সামদাদো ঘিরে রেখেছে পুলিশ, তদন্তে থাকছে তিন কারণ
প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মাহবুবুল হক শাকিলের মৃতদেহ পাওয়া গেছে যে রেস্তোরাঁয়, তদন্তের প্রয়োজনে গুলশানের সেই জাপানিজ কোজিন সামদাদো ঘিরে রেখেছেন ডিবি-সিআইডিসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন বিভাগের সদস্যরা।
মঙ্গলবার বিকাল পাঁচটার পর সেখানে সড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
রেস্তোরাঁর সাত কর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে গেছে পুলিশ। তবে শাকিলের কীভাবে মৃত্যু হয়েছে সে সম্পর্কে এখনো কিছু জানাতে পারেনি পুলিশ। তারা ময়নাতদন্তের অপেক্ষায় আছে। মৃত্যুরহস্য উন্মোচনে সম্ভাব্য তিন কারণ মাথায় রেখে পুলিশ তাদের তদন্তকাজের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন গুলশান জোনের একজনের পুলিশ কর্মকর্তা।
গুলশান-২-এর ৩৫ নম্বর সড়কের ২৭ নম্বর বাড়ির জাপানি রেস্তোরাঁর দোতলার একটি কক্ষে মঙ্গলবার দুপুরে পাওয়া যায় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মাহবুবুল হক শাকিলের মৃতদেহ। সোমবার রাত আটটার দিকে শাকিল সেখানে যান বলে আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে সাংবাদিকদের জানান। আজ দুপুরের দিকে রেস্তোরাঁর লোকজন তাকে ডাকতে গেলে কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে তার পরিবারের লোকজনকে খবর দেয়। পরে তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ে।
শাকিলের মৃত্যুর খবর জানাজানির পর সেখানে প্রচুর মানুষের ভিড় জমে। একপর্যায়ে রেস্তোরাঁর প্রধান ফটক বন্ধ করে দেয়া হয়। বিকালের পর বিপুল পরিমাণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য সেখানে অবস্থান নেন। রেস্তোরাঁর চারপাশের রাস্তায় বন্ধ করে দেয়া হয় সাধারণ যানবাহন চলাচল।
রেস্তোরাঁর ভেতর সরকারি লোকজন ও শাকিলের পারিবারিক সদস্য ছাড়া আর কাউকে ঢুকতে দেয়া হয়নি। মরদেহ নিয়ে যাওয়ার পর সেখানে সাধারণের প্রবেশ পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়া হয় তদন্তেকাজের সুবিধার জন্য।
শাকিলের মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে গুলশান জোনের পুলিশের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মৃত্যুর কারণ জানতে কয়েকজন কর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেয়া হয়েছে। খুন, আত্মহত্যা ও স্বাভাবিক মৃত্যু- তিনটি বিষয় মাথায় রেখেই পুলিশ কাজ করছে। রেস্তোরাঁটির সিসি ক্যামেরায় ধারণকৃত ভিডিও ফুটেজ যাচাই করা হচ্ছে।
গুলশান থানার ডিউটি অফিসার আবদুল মান্নাফ বলেন, সামদাদো রেস্তোরাঁ থেকে যে সাতজনকে থানায় আনা হয়েছে ওই সাতজনের নাম-ঠিকানা এখনো লেখা হয়নি। ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন।
তবে শাকিলের লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে এবং তার ময়নাতদন্তও করা হবে। ওই এলাকায় দায়িত্বে রয়েছেন গুলশান থানার উপপরিদর্শক সোহেল রানা। তিনিই সম্ভবত তার লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেছেন বলেও জানান আবদুল মান্নাফ।
জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম শাখার অতিরিক্ত উপকমিশনার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী বলেন, এ ব্যাপারে কিছু সময় পরে বিস্তারিতভাবে জানানো হবে।
এদিকে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশের প্রহরায় মাহবুবুল হক শাকিলের লাশ বারডেম হাসপাতালের মরচুয়ারিতে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় হাসপাতালে আসেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম ও আওয়ামী লীগের নেতারা।
শামীম সাংবাদিকদের বলেন, আগামীকাল বুধবার বেলা ১১টার দিকে তার প্রথম জানাজা ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে অনুষ্ঠিত হবে। পরে তার লাশ গ্রামের বাড়ি নেওয়া হবে।
মন্তব্য চালু নেই