সরকার পদত্যাগ না করলে রেমিটেন্স বন্ধের হুমকি

বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ, র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজির আহমেদ ও পুলিশের আইজি শহীদুল হক এখন আর সরকারি কর্মচারি নন, তারা যেন আওয়ামী লীগের ক্যাডারে পরিণত হয়েছে। সরকার তাদের সন্ত্রাসী হিসাবে জনগণের সামনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। অবৈধ সরকারের এই ৩ কর্মকর্তার মাধ্যমে সরকার রাষ্ট্রের আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। বাংলাদেশের জনগণের অর্থে এবং প্রবাসি বাংলাদেশিদের অর্থে এদের বেতন দেয়া হয়। জনগণের অর্থে রিষ্টপুষ্ট হয়ে এরা জনগণের বুকে গুলি করার ঘোষণা দিয়েছে। সুতরাং সরকার এবং তার এই ৩ দলীয় কর্মকর্তা অবিলম্বে পদত্যাগ না করলে প্রবাসি বাংলাদেশিদের দেশে রেমিটেন্স না পাঠানোর আহবান জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি এবং তারেক পরিষদ আন্তর্জাতিক কেন্দ্রীয় কমিটি। নিউইয়র্ক থেকে এনা এই তথ্য জানিয়েছে।

গত ১৬ জানুয়ারি সন্ধ্যায় (নিউইয়র্ক সময়) জ্যাকসন হাইটসের একটি রেস্টুরেন্টে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি এবং তারেক পরিষদ আন্তর্জাতিক কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে অবরুদ্ধ করে রাখা এবং বিজিবি, র‌্যাব এবং পুলিশের আইজি প্রজাতন্ত্রের নিয়মনীতি ভেঙ্গে উস্কানীমূলক বক্তব্যের প্রতিবাদে ও বর্তমান সরকার বিরোধী আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। তারেক পরিষদ আন্তর্জাতিক কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা আকতার হোসেন বাদলের সভাপতিত্বে ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমানের পরিচালনায় সংবাদ সম্মেলনে অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন লং আইল্যান্ড ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ড. শওকত আলী, টেক্সাস বিএনপির সভাপতি মোহাম্মদ বশির। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মোহাম্মদ আলী, নিজামুল শাহীন, শহীদুল্লাহ পাটোয়ারি, সাইফুল ইসলাম, মোহাম্মদ আহাদ প্রমুখ।

আকতার হোসেন বাদল বলেন, পুলিশের আইজি শহীদুল হক, র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজির আহমেদ ও বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ যেন সরকারি কর্মচারি নন, তারা যেন আওয়ামী লীগের ক্যাডারে পরিণত হয়েছেন। তাদের কথাবর্তা তাই প্রমাণ করে। তারা বাংলাদেশের জনগণের অর্থেই বেতন নেন, আর তাদেরকেই গুলি করার হুমকি দেন। সুতরাং আমরা যারা প্রবাসি আছি তারা চাই না অবৈধ সরকারের এই ৩ দলীয় কর্মচারি আমাদের অর্থে রিষ্টপুষ্ট হয়ে আমাদের অত্মীয়- স্বজনকে গুলি করে হত্যা করুক।

তিনি ক্ষোভের সাথে বলেন, শেখ হাসিনা শুধু মাত্র ক্ষমতায় থাকার জন্য এদের দলীয় ক্যাডার হিসাবে ব্যবহার করছে। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, শেখ হাসিনার আর কত লাশ চাই? শেখ হাসিনার বুঝা উচিত ছিলো ১/১১ এর সময় বেগম জিয়ার সাহসী ভূমিকার কারণেই তিনি আবার বাংলাদেশে ফেরত গিয়েছিলেন। বেগম জিয়া শেখ হাসিনার মত দেশ এবং দেশের মানুষকে ফেলে নিজের জীবন নিয়ে পালিয়ে যাননি। মইন- ফখরুদ্দিনরা বেগম জিয়াকেও বিদেশে পাঠাতে চেয়েছিলো, বেগম জিয়া তখন বলেছিলেন, আমি কোথাও যাবো না, আমার দেশ এবং দেশের মানুষের পাশে থাকবো। মরলে নিজ দেশের মাটিতেই মরবো। বেগম জিয়ার সেই ভূমিকার কারণেই শেখ হাসিনা বাংলাদেশে ফেরত যান এবং মইন- ফখরুদ্দিনের সাথে সমঝোতা করে আজকে প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারির ভোটার ও প্রার্থীবিহীন নির্বাচন করে শেখ হাসিনা এখন ক্ষমতায়। শেখ হাসিনার পতন না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।

মোহাম্মদ বশির বলেন, এতদিন রাজনীতিবিদদের মুখে রাজনীতির কথা শুনেছি কিন্তু গত কয়েক দিন থেকে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারিদের মুখে রাজনৈতিক বক্তব্য শুনছি। তারা মানুষকে গুলি করে মারা হুমকি দিচ্ছে, বিএনপিকে সন্ত্রাসী দল হিসাবে আখ্যায়িত করছে, আরেকজন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করছেন। মনে হচ্ছে এরা সরকারি কর্মচারি নয়, আওয়ামী লীগের মস্ত বড় নেতা। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, যাদের অর্থে আপনাদের বেতন চলে, সংসার চলে, তাদের গুলি করার ঘোষণা দেন কোন সাহসে। তিনি শেখ হাসিনা সরকারের পতন এবং এই তিন ক্যাডার অবিলম্বে পদত্যাগ না করলে প্রবাসিদের রেমিটেন্স না পাঠানোর আহবান জানান। তিনি আরো বলেন, স্বাধীনতার ৪৩ বছর পর আমাদের দেশ, মানুষ ও গণতন্ত্র রক্ষার যুদ্ধ শুরু হয়েছে। বাকশাল থেকে মুক্তির যুদ্ধ শুরু হয়েছে। এই যুদ্ধে অবশ্যই আমরা জয়লাভ করবো। তিনি বলেন, আমি যতদূর জানি শেখ হাসিনার পতন এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আকতার হোসেন বাদল এবং মোহাম্মদ বশির আমেরিকার কংগ্রেসম্যানের স্বাক্ষর জালকারী বিএনপির সাবেক দুই কর্মকর্তা ডা. মজিবুর রহমান মজুমদার এবং জাহিদ এফ সর্দার সাদীর সমালোচনা করে বলেন, তাদের কারণে দেশ এবং প্রবাসিদের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে। জনাব বাদল বলেন, এই ভাবমূর্তি পুনর্গঠনে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। মোহাম্মদ বশির বলেন, বিএনপিতে কোন ক্রিমিনালের স্থান নেই। তাদের অব্যাহতি দেয়ার মাধ্যমেই তা প্রমাণ হয়েছে।

ড. শওকত আলী বলেন, শেখ হাসিনার কারণে দেশ আজ গৃহযুদ্ধের দিকে ধাবিত হচ্ছে। আর এর জন্য শেখ হাসিনাকেই সব দায়দায়িত্ব নিতে হবে। আমাদের সময়



মন্তব্য চালু নেই