সংলাপে বসতে ফের জাতিসংঘের তাগিদ

বাংলাদেশের সুশীল সমাজের পাশাপাশি জাতিসংঘ বিরোধী দলের সঙ্গে সংলাপের আহবান জানিয়ে আসছে। নিয়মিত বিফ্রিংয়ে আবারো বিরোধীদের সঙ্গে গঠনমূলক সংলাপের তাগিদ দেয়া হয়েছে।

শুক্রবার (বাংলাদেশ সময় শনিবার) জাতিসংঘের প্রাত্যহিক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিক মাথ্যু রাসেল লি’র জবাবে মহাসচিব বান কি মুনের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক এ কথা বলেন।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠক করা, তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাস ও অন্যান্য অভিযোগ প্রত্যাহারের বিষয়েও আলোচিত হয় সেখানে। আলোচনায় উঠে আসে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশি সেনা সদস্যদের প্রসঙ্গ।

জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজাররিকের কাছে বিরোধী দল বলতে কাদের বোঝানো হচ্ছে এমন প্রশ্ন করা হয়।

জবাবে স্টিফেন বলেন, যারা ক্ষমতার বাইরে আছে তারাই বিরোধী দল। তাদের সঙ্গে গঠনমূলক সংলাপে যেতে হবে।

এদিকে চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট সমাধানের কার্যকর পথ খোঁজার তাগিদ দিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন। স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের স্বার্থে বিরোধীদের সঙ্গে গঠনমূলক সংলাপে বসারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলীর সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ আহ্বান জানান। জাতিসংঘ মহাসচিবের ওয়েবসাইটে দেয়া এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

অন্যদিকে জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজাররিক বলেছেন, জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুনের হয়ে বাংলাদেশ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন সহকারী মহাসচিব অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকো। প্রয়োজন অনুযায়ী তিনি যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন। বৃহস্পতিবার নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।

স্টিফেন ডুজাররিক প্রশ্নোত্তর পর্বেই জানান, আগের দিন তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যে যোগাযোগ নিয়ে।

ডুজাররিক বলেন, আপনাদের বলতে পারি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়াকে সম্প্রতি চিঠি দিয়েছেন মহাসচিব বান কি মুন। তাতে বলা হয়েছে, মহাসচিবের হয়ে বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতিতে কাজ করছেন সহকারী মহাসচিব অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকো।

এখানে ওই ব্রিফিং তুলে ধরা হলো :
প্রশ্ন: আপনাকে ধন্যবাদ স্টিফেন। আমি মুশফিকুল ফজল। আপনি যেমনটা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে চিঠি লিখেছেন মহাসচিব। ওই চিঠি পাওয়ার পর আমরা বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের প্রতিক্রিয়া দেখেছি।

মহাসচিব বান কি মুন যে উদ্যোগ নিয়েছেন তাকে স্বাগত জানিয়েছে তারা। অন্যদিকে সরকার পক্ষ যেকোন ধরনের সংলাপের প্রসঙ্গ একেবারে প্রত্যাখ্যান করেছে। প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা বলেছেন, সংলাপের প্রশ্নই আসে না। জাতিসংঘ রুটিন চিঠি পাঠিয়েছে।

মহাসচিব বিভিন্ন সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি পাঠান। সংলাপ বা এ রকম কোন ঘটনাই এবার ঘটবে না। অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকোকে বিরোধীদের সঙ্গে সমস্যা সমাধানের জন্য কোন সংলাপের বা অন্য কোন উদ্যোগ নেয়ার দায়িত্ব দেয়া হয়নি।

পররাষ্ট্রবিষয়ক প্রতিমন্ত্রীও সংলাপের আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছেন। তাহলে এ ইস্যুতে আপনাদের অবস্থান কি?
উত্তর: আমরা এ বিষয়ে আগেই বলেছি, জাতিসংঘ মহাসচিব বাংলাদেশের রাজনৈতিক সহিংসতায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। অস্কার ফার্নান্দেজকে মহাসচিবের পক্ষে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তিনি পরিস্থিতির ওপর দৃষ্টি রাখছেন এবং প্রয়োজনে যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন।

এদিকে জাতিসংঘ মহাসচিবের ওয়েবাসাইটে দেয়া বিবৃতিতে মান কি মুনের সঙ্গে এ এইচ মাহমুদ আলীর বৈঠকের ব্যাপারে আরো বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ৫ জানুয়ারি শুরু হওয়া রাজনৈতিক সহিংসতা এবং প্রাণহানিতে জাতিসংঘের মহাসচিব উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি শান্তিরক্ষী মিশনে ভূমিকার জন্য বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানান।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, বিএনপি-জামায়াত জোটের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড থেকে নিরীহ জনগণের রক্ষা এবং মানবাধিকার রক্ষায় কাজ করছে সরকার। বৈঠকে জাতিসংঘ মহাসচিবকে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী।



মন্তব্য চালু নেই