সবাই বাতিল নোট বদল করলেও এই মানুষটি সযত্নে কাছে রেখে দিচ্ছেন

বাতিল হয়ে গেছে। এখন হাজারের নোট বাতিলের দলে। কেমন একটা সহমর্মিতা জাগছে। বাতিল হাজারে সঙ্গে একাত্ম বোধ করছেন ফুলবাগানের নব্বই পেরানো পাঁচু গোপাল মুখার্জি। সবাই যখন হাজারের নোট বদলাতে দৌড়াচ্ছেন। তিন সেই নোটকে সযত্নে রেখে দিচ্ছেন। ফেলে আসা জীবনের স্মৃতির মত করেই আঁকড়ে ধরছেন বাতিল হাজারের নোটকে।

জানলার ওপার দিয়ে এখন পৃথিবীকে দেখা। ‍ মাঝে মাঝে ঝিম ধরে যায় চোখে। খালি চেয়ে থাকা। তাকিয়ে থাকতে থাকতে দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসে। মনে পড়ে যায় ফেলে আসা দিন গুলোর কথা। এখন সাতানব্বই। কত কী যে দেখা হল জীবনে ইয়াত্তা নেই।

মনে পড়ে যায় সে সময়কার কথা যখন পরাধীন ছিল দেশ। এক টাকারই কী গুমোর ছিল। ষোল আনা বলে কথা। কালে কালে বদল। সাহেবসুবোদের সেই দিনের এক টাকার জায়গা নিল একশ টাকা। কত নাম হারা পাত্তি, গন্ধি ছাপ। সে সব এখন ধূসর অতীত। হালফিলের হাজারের নোট, সেওতো আজ ইতিহাস। হাতের মুঠোয় থাকা ষোল আনায় যে আত্মবিশ্বাস পাওয়া যেত, হাজারের নোট ছিল যেন তেমনই খানিকটা। বাল্যের প্রেমের মত হাজারের নোট এখন শুধুই দীর্ঘশ্বাস।

তাই হাতছাড়া করতে চাননা পাঁচুগোপাল মুখার্জি। এক পয়সা, দুপয়সা, তিন পয়সা, পাঁচ পয়সা জীবনের সেরা সময়ে কী দাপট ছিল সেই সব আনা, চার আনার। এখন সব অচল পয়সা। ধরে রাখা যায়নি কিছুই। এখন মনে হয় যদি রাখা যেত।

থাক যা যাওয়ার তা গেছে—পশ্চিম দিগন্তের এই হাতছানি দেওয়া সময়ে আর কিছু হাতছাড়া করতে ইচ্ছে করেনা। তা হোক না হাজারের নোট।



মন্তব্য চালু নেই