‘সরকার অর্থের অপচয় করছে’

বর্তমান সংসদ সদস্যদের ‘অবৈধ’ আখ্যা দিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিয়ে অর্থ অপচয় করছেন এসব সাংসদ।’

তিনি বলেন, ‘প্রহসনের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যারা অবৈধ সংসদ সদস্য হয়েছেন, রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে এত অর্থ ব্যয় করে তাদের জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগ দেওয়ার কোনো কারণ ছিল না। এর মাধ্যমে অর্থের অপচয় হয়েছে। এটি অবৈধ সরকারের ক্ষমতার যথেচ্ছ ব্যবহারের নিদর্শন।’

সোমবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব।

 

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৬৯তম অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্কে গেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১৮০ সদস্যের প্রতিনিধি দল নিয়ে রোববার রাত নয়টা ৪৫ মিনিটে শাহজালাল  আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে নিউইয়র্কের উদ্দেশে যাত্রা করেন তিনি।

 

প্রধানমন্ত্রীর বহরে ১৮০ জন সদস্য থাকায়র সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অতীতে কখনো এতো বড় বহর হয়নি। অবৈধ সরকারের এ বহরে নয় মন্ত্রী তাদের স্ত্রীদেরও সঙ্গে নিয়েছেন। সরকারের আত্মীয়-স্বজনরা সফরসঙ্গী হয়েছেন। এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’

 

প্রধানমন্ত্রীর বহরে ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদধারী সচিবও রয়েছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।

 

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, ‘পঞ্চদশ ও ষোড়শ সংশোধনীর মাধ্যমে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠার চূড়ান্ত প্রক্রিয়া শেষ করেছে সরকার। অথচ পঞ্চদশ সংশোধনীতেই তারা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল বিধান বহাল রেখেছে। এটি সম্পর্কে কোনো মহলে বিতর্ক না থাকলেও শুধুমাত্র ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে সরকার ষোড়শ সংশোধনী এনেছে। এক্ষেত্রে বিজ্ঞ আইনজীবীরা এর বিরুদ্ধে অভিমত ব্যক্ত করলেও তাতে কর্ণপাত করেনি।’

 

বিএনপি নেততৃত্বাধীন জোট এর প্রতিবাদে হরতাল দিতে বাধ্য হয়েছে বলে উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল।

 

বিএনপির এ মূখপাত্র বলেন, ‘সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর মাধ্যমে বিচারপতিদের অপসারণ ক্ষমতা সংসদের হাতে দেওয়ার বিষয়টি জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে। হরতালে স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মাধ্যমে এটি প্রমাণ হয়েছে।’
 

অভিশংসন আইন বাতিল করে দ্রুত সব দলের অংশগ্রহণে একটি প্রতিনিধিত্বমূলক নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

 

বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের ডাকা শান্তিপূর্ণ হরতালে সরকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দিয়ে জোটের নেতা-কর্মীদের ওপর নির্যাতন করেছে বলে অভিযোগ করেন মির্জা আলমগীর।

 

তিনি দাবি করেন, ১২ ঘণ্টার হরতালে ২০ দলীয় জোটের ৩৫৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া পুলিশের গুলি ও লাঠিচার্জে ৩২ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।

 

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব আটক নেতাকর্মীদের মুক্তি এবং যেসব পুলিশ সদস্য গুলি করেছে তাদের শাস্তি দাবি করেন।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, যুগ্ম-মহাসচিব মো. শাহজাহান, সাম্যবাদী দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব সাঈদ আহমেদ, ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সালাম, সহ-দফতর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনি, আসাদুল করিম শাহীন, শামীমুর রহমান শামীম, নির্বাহী কমিটির সদস্য বেলাল আহমেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।



মন্তব্য চালু নেই