সাকার সাফাই সাক্ষী : অ্যাটর্নি ও মাহবুবের পাল্টাপাল্টি বক্তব্য

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত সালাউদ্দিন কাদের সাকা চৌধুরীর (সাকা) পক্ষে আটজন সাফাই সাক্ষী চেয়ে করা আবেদন প্রসঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও সাকা চৌধুরীর আইনজীবী খন্দকার মাহবুবুর রহমান পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দিয়েছেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ফৌজদারি মামলার ক্ষেত্রে রিভিউর স্কোপটা খুবই কম। সাধারণত আদালতের কোনো ভুল পরিলক্ষিত হলে পুনর্বিবেচনার সুযোগ থাকে। আর সাকা চৌধুরী সাক্ষ্য নেয়ার আবেদন করেছেন নির্ধারিত সময়ের পরে। অর্থাৎ রিভিউ করতে সময় হচ্ছে ১৫ দিন। কিন্তু সে সময়তো শেষ হয়ে গেছে। এটা তামাদি হয়ে গেছে। এখন এ দরখাস্ত আমলে নিলে অরাজকতা সৃষ্টি হবে। প্রতিটি আসামি একের পর এক দরখাস্ত করবে।
তিনি আরো বলেন, এ ছাড়াও এ মামলার বিচারের সময় সাকা চৌধুরী নানা ধরনের তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করেছেন। আর এগুলো (একাত্তরে তিনি দেশে ছিলেন না) যাচাই-বাছাই করে ট্রাইব্যুনাল এবং উচ্চআদালত বিচার করেছেন। এখন এই কথার পক্ষে কয়েকজনকে সমন চেয়ে একটি দরখাস্ত করেছেন। এটা আদালতে বিচার্য।
সোমবার নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ বিফ্রিংয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
অপরদিকে সাকা চৌধুরীর আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, প্রয়োজনে আপিল বিভাগ সংবিধানের ১০৪ অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে এসব ব্যক্তিকে সমন দিয়ে এ ব্যাপারে (যুদ্ধের সময় সাকা চৌধুরী পাকিস্তানে ছিলেন) নিশ্চিত হতে পারেন। এতে পরিষ্কার হবে সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগসমূহ মিথ্যা, বানোয়াট এবং জালিয়াতির মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের শহীদ শফিউর রহমান মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
খন্দকার মাহবুব বলেন, সাকা চৌধুরীর সুনির্দিষ্ট ডিফেন্স হচ্ছে তিনি চট্টগ্রামে থাকতেন না। তিনি ১৯৭১ সালের মার্চ মাসের আগে থেকে নটরডেম কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনার সুবাদে ধানমন্ডির পৈত্রিক বাসায় থাকতেন। ২৯ মার্চ পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করেন এবং ১৯৭৪ সালের এপ্রিল মাসে ঢাকায় আসেন। পাঞ্জাব যাওয়ার সময় কাইউম রেজা চৌধুরী ঢাকার তেজগাঁও বিমানবন্দরে নিজ গাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার কথা ট্রাইব্যুনালে বলেছেন।
খন্দকার মাহবুব বলেন, ইতিমধ্যে দেশি এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এ ব্যাপারে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এসব প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, যদি আদালত অনুমতি প্রদান করে তবে উপরোক্ত ব্যক্তিরা তাদের এফিডেভিট প্রদত্ত বক্তব্যের ব্যাপারে বাংলাদেশে এসে সত্যতা নিশ্চিতের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
প্রসঙ্গত, মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর পক্ষে রিভিউ শুনানির সময় সাতজনকে সাক্ষী তাদের সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য আবেদন করেছেন। এই আটজনের মধ্যে পাঁচজন পাকিস্তানের, একজন যুক্তরাষ্ট্রের ও বাকি দুইজন বাংলাদেশের নাগরিক।
যে আটজনের নামে সমন চাওয়া হয়েছে তারা হলেন- পাকিস্তানের স্থপতি মুনিব আরজুমান্দ খান, পাকিস্তানের ডন গ্রুপের চেয়ারম্যান আমবর হারুন সায়গল, পাকিস্তানের প্রাক্তন মন্ত্রী ইসহাক খান খাকওয়ানি, ভিকারুননিসা নূনের নাতি রিয়াজ আহমেদ নূন এবং পাকিস্তানের প্রাক্তন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান মিয়া মোহাম্মদ সুমরো।
বাকি তিনজন হলেন- যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী প্রাক্তন কূটনীতিক এম ওসমান সিদ্দিক, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি শামীম হাসনাইন ও তার মা জিনাত আরা বেগম।
মন্তব্য চালু নেই