সাত বছর পর সৌদি আরবে মিলিত হচ্ছে পুরো জিয়া পরিবার
পবিত্র ওমরা হজ পালনে সৌদি আরবে গেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, অন্যদিক থেকে পুত্র তারেক রহমান লন্ডন থেকে এবং আরাফাত রহমান মালয়েশিয়া থেকে সৌদি আরব আসবেন। লক্ষ্য ওমরা হজ পালন হলেও এটা বহুদিন পর পুরো জিয়া পরিবারের এক সাথে মিলিত হওয়া।
বেগম খালেদা জিয়া শনিবার রাত নয়টার পর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে এমিরেটসের একটি বিমানে ঢাকা ছাড়েন। রোববার ভোরে মদিনায় পৌছাবেন তিনি।
বর্তমানে লন্ডনে চিকিৎসাধীন বড় ছেলে তারেক রহমান তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সৌদি আরব যাবেন। তার সঙ্গে থাকবেন স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমান ও একমাত্র কন্যা জাইমা রহমান। এ ছাড়াও বর্তমানে মালয়েশিয়ায় বসবাসরত বিএনপি প্রধানের ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো স্ত্রী শর্মিলা রহমান ও তাদের দুই কন্যা নিয়ে সৌদি আরবে মায়ের সঙ্গে মিলিত হবেন।
বিএনপির একটি সূত্র জানিয়েছে, এমিরেটসের ওই বিমানে দুবাই থেকে সপরিবারে উঠবেন দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ও খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান। তবে কোকোর আসার ব্যাপারে এখনও কিছুটা সংশয় আছে বলেও জানা গেছে।
চেয়ারপারসনের প্রেস উইং কর্মকর্তা শায়রুল কবীর খান সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, সৌদি আরবে ইবাদত বন্দেগির মাধ্যমে খালেদা জিয়া রমজানের দিনগুলো কাটাবেন। পবিত্র কাবা শরিফে ওমরা করার পাশাপাশি ইতেকাফ করবেন খালেদা জিয়া। আগামী ২৬ রমজান রাতে তার ঢাকা ফেরার কথা রয়েছে।
সৌদিতে খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের দেখা হওয়াকে সরকার বিশেষ রাজনৈতিক গুরুত্বের সাথে দেখছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যম সংবাদ প্রকাশ করেছে। যদিও সরকার দলীয় কোনো নেতা এবং দলীয় মূখপত্র কোনো বিবৃতি প্রদান করেননি। সংবাদে প্রকাশ, ঈদের পরে খালেদা জিয়ার আগাম আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়ায় সৌদিতে বিএনপির দুই নেতার সাক্ষাতের বিষয়টির সাথে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পেয়েছে সরকার।
সৌদি আরব সফরে খালেদার সঙ্গে আছেন প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান সোহেল, বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, ব্যক্তিগত আলোকচিত্রী নুরউদ্দিন আহমেদ নুরু, বিএনপির তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক শরীফ শাহ কামাল তাজ, সৌদি আরবে চেয়াপারসনের বিশেষ প্রতিনিধি এনামুল হক চৌধুরী প্রমুখ। এ ছাড়া গণমাধ্যমের একটি দলও খালেদার জিয়ার সফরে সৌদি আরব গেছেন।
প্রসঙ্গত, প্রায় সাত বছর পর বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের পুরো পরিবার মিলিত হতে যাচ্ছে। ২০০৭ সালের ৭ মার্চ গ্রেফতার হন তারেক রহমান। একই বছরের ৩ সেপ্টেম্বর ভোরে সেনানিবাসের বাড়ি থেকে খালেদা জিয়ার সঙ্গে গ্রেফতার হন কোকো। ২০০৮ সালের ১৭ জুলাই জামিনে মুক্তি পাওয়ার পরদিন চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ড যান কোকো। সেই বছরেরই ১১ সেপ্টেম্বর তারেক রহমান চিকিৎসার জন্য লন্ডন যান। সেই থেকে তারেক লন্ডনে স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমান ও কন্যা জাইমা রহমানকে নিয়ে বসবাস করছেন। এরপর লন্ডন থেকে তিনি বেরও হয়েছেন বিভিন্ন কারণে। সেখানে তার চিকিৎসা চলছে বলে দাবি করে তার দল।
অন্যদিকে, একটি মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর থাইল্যান্ড থেকে মালয়েশিয়ায় চলে আসেন কোকো। সেই থেকে এখানেই তার অবস্থান। তবে ২০১২ সালে চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়া সিঙ্গাপুরে গেলে সেখানে কোকোর সঙ্গে তার দেখা হয়। ২০০৮ সালে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে তারেক রহমান লন্ডন যাওয়ার পর এটা হবে মা খালেদার সঙ্গে তার দ্বিতীয় সাক্ষাৎ। এর আগে ২০১১ সালে খালেদা জিয়ার লন্ডন সফরের সময় মা-ছেলের সাক্ষাৎ হয়। তবে ১/১১’র পর একত্রে পুরো পরিবারের আর দেখা হয়নি।
সবশেষ গত মাসে চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়া সিঙ্গাপুরে যাচ্ছেন এবং সেখানে পুরো পরিবারের সাক্ষাৎ হবে গণমাধ্যমে এমন খবর প্রকাশ হলেও তা বাস্তবে হয়নি। কারণ খালেদা জিয়া সিঙ্গাপুরেই যাননি।
মন্তব্য চালু নেই