তিন সিটি নির্বাচন
সেনা থাকবে ‘নিবাসে’!
ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিলেও তাদের ক্যান্টনমেন্টের মধ্যেই ‘রিজার্ভ ফোর্স’ হিসেবে রাখবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে রিটার্নিং অফিসাররা ডাকলেই তারা তাৎক্ষণিক সাড়া দেবে।
নির্বাচন কমিশন সচিবালয় বুধবার রাতে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার বরাবর পাঠিয়েছে।
ইসি সূত্র জানায়, বেলা ১১টায় আইনশৃঙ্খলা মোতায়েন পরিস্থিতি নিয়ে কমিশনে জরুরি বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে দ্বিতীয় চিঠিটি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় ইসি যা আগের চিঠির স্থলাভিষিক্ত হবে। তারিখ ও চিঠির স্মারক নম্বর একই থাকবে বলে প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসারকে জানানো হয়।
এর আগে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় মঙ্গলবার তিন সিটির ভোটে রিজার্ভ ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সেনাবাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেয়। পরে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগকে তিন ব্যাটালিয়ন সেনা চেয়ে চিঠি দেয় ইসি।
এদিকে বিচারিক ক্ষমতা চেয়ে নির্বাচনী মাঠে সেনাবাহিনী রাখার দাবি জানিয়েছে বিএনপি। ইসি সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিলেও তারা মূলত ‘রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে সেনানিবাসেই থাকবে।
প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার বরাবর মঙ্গলবার পাঠানো ইসির উপ-সচিব মো. সামসুল আলম স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, ‘প্রতি সিটি করপোরেশন এলাকায় ১ ব্যাটালিয়ান করে সেনাবাহিনীর সদস্য আগামী ২৬ থেকে ২৯ এপ্রিল চার দিন স্ট্রাইকিং এবং রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। রিটার্নিং অফিসার ডাকলেই তারা পরিস্থিতি মোকাবেলা করবেন’।
কিন্তু কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে এ চিঠির ভাষার পরিবর্তন করে পুনরায় চিঠি পাঠায় ইসি। বুধবার রাতে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, ‘প্রতি সিটি করপোরেশন এলাকায় ১ ব্যাটালিয়ান করে সেনাবাহিনীর সদস্য আগামী ২৬ থেকে ২৯ এপ্রিল চার দিন দায়িত্ব পালন করবেন। তারা মূলত সেনানিবাসের অভ্যন্তরেই রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে অবস্থান করবেন এবং রিটার্নিং অফিসারের অনুরোধে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করবে।’
সেনাবাহিনী নিয়ে নির্বাচন কমিশনের অবস্থা পরির্তনের বিষয়ে উপ-সচিব মো. সামসুল আলম বলেন, ‘সিটি নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিযেছি। তবে তারা কোথায় থাকবে এটা বড় কথা নয়। রিটার্নিং অফিসাররা চাইলে তারা তাৎক্ষণিক পাবেন।’
তবে বিষয়টি অস্বীকার করে নির্বাচন কমিশন সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘তারা রিজার্ভ ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে থাকবে।’
সেনাবাহিনীকে বুধবার কোনো চিঠি দিয়েছেন কিনা- জানতে চাইল তিনি বলেন, ‘চিঠি যেতে পারে।’ তবে এটি নতুন চিঠি কিনা জানাননি তিনি।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও তৎকালীন কমিশন সেনা চেয়ে চিঠি দিলেও শেষ পর্যন্ত সেনা ছাড়া তাদের নির্বাচন করতে হয়েছে।
এ বিষয়ে বুধবার রাতে জানতে চাইলে নাম না প্রকাশ করার শর্তে একজন নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘ক্যান্টনমেন্ট এলাকা নির্বাচনী এলাকার মধ্যেই পড়ে। সেখানেও থাকতে পারে।’
এদিকে মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনার শাহ নেওয়াজ সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, নির্বাচনে সেনাবাহিনী রিজার্ভ ও স্টাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে। যখন দরকার হবে রিটার্নিং অফিসাররা চাইলে তথনই তারা সাড়া দিয়ে চলে আসবে।
তিনি বলেন, ‘২৬ এপ্রিল থেকে ২৯ এপ্র্রিল পর্যন্ত তিন সিটিতে সেনাবাহিনী দায়িত্ব পালন করবে। ভোটের আগের দুইদিন, ভোটের দিন ও পরের দিন সেনাবাহিনী দায়িত্ব পালন করবে।’
মন্তব্য চালু নেই