সিনেমা হলে জাতীয় সংগীত বাধ্যতামূলক
দেশপ্রেম এর অন্যতম প্রতীক জাতীয় সংগীত। তাই ভারতের সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছে যে প্রত্যেক সিনেমা হলে ছবি দেখানো শুরুর আগে জাতীয় পতাকা দেখিয়ে জাতীয় সংগীত বাজাতে হবে এবং এসময় সবাইকে দাঁড়িয়ে সন্মান দেখাতে হবে।
এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট এই রুল জারি করেছে। সিনেমা হলে জাতীয় সংগীত বাজানো হবে কীনা, সে সংক্রান্ত নিয়ম-কানুন ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বিভিন্ন রকম।
কোন কোন রাজ্যে এখনো সিনেমা দেখানো শুরুর আগে জাতীয় সংগীত বাজানো হয়। কিন্তু অনেক রাজ্যে এই নিয়ম মানা হয় না। ১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৬০ এর দশক পর্যন্ত জাতীয় সংগীত বাজানোটাই ছিল রেওয়াজ।
কিন্তু দেশপ্রেমের আবেগে ভাটা পড়ার পর ধীরে ধীরে জাতীয় সংগীত বাজানোর নিয়ম আর সেভাবে মানা হয়নি পরের দশকগুলোতে। এ নিয়ে ভারতীয় জনমতও ছিল বিভক্ত। ২০০৩ সালে ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য মহারাষ্ট্রে প্রথম সিনেমা হলে জাতীয় সংগীত বাজানো বাধ্যতামূলক করা হয়।
তামিলনাডুতে একই ধরণের নিয়ম করা হলে মাদ্রাজ হাইকোর্ট অবশ্য এর বিরুদ্ধে রায় দেয়। মাদ্রাজ হাইকোর্ট বলেছিল, এটি বিশৃঙ্খলা এবং বিভ্রান্তি তৈরি করবে। কিন্তু বুধবার সুপ্রিম কোর্টের দুই সদস্যের বেঞ্চ রায় দিয়েছে যে, জাতীয় সংগীত বাজাতেই হবে সব সিনেমা হলে। একই সঙ্গে দেখাতে হবে জাতীয় পতাকা।
তবে সুপ্রিম কোর্ট তাদের রুলিং এ বলেছে, সিনেমা হলে যদি জাতীয় সংগীত বাজানো হয়, তা মানুষের মধ্যে দেশপ্রেম এবং জাতীয়তাবোধের প্রতি অঙ্গীকার প্রোথিত করতে সাহায্য করবে। সুপ্রিম কোর্ট জাতীয় সংগীতের বাণিজ্যিক ব্যবহারও নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।
বিবিসির সংবাদদাতা জানাচ্ছেন, সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশনার প্রতি সাধারণভাবে মানুষের সমর্থন থাকলেও অনেকে আবার এই বিষয়টিকে তাদের ব্যক্তি স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ হিসেবেই দেখবেন।
ভারতে যখন পরমত সহিষ্ণুতা কমছে বলে অভিযোগ বাড়ছে, তখন জাতীয় সংগীত নিয়ে এই নির্দেশনা নতুন বিতর্ক সৃষ্টি করবে বলে মনে করছেন অনেকে। ভিকি নামে একজন টুইটারে লিখেছেন, “লোকে সিনেমা হলে যায় বিনোদনের জন্য, দেশপ্রেম দেখানোর জন্য নয়।”
কবির টানেজা নামে আরেকজন মন্তব্য করেছেন, “এবার কী তাহলে এটিএম মেশিনের সামনের লাইনেও জাতীয় সংগীত বাজাতে হবে?”-বিবিসি
মন্তব্য চালু নেই