সাঁতার না জানায় তিন শিশুর মৃত্যু হয়েছে
ব্রাহ্মণবাড়িয়া : সাঁতার না জানার কারণেই রাজা, বাদশাহ ও সুলতানা নামে তিন শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে তাদের পরিবারের লোকজন দাবি করেন।
বুধবার দুপুর ১টায় উপজেলার চাতলপাড় ইউনিয়নের রতনপুর বেমালিয়া নদীর তীর থেকে পুলিশ নিহত তিন শিশুর লাশ উদ্ধার করেন। নিহতরা হলো- রাজা (৫), বাদশাহ (৪) ও সুলতানা (৭)। নিহতরা নাসিরনগরের চাতলপাড়ের রতনপুর এলাকার শওকত আলীর সন্তান। তাদের মা কুলসুম বেগম লেবাননে থাকেন।
নিহতের পরিবার সূত্র জানায়, শওকত আলীর বাড়ি সরাইল উপজেলার তেলীকান্দি এলাকায়। পারিবারিক অভাব আর নিজের জায়গা না থাকায় অনেকদিন ধরে তিনি নাসিরনগর এলাকায় ভাড়া থাকতেন। পরিবারের স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে ১০ মাস আগে শওকত আলীর স্ত্রী কুলসুম বেগম স্বামী সন্তানদের রেখে লেবাননে যান। স্ত্রী বিদেশ চলে যাওয়ার পর শওকত আলী তার সন্তানদের নিয়ে সিলেট এলাকায় কাজের সন্ধানে চলে যায়। সেখানে তিনি পরিবারের খরচ যোগানোর জন্য রিকশা চালাতেন। ২৫ ফেব্রয়ারি শওকত আলী তার তিন সন্তানদের নিয়ে বোনের বাড়ি নাসিরনগরের চাতলপাড় ইউনিয়নের রতনপুরে বেড়াতে আসেন। সেখানেই তিনি আবার ফেরিওয়ালার ভ্রাম্যমাণ ব্যবসা শুরু করেন। রাজা, বাদশাহ ও সুলতানা সেখানেই থাকত। মঙ্গলবার বিকেল তিনটায় বাড়ির পাশের বেমালিয়া নদীতে গোসল করতে যায় তিন শিশু। এরপর থেকে তাদের আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে সকালে এলাকাবাসী বেমালিয়া নদীর তীরে তিন শিশুর মরদেহ ভাসতে দেখে পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ নিহত তিন শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে।
নিহত তিন শিশুর ফুফু ফুলবানু বাংলামেইলকে জানায়, দুপুরে তিনজনই গোসল করার জন্য নদীতে যায়। তাদের কেউ সাঁতার জানত না। যাওয়ার পর থেকে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাদের পাওয়া যায়নি।
নিহত তিন শিশুর বাবা শওকত আলী বাংলামেইলকে জানায়, আমার সন্তানদের নিয়ে ২০ দিন আগে আমি নাসিরনগরে আসি। আমার তিন সন্তানই সাঁতার কাটতে জানত না। আমার ধারণা তারা গোসল করতে গিয়েই পানিতে তলিয়ে যায়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) শাহরিয়ার আল মামুন বাংলামেইলকে জানায়, দুপুরে এলাকাবাসী নিহত তিন শিশুর মরদেহ বেমালিয়া নদীতে ভাসতে দেখে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ নিহত তিন শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে। তবে নিহতের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। পরিবারের লোকজনের অভিযোগ পেলে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মন্তব্য চালু নেই