সবজিতে কীটনাশক, তেলে ভেজাল, নুডলসে নেই!

বাজারের বিভিন্ন সবজিতে ব্যাপক মাত্রায় কীটনাশক ধরা পড়েছে জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের ফুড সেফটি ল্যাবরেটরির পরীক্ষায়। ভোজ্যতেলের ৪০ শতাংশ নমুনায় ভেজাল ধরা পড়েছে। তবে সাম্প্রতিক পরীক্ষায় নুডলসে ক্ষতিকারক কোনো কিছু পাওয়া যায়নি।

অনেকেই মনে করেন, মাঠের সবজিতে যতই কীটনাশক দেওয়া হোক না কেন, তা পাইকারি বাজার হয়ে খুচরা বাজারে এলে ক্ষতিকর প্রভাব থাকে না। কিন্তু এ ধারণা সঠিক নয় বলে প্রমাণ করেছে ন্যাশনাল ফুড সেফটি ল্যাবরেটরির পরীক্ষা। প্রতিষ্ঠানটির জানুয়ারি মাসের পরীক্ষায় ক্ষতিকর মাত্রায় কীটনাশক যেসব সবজিতে ধরা পড়েছে, তার ৪০ শতাংশ মাঠের সবজি, ৩২ শতাংশ পাইকারি বাজারের সবজি ও ২৮ শতাংশ খুচরা বাজারের সবজি।

জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক ডা. এ কে এম জাফর উল্যাহ বলেন, ‘কীটনাশক ব্যবহারের মাত্রার বিষয়ে কৃষকদের সচেতন করতে হবে। তাহলে পাইকারি ও খুচরা বাজারের সবজিতে এত বেশি মাত্রায় কীটনাশক পাওয়া যাবে না।’

ফুড সেফটি ল্যাবরেটরির তথ্যমতে, শস্যে কীটনাশক দেওয়ার পর অনন্ত সাত দিন সময় নেওয়া প্রয়োজন। এতে ওই সময়ের মধ্যে কীটনাশকের প্রভাব দূর হয়ে যায়। কিন্তু কীটনাশক দেওয়ার পর সাত দিন অপেক্ষা না করে শস্য যদি বাজারে সরবরাহ করা হয়, তবে বাজারের শস্যে অবশ্যই কীটনাশক ব্যাপক মাত্রায় থেকে যাবে।

ফুড সেফটি ল্যাবরেটরির পরীক্ষায় খুচরা বাজারের লাল শাকে কীটনাশক পাওয়া গেছে সহনশীল মাত্রার চেয়ে ৩১ গুণ বেশি; ফুলকপিতে ১০ গুণ বেশি, শিমে ১০ গুণ বেশি ও কাঁচামরিচে সহনশীল মাত্রার চেয়ে ৫ গুণ বেশি।

রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘এই কীটনাশকের প্রধান ভুক্তভোগী হয় শিশুরা। সব ক্ষেত্রে মৃত্যু না হলেও ক্ষতি হয় অনেক। এতে মানবদেহের প্রধান প্রধান অঙ্গ, যেমন—লিভার, কিডনির ক্ষতি হয়।’

জানুয়ারি মাসে সবজির পাশাপাশি ভোজ্যতেলের ওপর পরীক্ষা চালানো হয়েছে ফুড সেফটি ল্যাবরেটরিতে। ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত পরীক্ষার ফলে দেখা যায়, বাজারের বিক্রি হওয়া বিভিন্ন ব্র্যান্ডের তেল ও খোলা তেলের প্রায় ৪০ শতাংশ নমুনায় এসিডির পরিমাণ সহনশীল মাত্রার চেয়ে বেশি।

ডা. এ কে এম জাফর উল্যাহ বলেন, ‘দেশের ব্যবসায়ীরা অধিক মুনাফার জন্য উচ্চমানের তেলের সঙ্গে নিম্নমানের তেল মেশান। এই মিশ্রণের কারণে তেলে এসিডিটি বেশি থাকছে। আর এসিডিটির কারণে ভুক্তভোগীদের অদূর ভবিষ্যতে আলসারসহ বিভিন্ন ক্ষতিকর রোগ হতে পারে।’

এদিকে, একই সময়ে পরিচালিত এক পরীক্ষায় দেশি-বিদেশি নুডলসে ক্ষতিকর মাত্রায় সিসা না থাকায় পণ্যটি নিরাপদ বলে মনে করছে ফুড সেফটি ল্যাবরেটরি।

-এনটিভি



মন্তব্য চালু নেই