সাংবাদিকদের মুখোমুখি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ছাত্রলীগের নতুন কমিটি নিয়ে ব্যপক আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে বুধবার (২২ জুলাই) বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব ঘোষণা দেন সভাপতি মো.আলমগীর টিপু এবং সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বি সুজন। এ সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি ঘোষণার পর প্রথমবারের মত সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছেন নব নির্বাচিত দুই নেতা।সংবাদ সম্মেলনে নিজের বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে আসা বিভিন্ন অভিযোগের জবাব দেন সভাপতি ।কমিটি ঘোষণার পর,চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সভাপতি আলমগীর টিপু’র বিরুদ্ধে জোড়া খুন সহ নিয়মিত ছাত্রত্ব না থাকা, সন্ত্রাস,অস্ত্রবাজি, সহিংসতা এবং পারিবারিকভাবে জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে যোগাযোগের অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে সংবাদও প্রচারিত হয়েছে। কিন্তু এসব অভিযোগ মিথ্যা,বানোয়াট ও ষড়যন্ত্র বলে পাল্টা অভিযোগ করেছেন এ নেতা। এসময় তিনি বলেন,”একটি পক্ষ তার ও তার পরিবারের ভাবমূতি নষ্ট করার জন্য এসব করছেন”।

বহুল আলোচিত বগি রাজনীতির বিষয়ে সভাপতি আলমগীর টিপু বলেন “ছাত্রলীগের সঙ্গে বগির কোন সম্পর্ক নেই। ছাত্রলীগ মানে তালিকায় যাদের নাম আছে, কেন্দ্র থেকে যাদের নামে চিঠি পাঠানো হয় তারা। এর বাইরে কেউ বগি নিয়ে কোন রাজনীতি করলে এর সঙ্গে ছাত্রলীগের কোন সম্পর্ক নেই”। অন্ত:কোন্দল ও মারামারির বিষয়ে টিপু বলেন,”আমাদের মধ্যে আর মারামারি হবেনা। আমরা সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক এক হয়ে সব কর্মকান্ড পরিচালনা করব। আমরা দু’জনই মাঠের কর্মী। আমরা দু’জনে মিলে সব ঠিক করে দেব। আর কোন কোন্দল থাকবেনা”।সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো বলেন, “২০১৩ সালের ২৪ জুন যুবলীগ নেতা হেলাল আকবর বাবরের সঙ্গে আমাদের বড় ভাই লিমনের গোলাগুলি হয়েছে। সাংগঠনিক কাজ শেষ কওে আমি বড় ভাই বিপদে পড়েছেন শুনে দেখতে গিয়েছিলাম। পুলিশ আমকে ঘটনার দু’ঘণ্টা পর গ্রেপ্তার করেছে,আর কাউকে যৌন হয়রানির তো প্রশ্নই উঠেনা”।অপরদিকে আলমগীর টিপু’র বড় ভাই ২০০০ সালে নগরীর বহুল আলোচিত এইট মার্ডারের সাথে এবং তার বাবা জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলেও অভিযোগ উঠেছে।আলমগীর টিপু বলেন,”আমার ভাই যদি এইট মার্ডরের সাথে জড়িত থাকত তাহলে তার নাম অবশ্যই এজাহার কিংবা চার্জশীটে থাকত। আর আমার পরিবার জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নয়। আর জড়িত থাকার ব্যাপার যদি কেউ প্রমাণ করতে পারে তাহলে আমি মুচলেকা দিয়ে রাজনীতি ছেড়ে দেব।”

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ছাত্রলীগের আট দফা লক্ষ্যের কথা জানানো হয়। এর মধ্যে অনত্যম হচ্ছে বগি রাজনীতিকে জিরো টলারেন্স দেখানো এবং অভ্যন্তরীণ কোন্দলে জড়িয়ে কেউ ভাবমূর্তি নষ্ট করলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া,মৌলবাদমুক্ত ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় প্রগতিশীল ক্যাম্পাস বিনির্মাণের চেষ্টা করা।বগিভিত্তিক রাজনীতিকে উৎসাহিত না করে ‘জিরো টলারেন্স’ দেখানোর ঘোষণা দিয়েছেন নতুন সভাপতি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান নতুন কমিটির সাধারণ সম্পাদ ফজলে রাব্বি সুজন। এতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়কে শতভাগ সেশনজটমুক্ত করা, শাটল ট্রেনের বগি বাড়ানো, শিক্ষার্থীদের আবাসন সুবিধা বাড়ানো, হলে খাবারের মান বাড়ানো, হল ও বিভাগের ২৪ ঘণ্টা সুপেয় পানি সরবরাহ, লাইব্রেরিকে আধুনিক করা, শিক্ষার্থীদের গবেষণা ব্যয় বাড়ানো, প্রত্যেক বিভাগে কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন, হলের নিরাপত্তা বাড়ানো এবং চবি মেডিকেলের আধুনিকায়ন ও পর্যাপ্ত চিকিৎসব নিয়োগের দাবি জানানো হয়। অভ্যন্তরীণ কোন্দল ভুলে মিলেমিশে রাজনীতি করা এবং হানাহানি, সন্ত্রাস ও টেন্ডারবাজমুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় গড়ারও ঘোষণা দিয়েছেন নব নির্বাচিত দুই ছাত্রনেতা। সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম এ খালেদ চৌধুরী, সহ-সভাপতি অমিত কুমার বসুসহ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদস্য শাহেদ সরোয়ার।



মন্তব্য চালু নেই