সাংবিধানিক শাসনের নামে চলছে স্বৈরতান্ত্রিক কর্তৃত্ব

সংবিধানে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার সুরক্ষার বদলে তাকে সীমিত করার সাংবিধানিক ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই সংবিধানের অধীনে সাংবিধানিক শাসনের নামে দেশে স্বৈরতান্ত্রিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা হয়েছে। এ সংবিধানকে অবিকৃত রেখে রাষ্ট্র ও রাজনীতির গণতান্ত্রিকীকরণ কখনই সম্ভব নয়।
শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে আয়োজিত এক আলোচনা ও মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ কথা বলেন।
‘বিদ্যমান সংকট নিরসনে গণতান্ত্রিক সংবিধান প্রয়োজন’ শীর্ষক এ আলোচনা সভার আয়োজন করে গণতান্ত্রিক সংবিধান সংগ্রাম কমিটি। আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি।
লিখিত বক্তব্যে সাকি বলেন, ‘সংবিধানের মাধ্যমে তৈরি হওয়া ব্যক্তিকেন্দ্রিক ক্ষমতার বর্তমান এই কাঠামো দুই দলের শীর্ষ নেতাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। পরিবারতান্ত্রিক ক্ষমতার সাথে যুক্ত হয়ে ক্ষমতার একচেটিয়াকরণকেই শাসকগোষ্ঠীর প্রধান রাজনৈতিক তৎপরতায় পরিণত করেছে। যার ফলে শাসকগোষ্ঠীর অন্তর্বিরোধ তীব্র হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনকালীন এই দুই গোষ্ঠীর সমঝোতার ভিত্তিতে গোষ্ঠীতন্ত্রের বাইরের একদল লোককে তত্ত্বাবধায়ক মেনে নির্বাচনের ব্যবস্থাও এখন অপসৃত। এই ধরনের মারমুখি বাস্তবতায় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কোনো বাস্তবতা অবশিষ্ট নেই। বরং সংবিধান সমুন্নত রাখার কথা বলেই অগণতান্ত্রিক ধারা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।’
বিএনপি বা আওয়ামী লীগ উভয় দলই নিজেদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতায় আসার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে বলে মত দেন তিনি। তিনি বলেন, ‘আমাদের এখন নতুন রাজনৈতিক দিশা প্রতিষ্ঠিত করা দরকার।’
আয়োজক সংগঠনের সংগঠক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম বলেন, ‘সংবিধান যে জনগণের জীবনধারণের দলিল আমাদের দেশে সেটা মানা হয় না। বাহাত্তরের সংবিধানে জনগণের অধিকার নিশ্চিতের একটা ঘাটতি রয়ে গেছে। সংবিধানকে সংরক্ষণ করে যে ক্ষমতা প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে সেটা জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার বিপক্ষে।’
লেখক ও কবি শহীদুল্লাহ ফরায়েজী বলেন, ‘আমাদের সংবিধান শুরু হয়েছে একাত্তরের মুক্তি সংগ্রাম থেকে। কিন্তু এর আগেও যে বাংলার মানুষ অন্যায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রাম করেছে সেগুলোর কথা সংবিধানে উল্লেখ নেই। তাছাড়া, যেই চেতনা নিয়ে আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম সংবিধানে তার প্রতিফলন নেই।’
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন- অধ্যাপক আহমেদ কামাল, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, অধ্যাপক আবুল কাশেম, মুক্তিযোদ্ধা মনিবুর রহমান প্রমুখ।



মন্তব্য চালু নেই