সমাবেশের ‘ফাঁদে’ পা দিচ্ছে না বিএনপি!

রাজধানী ঢাকায় ‘আপাতত’ সমাবেশ করার কোনও ইচ্ছে নেই বিএনপির। দলটির নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটের পক্ষ থেকে এজন্য সমাবেশের অনুমতি চেয়ে শিগগিরই ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাছে কোনও আবেদন করা হচ্ছে না। খোদ বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া সমাবেশ বিষয়ে কোনও কথা না বলতে দলের দায়িত্বশীল জ্যেষ্ঠ নেতাদের নির্দেশ দিয়েছেন। বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক সূত্র জানিয়েছে এ তথ্য।

সূত্রমতে, শর্ত মানলে বিএনপিকে ঢাকায় সমাবেশ করতে দেওয়া হতে পারে, হঠাৎ করে সরকারপক্ষ থেকে এমন আভাস দেওয়ার পর বিষয়টিকে সন্দেহের চোখে দেখছেন খালেদা জিয়া। সমাবেশের সুযোগ দেওয়ার নামে সরকার বিএনপির জন্য ‘নতুন ফাঁদ’ তৈরি করেছে বলে মনে করছেন তিনি। দলের দায়িত্বশীল নেতাদের তিনি স্পষ্ট বলেছেন, ‘ঢাকায় সমাবেশ করার জন্য সরকার নানা কৌশলে বিএনপিকে উৎসাহিত করার চেষ্টা করবে। আন্দোলনের ‘এক্্িরটপয়েন্ট’ হিসেবে বিএনপিকে ঢাকায় সমাবেশ করতে দেওয়ার কথা বলা হলেও এ ‘এক্সিটপয়েন্ট’র প্রয়োজনীয়তা নেই। বরং এখনই ঢাকায় সমাবেশের কথা বলা হলে চলমান অবরোধ কর্মসূচি চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। যার মাশুল গুণতে হবে সবাইকে।’

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির এক সদস্য এই প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে খালেদা জিয়ার এ নির্দেশের কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, সমাবেশ নয়, খালেদা জিয়া এখন চূড়ান্ত আন্দোলনের পথে হাঁটছেন। সরকার মধ্যবর্তী নির্বাচনের ঘোষণা দিয়ে ২০-দলীয় জোটের ৭ দফা দাবি বিষয়ে কার্যকর: সংলাপ আাহ্বান করলেই কেবল আন্দোলনের ‘এক্সিটপয়েন্ট’ নিয়ে ভাববে বিএনপি। গুলশান কার্যালয়ে অবরুদ্ধ খালেদা জিয়া দায়িত্বশীলদের এমন কথা জানিয়ে দিয়েছেন স্পষ্ট করে।

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. (অব.) মাহাবুবুর রহমান এই প্রতিবেদককে বলেছেন, নতুন নির্বাচন নিয়ে সংলাপই এখন একমাত্র সমাধান। বিএনপি জনগণের দল। সারা দেশে আন্দোলনের নিয়ন্ত্রণ এখন জনগণের হাতে। নতুন নির্বাচনের জন্য জনগণ উন্মুখ। জনগণের আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছে বিএনপি। সরকার সংলাপে না বসলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ অসম্ভব হয়ে উঠতে পারে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চূড়ান্ত আন্দোলন শুরু হয়ে গেছে। সারাদেশে বিরতিহীন সর্বাত্মক অবরোধ চলছে। এই অবস্থায় ঢাকায় কোনও সমাবেশ করার আপাতত ইচ্ছে বিএনপির নেই। উল্লেখ এর আগে বিএনপি নেতারা ঢাকায় সমাবেশের অনুমতির আবেদন করতে গেলে পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা কেউ অফিসে উপস্থিত ছিলেন না এমন ঘটনাও ঘটেছে।

বিএনপির একাধিক সূত্র জানিয়েছে, আপাতত ঢাকায় সমাবেশের চিন্তা বাদ দিয়ে প্রতিটি ওয়ার্ডে-ওয়ার্ডে আন্দোলন তীব্র করার নির্দেশনা দিয়েছেন খালেদা জিয়া। বিশেষ করে আগামী ২৫ জানুয়ারি মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার ভারত সফর শুরু হওয়ার আগেই ঢাকার রাজপথে আন্দোলনের উত্তাপ ছড়িয়ে দিতে বলা হয়েছে দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের। এছাড়া আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত অবরোধের পাশাপাশি জেলা ও বিভাগে স্থানীয়ভাবে হরতাল পালনের নির্দেশনা রয়েছে। কোনও ভাবেই সরকারের কোনও ‘ফাঁদে’ পা না দেওয়ার জন্য দায়িত্বশীল বিএনপি নেতাদের সর্বোচ্চ সতর্ক থাকারও নির্দেশ দিয়েছেন খালেদা জিয়া।



মন্তব্য চালু নেই