সরকারি প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসা নেয়া ৩৭ শতাংশ খানা দুর্নীতির শিকার

সরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসা গ্রহণকারী খানাগুলোর ৩৭ দশমিক ৫ শতাংশ কোনো না কোনো সেবা নিতে গিয়ে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির শিকার হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে পেশেন্ট ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন আয়োজিত দরিদ্র রোগীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও চিকিৎসার্থে সহায়তা বিষয়ক এক আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।

উল্লেখযোগ্য অনিয়ম ও দুর্নীতির মধ্যে রয়েছে, প্রয়োজনে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য সহকারী না পাওয়া, দালাল কর্তৃক হয়রানির শিকার, বেসরকারি ক্লিনিক/ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যাওয়ার পরামর্শ, চিকিৎসার সময়ে ডাক্তারের কক্ষে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধির উপস্থিতি প্রভৃতি। এছাড়া সেবা ট্রলি, হুইল চেয়ার ব্যবহার, অপারেশন সেবা, প্রসূতি সেবা, পরীক্ষা-নিরীক্ষা, শয্যা পাওয়াসহ বিভিন্ন সেবা পেতে ঘুষ বা নিয়ম বহির্ভূত অর্থ আদায় করা হচ্ছে।

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশের মোট চিকিৎসকদের ৬১ দশমিক ৪ শতাংশ বেসরকারি চিকিৎসাসেবা কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত। সর্বশেষ ২০১৫ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত বাংলাদেশে নিবন্ধিত বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও রোগ নির্ণয় কেন্দ্রের সংখ্যা ১৩ হাজার ৩৪১টি, যার মধ্যে হাসপাতাল ও ক্লিনিকের সংখ্যা ৪ হাজার ২৮০ এবং রোগ নির্ণয় কেন্দ্রের সংখ্যা ৯ হাজার ৬১টি। এসব প্রতিষ্ঠানে গাইনি ও শিশু স্বাস্থ্যসেবা, মেডিসিন, রোগ নির্ণয় ও বিশেষায়িত সেবা দেয়া হয়।

তিনি বলেন, ‘সরকার থেকে স্বাস্থ্যসেবায় প্রতিবছর জনপ্রতি ৩৯০ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। এটা ২ হাজার ৬৫২ টাকা হওয়া উচিৎ। স্বাস্থ্য সেবার ব্যয় ক্রমাগত বাড়ছে, যা ১৫ বছর আগের তুলনায় প্রায় ৪ গুণ বেশি। বাংলাদেশের মানুষ খানাপ্রতি গড় আয়ের কমপক্ষে ২০ শতাংশ স্বাস্থ্য সেবার জন্য ব্যয় করে, যা দারিদ্র সীমার নীচের খানার ক্ষেত্রে ৩০ শতাংশের বেশি’।

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, পৃথিবীর যে ১০টি দেশে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু মৃত্যুর সংখ্যা বেশি বাংলাদেশ তার একটি। বাংলাদেশে শিশু মৃত্যুর প্রধান কারণ- সময়ের আগে জন্মগ্রহণের জটিলতা (২০ শতাংশ), নিউমোনিয়া (১৫ শতাংশ), জন্মকালীন বা প্রসবকালে নানা জটিলতায় (১৫ শতাংশ), সেপসিস ও মেনিনজাইটিস (১৪ শতাংশ), জন্মগত ত্রুটি (৯ শতাংশ), ডায়রিয়া (৬ শতাংশ) এবং নানা আঘাতজনিত কারণে পাঁচ বছর বয়স পূর্ণ হওয়ার আগে (৬ শতাংশ)।

প্রফেসর ডা. কাজী শহীদুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএসএমএমইউর মেডিসিন অনুষদের ডিন প্রফেসর এবিএম আব্দুল্লাহ, অ্যাডভোকেট ড. মো. ইউনুস আলী আকন্দ, বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট এলিনা খান, সাংবাদিক আশিস সৈকত প্রমুখ।



মন্তব্য চালু নেই