সেমিফাইনালে কখনোই হারেনি অস্ট্রেলিয়া

একটু পেছনে ফিরে যাওয়া যাক। গত বিশ্বকাপ পর্যন্ত ছয়বার করে সেমিফাইনাল খেলেছে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড। অস্ট্রেলিয়া ছয়বারই সেমিফাইনালের বাধা উতরে ফাইনাল খেলেছে। অসিরা রেকর্ড চারবার শিরোপাও জিতেছেন। কিন্তু মজার বিষয়, ছয় সেমিফাইনাল পেরিয়ে একবারও ফাইনাল খেলা হয়নি নিউজিল্যান্ডের!

অবশ্য এবারের বিশ্বকাপে সপ্তমবারের মতো শেষ চারে উঠে ফাইনালের স্বপ্ন পূরণ করেছে নিউজিল্যান্ড। মঙ্গলবার সেমিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে ফাইনালে পা রাখেন কিউইরা। এবার অস্ট্রেলিয়াও সপ্তমবারের মতো বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠেছে। বৃহস্পতিবার শেষ চারে ভারতের বিপক্ষে খেলবেন অসিরা।

এবার এক নজরে অস্ট্রেলিয়ার আগের ছয় সেমিফাইনালগুলো দেখে নেওয়া যাক।

১৯৭৫ বিশ্বকাপ

বিশ্বকাপের প্রথম আসরেই সেমিফাইনালে ওঠে অস্ট্রেলিয়া। শেষ চারে তারা প্রতিপক্ষ হিসেবে পায় ইংল্যান্ডকে। লিডসে অনুষ্ঠিত সে ম্যাচে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে গ্যারি গিলমোরের বোলিং তোপে মাত্র ৯৩ রানে ইনিংস গুটিয়ে যায় ইংলিশদের। একাই ৬ উইকেট নেন অসি পেসার গিলমোর। ৯৪ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ওই গিলমোরের হার না মানা ২৮ রানের সুবাদে ৪ উইকেটের জয় তুলে নেয় অস্ট্রেলিয়া। অবশ্য ফাইনালে গিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হেরে যান অসিরা।

১৯৮৭ বিশ্বকাপ

সেবার দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপের শেষ চারে ওঠে অস্ট্রেলিয়া। সেমিতে তাদের প্রতিপক্ষ ছিল এশিয়ার পরাশক্তি পাকিস্তান। লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাট করে ৬ উইকেটে ২৬৭ রান সংগ্রহ করে অস্ট্রেলিয়া। জবাবে ২৪৯ রানে অলআউট হয় স্বাগতিকরা। ১৮ রানের জয় পায় অ্যালান বোর্ডারের অস্ট্রেলিয়া। সেবার ফাইনালে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের শিরোপা ঘরে তোলেন অসিরা।

১৯৯৬ বিশ্বকাপ

কোয়ার্টার ফাইনালে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে এ বিশ্বকাপে সেমিতে ওঠে অস্ট্রেলিয়া। শেষ চারে তাদের সামনে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। মোহালিতে টস জিতে আগে ব্যাট করে স্টুয়ার্ট ল ও মাইকেল বেভানের ফিফটিতে ৮ উইকেটে ২০৭ রান সংগ্রহ করে অস্ট্রেলিয়া। জবাবে শেন ওয়ার্নের ঘূর্ণিপাকে পড়ে ৩ বল বাকি থাকতে ২০২ রানে অলআউট হয় ক্যারিবিয়ানরা। ৫ রানের দারুণ এক জয় পায় মার্ক টেলরের অস্ট্রেলিয়া। অবশ্য ফাইনালে শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে শিরোপা হাতছাড়া হয় অসিদের।

১৯৯৯ বিশ্বকাপ

এই বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের কথা কখনোই ভুলবে না অস্ট্রেলিয়া। বার্মিংহ্যামে শেষ চারের সে ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হন অসিরা। টস হেরে আগে ব্যাট করে ২১৩ রানে অলআউট হয় অস্ট্রেলিয়া। জবাবে ২ বল বাকি থাকতে দক্ষিণ আফ্রিকাও ওই ২১৩ রানে অলআউট হয়ে যায়। নাটকীয়ভাবে ম্যাচটি টাই হয়। কিন্তু সুপার সিক্সে পয়েন্ট তালিকায় দক্ষিণ আফ্রিকার থেকে ওপরে থাকায় ফাইনালের টিকিট পায় অস্ট্রেলিয়া। আর ফাইনালে পাকিস্তানকে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো শিরোপাও জেতেন অসিরা।

২০০৩ বিশ্বকাপ

এই বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার সামনে পড়ে শ্রীলঙ্কা। পোর্ট এলিজাবেথের সে ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাট করে আন্ড্রু সাইমন্ডসের অপরাজিত ৯১ রানে সুবাদে ৭ উইকেটে ২১২ রানের পুঁজি গড়ে অস্ট্রেলিয়া। বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে ৩৮.১ ওভারে শ্রীলঙ্কার লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৭২ রান। তবে ৭ উইকেটে ১২৩ রানের বেশি করতে পারেননি লঙ্কানরা। ডাকওয়ার্থ ও লুইস পদ্ধতিতে ৪৮ রানের জয়ে ফাইনালে ওঠেন অসিরা। ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়নও হয় রিকি পন্টিংয়ের অস্ট্রেলিয়া।

২০০৭ বিশ্বকাপ

সেবার টানা তৃতীয়বারের মতো বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ওঠে অস্ট্রেলিয়া। শেষ চারে তারা প্রতিপক্ষ হিসেবে পায় দক্ষিণ আফ্রিকাকে। সেন্ট লুসিয়ায় টস জিতে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ১৪৯ রানে ইনিংস গুটিয়ে যায় প্রোটিয়াদের। জবাবে ৭ উইকেটের সহজ জয়ে ফাইনালে পা রাখেন অসিরা। আর ফাইনালে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে টানা তৃতীয় এবং সব মিলিয়ে চতুর্থবারের মতো শিরোপা জেতে রিকি পন্টিংয়ের দল।

এবার ২০১৫ বিশ্বকাপে এসে সপ্তমবারের মতো সেমিফাইনালে উঠেছে অস্ট্রেলিয়া। আগের ছয় সেমিফাইনালে অপরাজিত থাকার রেকর্ড কি এবারও ধরে রাখতে পারবেন অসিরা? ভারতকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো ঘরের মাঠে বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলতে পারবে মাইকেল ক্লার্কের দল? দেখা যাক কী হয়!



মন্তব্য চালু নেই