সকালে বিনম্র শ্রদ্ধা, বিকেলে অবমাননা
একুশে ফেব্রুয়ারি মহান আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধায় ফুলে ফুলে ভরে ওঠে দেশ-বিদেশের প্রতিটি শহীদ মিনার।
ঠাকুরগাঁওয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারেও দেখা গেছে একই চিত্র। অগণিত মানুষ ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। তবে বিকেলে শহীদ মিনারে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি অবমাননা করলো অনেকেই।
অপরদিকে একুশে ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার বিকেলে ঠাকুরগাঁও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জুতা পায়ে উঠতে দেখা গেছে অনেককেই। বিকেলের মধ্যে সেখানকার সব ফুল উধাও হয়ে গেছে। ফুলের কোনো বেদী না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সচেতন মহল।
শহীদ বেদীতে জুতা পায়ে উঠা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক যুবক জানান, শহীদদের অবমাননা করা ঠিক হয়নি। বেশির ভাগ লোক যখন জুতা পায়ে উঠেছে মিনারে। তাই আমি উঠেছে।
এই বিষয়ে জানতে ভাষা সৈনিক ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক আকবর হোসেন বলেন, সকালেই ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা, বিকেলেই অবমাননা। এটা একটি বড় অপরাধ। প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ থাকবে আর স্মৃতিসৌধের উপর জুতা পড়ে উঠলে যেন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। অনেক রক্তের বিনিময়ে আমরা এই ভাষা পেয়েছি। প্রতিটি অভিভাবক যদি সচেতন হয় তাহলে তাদের সন্তান কখনো স্মৃতিসৌধ বা শহীদ মিনারের জুতা পায়ে উঠে অবমাননা করতে পারবে না।
শিক্ষাবিদ মনতোষ কুমার দে জানান, শহীদদেরকে অবমাননা করা মানে একটা জাতিকে অবমাননা করা। ভাষা আন্দোলনের বিষয়ে সবাইকে আগে জানতে হবে। শহীদদের অবমাননা করা কারো অধিকার নেই। একদিনের জন্য শহীদদের শ্রদ্ধা আর বাকিদিন অবমাননা করা কারো ঠিক হবে না। আসুন আমরা সকলে মিলে প্রতিদিনই শহীদদের শ্রদ্ধা নিবেদন করি। নিজে সচেতন হই অন্যকে সচেতন করি।
এ ব্যাপারে ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক আব্দুল আওয়াল জানান, জুতা পায়ে শহীদ বেদীতে উঠা কষ্টদায়ক। নতুন প্রজন্মকে একুশের চেতনায় লালন করতে হবে। তাহলেই সচেতন হবে সকলেই। এর পরে ঠাকুরগাঁওয়ে কোনো স্মৃতি সৌধে জুতা পায়ে বা অবমাননা করলে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য চালু নেই