শেখ হাসিনার বেয়াইয়ের বিরুদ্ধে কমিটি
সম্পত্তি দখল : মন্ত্রী মোশাররফের গোপন খবর ফাঁস
জোর করে সংখ্যালঘুদের সম্পত্তি দখল করার আভিযোগ খতিয়ে দেখতে বাংলাদেশ সরকার তদন্ত কমিটি গঠন করেছ। কিন্তু স্পর্শকাতর বিষয় এই যে, অভিযোগটি উঠেছে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘বেয়াই’ বর্তমান পল্লী উন্নয়ন সমবায় মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকায় এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। শনিবার প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অভিযোগ খতিয়ে দেখতে সরকারের পক্ষ থেকে যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে তা নিতান্তই লোক দেখানো। আর তা নিয়ে চলছে সমালোচনা।
ফরিদপুরের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মো. আবদুর রশিদের বরাত দিয়ে আনন্দবাজার পত্রিকা লেখে, মন্ত্রীর বিরুদ্ধে সংখ্যালঘুদের সম্পত্তি দখলের যে অভিযোগ করেছে, তার সত্যতা নিরুপণের জন্য আমলা ও পুলিশ কর্তাদের নিয়ে তিন সদস্যের একটি কমিটি তৈরি করা হয়েছে। পাঁচ দিনের মধ্যে এই কমিটিকে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।
তবে আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অভিযোগকারী সংগঠনের এক নেতার কথায়, ফরিদপুর জেলা প্রশাসনের সকলেই মোশারফের নিজের লোক। মন্ত্রীকে নিষ্কলুষ প্রমাণ করতেই এই কমিটি গড়া হয়েছে।
হিন্দু বৌদ্ধ ক্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত সম্প্রতি অভিযোগ করেন, ফরিদপুরে জোর করে সংখ্যালঘুদের সম্পত্তি দখল করছেন এলাকার সাংসদ এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রী খন্দকার মোশারফের দলবল।
সাংবাদিক প্রবীর সিকদারের গ্রেফতার প্রসঙ্গ তুলে ধরে আনন্দবাজার লেখে, বিশিষ্ট সাংবাদিক-সম্পাদক প্রবীর সিকদার মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ফেসবুকে অভিযোগ জানানোয় তথ্যপ্রযুক্তি আইনে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। দেশজুরে প্রতিবাদের মুখে সরকার তাকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়।
ভারতীয় পত্রিকা আনন্দবাজার তার প্রতিবেদনে উল্লেখ করে, এ মাসের ৬ তারিখে ঢাকায় সাংবাদিক সম্মেলন করে হিন্দু বৌদ্ধ ক্রিস্টান ঐক্য পরিষদ অভিযোগ করে, শাসক দলের কিছু মন্ত্রী-সাংসদের নেতৃত্বে সংখ্যালঘুদের ভয় দেখিয়ে দেশছাড়া করে তাদের সম্পত্তি দখল করা চলছে।
এই তালিকায় শেখ হাসিনার বেয়াই খন্দকার মোশারফ ছাড়া সংসদের হুইপ মাহবুব আরা গিনি, ঠাকুরগাঁওয়ের সাংসদ দবিরুল ইসলাম ও পিরোজপুরের সাংসদ এম এ আউয়ালের নাম রয়েছে। দু’জনেই শাসক দল আওয়ামী লিগের সাংসদ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, হাসিনার বেয়াই খন্দকার মোশারফ ফরিদপুর শহরে প্রায় ৮ বিঘা জমি-সহ সাবেক জমিদার বাড়িটি মালিকদের ভয় দেখিয়ে দখল করেছেন। বাড়িটির বাজারমূল্য অন্তত ৭০ কোটি টাকা হলেও, ২ কোটি টাকায় বিক্রির জন্য মালিকের ওপর চাপ দেওয়া হয়। তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে বেশ কয়েক দিন আটকেও রাখা হয়।
জমি ও বাড়ির মালিকরা ভারতে চলে গেলেও প্রাণের ভয়ে মন্ত্রীর বিরুদ্ধে কোনও কথা বলার সাহস দেখাচ্ছেন না। তবে মন্ত্রী মোশারফ অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
মন্তব্য চালু নেই