সিসি ক্যামেরা বসাতে ঢাবির ৫ হলের গড়িমসি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) কর্তৃপক্ষ আবাসিক হলগুলোকে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা (সিসি ক্যামেরা) লাগানোর নির্দেশ দিয়েছিল ১ বছর ৩ মাস আগে। নির্দেশনা মোতাবেক ১৪টি হল ক্যামেরা লাগিয়ে ফেলেছে। তবে পাঁচটি হল ক্যামেরা বসাতে গড়িমসি করছে।

আবাসিক হলগুলোতে সিসি ক্যামেরা বসানোর যে নির্দেশনা ঢাবি কর্তৃপক্ষ দিয়েছিল, তা দেয়া হয় মূলত অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিশ্চিতের কথা মাথায় রেখে। সে নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে পারেনি যে হলগুলো তার মধ্যে রয়েছে ছেলেদের চারটি ও মেয়েদের একটি হল। এছাড়া একটি হলের ক্যামেরা ভেঙে ফেলেছেন ছাত্রলীগের কর্মীরা।

সিসি ক্যামেরা বসাতে না পারার জন্য অর্থ সঙ্কটকেই দায়ী করছে হল প্রশাসন। তারা বলছে, নির্দেশনা বাস্তবায়নে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে কোনো আর্থিক সহযোগিতা করা হবে না।

গত বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি প্রভোস্ট কমিটির সভায় সিসি ক্যামেরা স্থাপনের সিদ্ধান্তটি নেয়া হয়েছিল। ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরোফিন সিদ্দিক। ওই সভায় প্রোভস্ট কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. সাবিতা রেজওয়ানা সিদ্দিক ও কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. এ এম আমাজাদ ছাড়াও আবাসিক হলগুলোর প্রভোস্টরা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় মোট ৯টি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়; যার দ্বিতীয়টি ছিল সিসি ক্যামেরা বসানো সংক্রান্ত।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল, মাস্টার দা সূর্যসেন হল, সলিমুল্লাহ মুসলিম হল, ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ হল এবং বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলে সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়নি। আবার অমর একুশে হলে লাগানো হলেও চলতি বছরের ১৩ এপ্রিল সেগুলো ভেঙে ফেলেন হল শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। হল প্রভোস্টের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন থেকে ক্যামেরা ভাঙা হয়।

যে হলগুলোতে সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে তারও অনেকগুলোতে তা করা হয়েছে দায়সারাভাবে। জগন্নাথ হলসহ বেশিরভাগ হলেই শুধু প্রধান গেটে লাগানো হয়েছে ক্যামেরা। দায়সারাভাবে লাগানো হলেও এসব হলে অপরাধ প্রবণতা অনেকাংশে কমে এসেছে।

উল্টোদিকে, যে পাঁচটি হলে এখনো ক্যামেরা স্থাপন করা হয়নি সে হলগুলোতে চলছে অপরাধ কর্মকাণ্ড। গত মাসেও গভীর রাতে শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের মূল ভবনে প্রভোস্ট অফিসের পাশে ছাত্রলীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষে চারজন আহত হন। এছাড়াও চুরি-ছিনতাই চলছেই হরহামেশা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আবু মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমাদের টাকা-পয়সা নেই। যার কারণে আমরা লাগাতে পারিনি। এ কাজে বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের এক টাকাও দেবে না। তাই আমাদের নিজস্ব অর্থায়নে কাজটি করতে হবে। সে জন্য সময় লাগছে।

তিনি বলেন, আমাদের হলটি একেবারেই খোলামেলা। বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে বড় হল। অন্যান্য হলের মতো হলে কাজটি সহজে করা যেতো। আর আমরা প্রথমে একটু উচ্চাভিলাষী সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কিন্তু পরে আমরা একটি পার্সিয়াল (আংশিক বাস্তবায়নের) সিদ্ধান্ত নিই যে, পুরো হলে যেহেতু সম্ভব হচ্ছে না, আপতত আমরা মূল ভবনে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করবো।

যে হলগুলো নির্দেশনা মানেনি তাদের দ্রুত ক্যামেরা লাগিয়ে ফেলার তাগাদা দেবেন প্রভোস্ট কমিটির সদস্য সচিব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ এম আমাজাদ। তিনি বলেন, বেশিরভাগ হলেই ইতোমধ্যে লাগানো হয়েছে। কয়েকটি হলে বাকি। আবার তাগাদা দেয়া হবে। মূলত নিজস্ব অর্থায়নে হওয়ার কারণে অনেকগুলো হল বাজেট স্বল্পতার কারণে নির্দেশনা মানতে পারেনি।



মন্তব্য চালু নেই