সেবার মান বাড়াতে ডিএমপির নয়া পরিকল্পনা

সেবার মান বৃদ্ধি ও থানাকে জনবান্ধব করতে নয়া পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ(ডিএমপি)।এজন্য ডিএমপির ৮ পদস্থ কর্মকর্তাকে ৪৯ থানা তদারকির দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। পুলিশ কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া সম্প্রতি এক অফিস আদেশ জারির মাধ্যমে এ নির্দেশনা দিয়েছেন।

ডিএমপি সূত্র জানিয়েছে, অতিরিক্ত ডিআইজি ও ডিআইজি পদমর্যাদার ৮ পদস্থ কর্মকর্তার মধ্যে থানা ভাগ করে দেয়া হয়েছে। তাদের দায়িত্ব থানার সার্বিক কর্মকাণ্ড ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি তদারক করা।

সংশ্লিষ্ট থানা এলাকার অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য ওসি, ডিসিদের পাশাপাশি এই ৮ কর্মকর্তাকে পুলিশ কমিশনারের কাছে জবাবদিহি করতে হবে। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদসহ সকল অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে তারা পুলিশ কমিশনারের কাছে বার্তা পৌছে দেবেন।

দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের থানা পরিদর্শন করে থানার হেফাজতে ব্যবহৃত মালামাল ঠিক মতো রক্ষণাবেক্ষণ ও ব্যবহার হচ্ছে কিনা তা তদারকি করতে বলা হয়েছে। এছাড়া কোন আসামিকে আটকের পর গাড়িতে রেখে তদবির কিংবা টাকার বিনিময়ে ছাড়িয়ে দেয়ার দেন দরবার করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

বিভাগীয় অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা ছাড়া থানা থেকে সিভিল টিম বের না হতে বলা হয়েছে। পুলিশের কিছু সদস্যদের হয়রানিমূলক আচরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তা আমলে নিয়ে হয়রানি বন্ধে পেন্ডিং মামলায় কাউকে শ্যোন অ্যারেস্ট করতে হলে সংশ্লিষ্ট জোনাল এসির অনুমতি লাগবে বলেও আদেশে বলা হয়েছে।

এছাড়া মাদক বা অস্ত্র দিয়ে উদ্দেশ্যমূলকভাবে নিরপরাধ লোকের বিরুদ্ধে মামলা না দেয়া, একই কর্মকর্তা প্রতিদিন একই ধরনের ডিউটি করতে পারবে না এবং মামলার তদন্ত শেষে দ্রুত নিষ্পত্তি করতে হবে এমন আদেশ দেয়া হয় ।

মাঠ পুলিশের সেবা বাড়াতে নিয়মিত ও কার্যকর উঠান বৈঠক আয়োজন করা, সংগৃহীত ভাড়াটিয়ার তথ্য দ্রুত তদারকি, যাচাই বাছাই ও মুলতবি থাকা অনিষ্পন্ন আলামত প্রসিকিউশনের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিষ্পন্ন করার কথা বলা হয়েছে।

জঙ্গি প্রতিরোধে ব্লক রেইড ও চেকপোস্টে তদারকি, নিখোঁজ যুবকদের তালিকা করে অনুসন্ধান ও তদারকি, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, ব্যক্তি এবং বিদেশিদের নিরাপত্তায় প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা দিতে বলা হয়েছে।

ডিএমপি’র একাধিক সূত্র জানিয়েছে, দায়িত্বপ্রাপ্ত ৮ পদস্থ কর্মকর্তার মধ্যে গুলশান বিভাগের সব থানা তদারক করছেন যুগ্ম কমিশনার (প্রটেকশন অ্যান্ড ডিপ্লোমেটিক সিকিউরিটি) আতাউল কিবরিয়া, মিরপুরে যুগ্ম কমিশনার (পিওএম) ইমতিয়াজ আহমেদ, তেজগাঁওয়ে যুগ্ম কমিশনার (সদর দফতর) আনোয়ার হোসেন, লালবাগে যুগ্ম কমিশনার (ক্রাইম) কৃষষ্ণপদ রায়, উত্তরায় যুগ্ম কমিশনার (অপারেশন) মীর রেজাউল আলম, ওয়ারীতে যুগ্ম কমিশনার (লজিস্টিক) ওয়াই এম বেলালুর রহমান, মতিঝিল বিভাগে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (লজিস্টিক, ফিন্যান্স অ্যান্ড প্রকিউরমেন্ট) জামিল আহমদ এবং রমনা বিভাগের সব থানার সার্বিক সেবার মান তদারক করছেন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার(প্রশাসন) শাহাব উদ্দীন কোরেশী। নিজ নিজ বিভাগের ডিসি, এসি ও ওসিদের নিয়ে নিয়মিত বৈঠক করে দিক নির্দেশনাও দিচ্ছেন এ পদস্থ কর্মকর্তারা।

যুগ্ম কমিশনার (পিওএম) ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ঢাকা মহানগর পুলিশের ইতিহাসে এবারই প্রথম এ ধরণের যুগোপযুগী উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এতে থানা পুলিশের কর্মকাণ্ডে গতি এসেছে। অপরাধ কমছে। পুলিশের অপরাধ প্রবণতাও কমেছে।



মন্তব্য চালু নেই