সিঙ্গাপুরে ‘জঙ্গি’ আটক সরকারের জন্য সতর্কবার্তা

সিঙ্গাপুরে জঙ্গি সন্দেহে আট বাংলাদেশি কর্মীর আটক হওয়ার ঘটনা সরকারের জন্য সতর্কবার্তা বলে মনে করেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা। তাঁদের আশঙ্কা এর ফলে প্রভাব পড়তে পারে সিঙ্গাপুরসহ আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারেও।

বৈদেশিক আয় ও শ্রমবাজারের গুরুত্ব বিবেচনায়, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে আন্তর্জাতিক মহলে তা দ্রুত জানিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা। আর দেশের ভাবমুর্তি প্রশ্নবিদ্ধ হয় এমন কিছু না করতে প্রবাসীদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।

চলতি মাসের শুরুর দিকে আট বাংলাদেশি কর্মীর আটক হওয়ার খবরটি উঠে আসে সিঙ্গাপুরের গণমাধ্যমে। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বলা হয়, জঙ্গি সন্দেহে আটক করা হয়েছে আট বাংলাদেশিকে। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ইসলামিক স্টেটে (আইএস) যোগ দিতে ইচ্ছুক ছিলেন তাঁরা।

দাবি করা হয় আটককৃতদের পরিকল্পনা ছিল,বাংলাদেশের সরকারি ও সামরিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ওপর আক্রমণ করার; এমনকি সরকার উৎখাতেরও। এপ্রিলের শেষ নাগাদ তাদের সাথেই আটক আরো পাঁচজনকে সিঙ্গাপুরে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়েছিল। ফেরত আসা আটজনকে গ্রেপ্তার করে ইতিমধ্যে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দেশের গোয়েন্দা সংস্থা।

এর আগে গত বছরের ডিসেম্বরে আরো ২৮ জনের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ তুলে দেশে ফেরত পাঠিয়েছিল সিঙ্গাপুরের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

সিঙ্গাপুর বাংলাদেশের অন্যতম বড় শ্রমবাজার। সেখানেই কয়েক মাসের ব্যবধানে আবারও এমন ঘটনা সরকারের জন্য সতর্কবার্তা বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক দেলোয়ার হোসেন।

আর অভিবাসন বিশেষজ্ঞ তাসনিম সিদ্দিক মনে করছেন, সবার আগে বিষয়টিকে সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করতে হবে। আর ওই ব্যক্তিরা আসলেই অভিযুক্ত হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। আর অভিযুক্ত না হলে কেন তারা অভিযুক্ত নয়,তাও বাংলাদেশের শ্রমবাজারের সাথে সংশ্লিষ্ট সব দেশকে জানিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

সিঙ্গাপুরের ওই ঘটনা জানার পর পরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেশের ভাবমূর্তি প্রশ্নবিদ্ধ হয়, এমন কিছু না করতে প্রবাসীদের প্রতি অনুরোধ জানান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।

তবে বিষয়টি সুষ্টভাবে তদন্তের পাশাপাশি, এমন অভিযোগ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক কোনো ষড়যন্ত্র কি না, সরকারকে তাও খতিয়ে দেখার পরামর্শ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা।



মন্তব্য চালু নেই