তুলে ধরবেন। বৈঠকে তিস্তা ও সীমান্ত চুক্তি কার্যকর করার বিষয়ে মমতা ইতিবাচক মত দেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই দুই চুক্তি বাস্তবায়নের ওপরই নির্ভর করছে নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের বিষয়টি।

মমতা ব্যানার্জি বাংলাদেশ সফরের আগে সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত জানান। পরে বাংলাদেশ সফরকালে তিনি তিস্তা চুক্তির ব্যাপারেও আশ্বাস দিয়ে যান। এবার এই দুই চুক্তি কীভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব, সে প্রক্রিয়া নিয়ে মমতা-মোদির মধ্যে খোলামেলা আলোচনা হতে পারে।

এর আগে ২০১১ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের বাংলাদেশ সফরকালে মমতার ঢাকায় আসার কথা থাকলেও তিনি আসেননি। তখন তিস্তা চুক্তির চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত হলেও মমতার আপত্তিতে তিস্তা চুক্তিটি আর হয়নি। তার আপত্তিতে পরে সীমান্ত চুক্তিটিও আটকে যায়। কিন্তু বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর এই দুই চুক্তি নিয়ে ফের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এতে মমতাও তার আগের অবস্থান থেকে সরে আসেন এবং গত ১৯ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক ভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ঢাকায় আসেন তিনি। সফরে চুক্তি দুটির বিষয়ে তিনি তার ইতিবাচক সিদ্ধান্তের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ জানান, মোদি ও মমতার সোমবারের বৈঠকে তিস্তা ও সীমান্ত চুক্তির ব্যাপারে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে। কারণ, মমতার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জঙ্গীবাদে সমর্থন দেওয়ার যে অভিযোগ ওঠেছে, তা নিরসন করতেই তিনি বাংলাদেশ সফরে আসেন। বাংলাদেশের সম্পর্কে ইতিবাচক মনোভাব নিয়েই তিনি মোদির সঙ্গে বৈঠক করবেন। কারণ, বাংলাদেশের সঙ্গে তিস্তা চুক্তি করতে ভারতের সাংবিধানিক কোনো বাধা নেই।

ড. ইমতিয়াজ আহমেদ আরো বলেন, সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও ভারতীয় সংসদে মোদি সরকারের এক-তৃতীয়াংশ সমর্থন রয়েছে। কাজেই চুক্তি দুটির ক্ষেত্রে কোনো বাধা না থাকলেও রাজনৈতিক কারণে এসব সমস্যা দীর্ঘায়িত হচ্ছে।

এদিকে ভারতীয় সংসদের আগামী অধিবেশনে সীমান্ত চুক্তি বিল পাশ করা সম্ভব হলেও আগামী বছর পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভার নির্বাচনের আগে তিস্তা চুক্তির সম্ভাবনা কম। কারণ, নির্বাচনের আগে তিস্তা চুক্তি হলে এবং শুষ্ক মৌসুমে পশ্চিমবঙ্গ অংশে তিস্তার পানি কমে গেলে তা নির্বাচনে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। তাই তিস্তা চুক্তির ব্যাপারে মমতা হয়তো নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে মোদির কাছে অুনরোধ জানাবেন।



মন্তব্য চালু নেই