সালমান খানের শাস্তি ও মানুষের মানবতার ভন্ডামি
সম্প্রতি বলিউড কিং খ্যাত অভিনেতা সালমান খানের বিরুদ্ধে হিট অ্যান্ড রান মামলার বায় ঘোষণা হয়েছে। রায় ঘোষণা পরপরই বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা সমালোচনার ঝড় উঠে। সালমান খানকে নিয়ে স্ট্যাটাস দেন অসংখ্য ব্যক্তি। স্ট্যাটাসের মধ্যেও থাকে তর্ক-বিতর্কের ঝড়।
ফয়সাল শোভন নামে এক ব্যক্তিও সালমান খানকে নিয়ে দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন তার ফেসবুকে। আওয়ার নিউজ বিডি’র পাঠকদের জন্য স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো :
“সালমান খান একযুগ আগে মদ খেয়ে মাতাল হয়ে ফুটপাতে ঘুমন্ত পাঁচজন মানুষের শরীরে গাড়ি তুলে দিয়েছিলেন।
ফলাফল, একজন নিহত হয়েছিলো। নিহত সেই লোকটি পরিবার চরম গরিব। তার ছেলে এখন মানুষের গাড়ি মোছে।
তো সালমান যখন দোষী প্রমাণিত হয়ে শাস্তি পেলো, তখন ভারতসহ সারা দুনিয়াতে মাতন উঠলো। বলিউডের সব নামকরা নায়ক নায়িকারা স্টাট্যাস দিচ্ছে, টুইট করতেছে, মিডিয়াতে বলতেছে, we are with you, Salman, কেউ আবার বলতেছে, forever with Salman, no matter what.
জি হা, এটাই দুনিয়া। অনেক অনেক অদ্ভুত। মাঝেমাঝে আপনি হিসাব মেলাতে পারবেন না।
কেউ কিন্তু বলতেছেনা, নিহত সেই গরিব মানুষটির সাথে আছি, বা ভিক্টিম পরিবার বিচার পেয়েছে টাইপের কথাবার্তা।
আমি জানতাম এমনই হবে। আমি মাঝেমাঝে কিছু ব্যাপার হিসাব মেলাতে পারি না।
লিওনার্ডো ডি ক্যাপ্রিও একটার পর একটা মেয়ে’কে ভোগ করে, ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডোর গার্লফ্রেন্ডের তালিকা গর্ব করে প্রচার করে তার ফ্যানরা, মারিও বালাতোলি তার গার্লফ্রেন্ডকে নিয়ে বেট ধরে, তাতে ভক্তকুলের সমস্যা নেই। এদের সাতখুন মাফ তাদের ভক্তকুলের চোখে।
সালমান খান আজও ভারতের সেরা ব্যাচেলর।
gasp emoticon
আমি বুঝি না, ব্যাচেলরের সংজ্ঞা কি !! সালমান খান তিনবার কবুল বলে নি, সাতপাকেও ঘোরে নি, জাস্ট এই কারণে সে ব্যাচেলর ? প্রতিদিন রাতে যার অমুক নায়িকা, তমুক মডেল না হলে চলেই না !!
বাহ !
আবার উল্টা চিত্রও আছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন তার বৌ হিলারির সাথে চিট করেছিলো, মনিকা লুইন্সকির “ব্লো-জব স্ক্যান্ডালের” কারণে সে ইমপিচমেন্টের স্বীকার হল !
জি হা, ইহা মহা অপরাধ।
সামনে মার্কিন প্রেসিডেন্টসিয়াল নির্বাচন। তাতে দেখবেন, প্রার্থীরা অপ্রাণ চেষ্টা চালাবে ভোটারদের কাছে এটা বোঝাতে যে তাদের পারিবারিক বন্ধন কতটা মজবুদ !! যে ক্যান্ডিডেটের পরিবার যত ভালো, সে তত এগিয়ে থাকবে। গতবার প্রচারের সময় রিপাবলিকান মিট রমনী তার বাপ মা’রে নিয়ে আবেগময় গল্প বলেছিলো। রমণীর মা নাকি প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠেই দেখতো রমণীর বাপ গোলাপ হাতে তার জন্য দাঁড়িয়ে আছে। এই করে যুগের পর যুগ তাদের ভালোবাসার বন্ধন ছিলো অটুট !!
জি হা, দুনিয়ার সবমানুষই জানে, কোনটা ভালো আর কোনটা মন্দ। তা মন্দের পৃষ্ঠপোষকতা যতই হোক। যতই ডি ক্যপ্রিও, ম্যাডোনা বা জেনিফার লোপেজের মত মানুষকে সে দেশে আইডিওলাইজড করা হোক না কেন !!
বাস্তবতা হল, ভিন্নভিন্ন মানুষের জন্য আমাদের আমজনতার দৃষ্টিভঙ্গি ভিন্ন ভিন্ন হয়ে যায়। এটাই সত্য। প্রিতমের সেই গানের মত,
“কবিগুরুর প্রেমে পড়লে, বাবা মা গর্বিত
আমার প্রেমে পড়লে, মেয়ে নির্যাতিত”
মন্তব্য চালু নেই