বিএনপির স্থায়ী কমিটির বিবৃতি :

‘সাময়িক কষ্ট’ স্বীকারের অনুরোধ বিএনপির

বিএনপির স্থায়ী কমিটি বলেছে, মানুষের কষ্ট, দুর্ভোগ ও ক্ষয়ক্ষতির ব্যাপারে তারা সম্পূর্ণ সহানুভূতিশীল ও সজাগ। ধৈর্য ধরে ‘সাময়িক কষ্ট’ স্বীকারের জন্য তারা দেশবাসীর প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে।

আজ মঙ্গলবার রাতে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্ষদ জাতীয় স্থায়ী কমিটি এক বিবৃতিতে এই আহ্বান জানায়। ই-মেইলে পাঠানো বিবৃতিতে সই করেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান।

বিবৃতিতে অবরোধ চলাকালে নাশকতার জন্য সরকারকে দায়ী করেছে বিএনপি। নানামুখী ভীতি প্রদর্শন ও কঠোর সেন্সরশিপ প্রয়োগের মাধ্যমে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা সম্পূর্ণ হরণ করা হয়েছে বলেও দাবি করা হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ক্ষমতাসীনরা যেভাবে রক্ত ঝরিয়েছে, গুম করেছে, জাতীয় অর্থনীতির বিনাশ করেছে, সব প্রথা-প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছে, লুণ্ঠন করেছে, মানুষকে নির্যাতন ও অপমান করেছে, তার অবসানকল্পে ধৈর্য ধরে সাময়িক কষ্ট স্বীকারের জন্য আমরা দেশবাসীর প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে উদ্ধত শাসকদের অস্ত্রের ভাষা ও ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় দেশবাসী যত দ্রুত ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে নামবেন, জনগণের বিজয় ততই ত্বরান্বিত হবে বলে আমরা দৃঢ়ভাবে আস্থাশীল।’

বিবৃতিতে বলা হয়, পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত অবরোধ চলবে।

বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়, শান্তিপূর্ণ অবরোধ কর্মসূচিকে ব্যর্থ করতে ক্ষমতাসীনেরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তারা সন্ত্রাস, নাশকতা, অন্তর্ঘাত সৃষ্টির পাশাপাশি অপপ্রচার জোরদার করেছে। ইতিমধ্যে সরকারের সমর্থক সন্ত্রাসীরা বিএনপির অনেক জ্যেষ্ঠ নেতার বাসা ও অফিসে বোমা হামলা ও গুলিবর্ষণ করেছে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বোমা নি‌ক্ষেপ এবং ১২ জানুয়ারি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের সমাবেশের পাশে ককটেল নিক্ষেপকালে সরকারী দলের নেতা-কর্মীরা আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি ও বোমাসহ হাতেনাতে গ্রেপ্তার হলেও তাদেরকে সরকারি নির্দেশে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। হাইকোর্টে রাখা বোমা ও গুলিভরা পিস্তলও উদ্ধার করা হয়েছে। এদের কারও বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া না হলেও সবার সামনে পরিষ্কার হয়ে গেছে যে, সুপরিকল্পিতভাবে ক্ষমতাসীনরাই সন্ত্রাস, নাশকতা ও অন্তর্ঘাত চালিয়ে তার দায় আন্দোলনরত বিরোধী দলের ওপর চাপাবার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘গণতন্ত্রে আস্থাহীন ও একদলীয় শাসনব্যবস্থায় বিশ্বাসী বর্তমান ক্ষমতাসীনরা ইতোমধ্যে নানামুখী ভীতি প্রদর্শন ও কঠোর সেন্সরশিপ প্রয়োগের মাধ্যমে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা সম্পূর্ণ হরণ করেছে। ফলে দেশের প্রকৃত চিত্র এবং জনগণের আন্দোলনের সঠিক খবর প্রচার করতে সংবাদমাধ্যম ব্যর্থ হচ্ছে। তারা একতরফা আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করে চলেছে, কিন্তু এর জবাব আমাদের কোনো নেতা দিলেই তাকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। আমাদের বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হচ্ছে। বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার বিবরণ সরাসরি সম্প্রচার করতে দেয়া হচ্ছে না। এমনকি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের টক শো ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে কেউ ক্ষমতাসীনদের অপকর্ম তুলে ধরলে বা অপপ্রচারের জবাব দিলে তাকেও সাজানো মামলায় আটক করা হচ্ছে।’



মন্তব্য চালু নেই