ক্যাব যুব গ্রুপ এর কমিটি গঠন

সংগঠিত যুব সমাজই খাদ্যে ভেজাল, ফরমালিন ও ভোক্তাদের হয়রানি বিরুদ্ধে রুখবে

যুব সমাজকে একশ্রেনীর মানুষ বিভ্রান্ত করে দেশ ও জাতিগঠন মুলক কাজে নিয়োজিত করার কাজের চেয়ে নিজের স্বার্থ উদ্ধারে কাজে লাগিয়ে জাতির সম্ভাবনাকে বাধাগ্রস্থ করেছে। ফলে যুব সমাজ এখন মাদাকাস্ত, খুন, সন্ত্রাস, রাহাজানি, চাঁদাবাজিসহ রাজনৈতিক ক্ষমতা দখলের হাতিয়ার বানিয়েছেন।

দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামসহ যে কোন আন্দোলন, সংগ্রামে এদেশের যুব সমাজের সাহসী ভুমিকা সর্বজনসমাদ্রিত। তাই যুব সমাজকে দেশ ও জাতিগঠনমুলক কাজের পাশাপাশি নকল, ভেজাল, গ্রাহক হয়রানি, প্রতারনা, খাদ্যে ভেজাল, মাছ মাংশে ফরমালিন মিশ্রণ এবং ক্যামিকেল দিয়ে ফলমুল পাকানো বন্ধে সামাজিক আন্দোলনে সম্পৃক্ত করা গেলে জাতির সম্ভাবনার নতুন দুয়ার উন্মোচিত হবে। আর সংগঠিত যুব সমাজই তখন রুখবে খাদ্যে ভেজাল, মাছ মাংশে ফরমালিন মিশ্রণ, নকল ভেজাল এবং ক্যামিকেল দিয়ে ফলমুল পাকানোসহ মানব বিধ্বংসী কর্মকান্ড। কারন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার কারনে বর্তমানে দেশের অধিকাংশ মানুষই এখন স্বাস্থ্যকর খাবার, নিরাপদ খাদ্য সম্পর্কে অনেক বেশী সচেতন। তবে খাদ্যে ভেজালকারী ও অসাধু ব্যবসায়ীরা যেভাবে সংগঠিত ও শক্তিশালী সিন্ডিকেট সেভাবে ভোক্তারা সংগঠিত নয় বিধায় এ সমস্ত ব্যবসায়ীরা মানুষকে জিম্মি করে জনগনের পকেট কাটছে।

এখন তরুন প্রজন্ম বর্তমান সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রযুক্তির মাধ্যমে খাদ্যে ভেজাল ও নকলের ঘটনাগুলি অতিদ্রুত তাদের হাতে সহজেই ধরা পড়ে যাচ্ছে। তাই এখন সময় এসেছে জেগে উঠার এবং তৃনমুল পর্যায়সহ সকল স্তরে নকল, ভেজালের বিরুদ্ধে কঠিন প্রতিরোধ ও সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা। আর তাহলেই অকালে ক্যান্সার, কিডনী বিকল, স্থুল স্বাস্থ্য, হ্দৃরোগ, মুত্রনালি ও পাকিস্থলীর পীড়াসহ মানব ঘাতক রোগ থেকে জাতি রক্ষা পাবে।

১৬ এপ্রিল নগরীর ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ে ক্যাব যুব গ্রুপ এর কমিটি গঠন উপলক্ষে মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন বক্তাগন উপরোক্ত মন্তব্য করেন। ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এস এম নাজের হোসাইনের সভাপতিত্বে এবং যুব সংগঠক চৌধুরী কে এন এম রিয়াদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় আলোচনায় অংশনেন ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সংগঠক জহুরুল ইসলাম, যুব নেতা অ্যাডভোকেট জামাল হোসেন, আনসারুল করিম, ক্যাব চট্টগ্রাম মহানগরের যুগ্ন সম্পাদক জানে আলম প্রমুখ।

সভায় বক্তাগন বলেন ভোক্তা অধিকারকে অবহেলা ও অবজ্ঞা করার কারনে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অনিয়মগুলি বৃহৎ দুনীতিতে মহিরুহ হিসাবে আবির্ভুত হচ্ছে। ভোক্তা হিসাবে সাধারন জনগনকে সচেতন করা, সংগঠিত করে ভেজাল, ফরমালিন মিশ্রন, ওজনে কম দেয়া, পণ্য ও সেবা সার্ভিসের অব্যবস্থাপনা, ভোগান্তি ও হয়রানি লাগবে কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহনের জন্য ভোক্তা হিসাবে সাধারন জনগনকেই সর্বত্রই প্রতিবাদী হতে হবে। কারন রাজনৈতিক দল যারা জনগনের জন্য রাজনীতি করেন বলে দাবী করেন তারা ক্ষমতায় গেলে জনগনের কথা ভুলে যান আর বিরোধী দলে থাকলে শুধু ক্ষমতায় আরোহন ছাড়া অন্য জিকির থাকে না।

ক্যাব এর ভেজাল বিরোধী আন্দোলন দেশ ও জাতিকে বাঁচানোর আন্দোলন। তাই একজন সচেতন নাগরিক হিসাবে দল মত ও বিশ্বাসের উর্ধ্বে উঠে নিরব ঘাতক খাদ্যে ভেজাল, নকল ও ওজনে কারচুপির বিরুদ্ধে তৃনমুল পর্যায়ে গণসচেতনতা সৃষ্ঠির জন্য সকলকে এগিয়ে আসার আহবান জানান। বক্তারা আরো বলেন, খাদ্যে ভেজাল, ক্যামিকেল মিশ্রণ, ফরমালিন মিশ্রণ এখন জনগনের কাছে নিত্যনৈমত্তিক ঘটনা হয়ে গেছে। খাদ্যে ভেজাল ও নকলের বিরুদ্ধে একশ্রেনীর মানুষের নিরব থাকার সংস্কৃতির কারনে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ব্যবসার নামে জনগনের পকেট কাটার প্রবনতার হার বাড়ছে আর সরকার একার পক্ষে অসৎ ব্যবসায়ী, সিন্ডিকেট এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া কঠিন।

নাগরিক হিসাবে যদি সাধারন জনগন সরকারকে সহযোগিতা করে তাহলে এই প্রাণঘাতি নকল, ভেজাল, ফরমালিন মিশ্রনের মতো জঘণ্য অপরাধ প্রতিরোধ করা সম্ভব। আর তা না হলে এই প্রাণঘাতি রোগ সমাজের সকল রন্দ্রে রন্দ্রে বিস্তার লাভ করে পুরো সমাজকে কলুষিত করে তুলবে। সেখানে পুরো সমাজাই ভেজালের স্বর্গ রাজ্যে পরিনত হবে। মেধাবী, সুস্থ, সুন্দর ও কর্মক্ষম মানুষ পাওয়া কঠিন হয়ে যাবে। পুরো জাতিই তখন রোগাক্রান্ত ও অক্ষম জাতিতে পরিনত হবে। তাই এখনই সময় নকল, ভেজাল ও ফরমালিন এবং খাদ্য দ্রব্যে বিভিন্ন ক্যামিকেল মিশ্রনকারীদের বিরুদ্ধে শক্তিশালী সাামজিক প্রতিরোধ গতে তোলা।

পরে যুব নেতা চৌধুরী কে এন এম রিয়াদকে সভাপতি, অ্যাডভোকেট জামাল হোসেন ও আবদুল আজিজকে সহ-সভাপতি, আনসারুল করিমকে সাধারন সম্পাদক, এমডি কামরুল হাসানকে যুগ্ন সম্পাদক, এমডি আশিকুর রহমানকে কোষাধ্যক্ষ, আশেকুর রহমানকে সহ-কোষাধ্যক্ষ, সাদিয়া বিনতে শাহজাহানকে মিডিয়া ও কমিউনিকেশন সম্পাদক, কারিকা মুস্তাফা চৌধুরীকে আইন বিষয়ক সম্পাদক, তাসলিমা নাসরিন লাভলীকে অফিস ও কর্মসুচি সম্পাদক, শ্রী সংকর ভেলমারামকে ট্রেইল টুইটার এবং আরফিন বিল্লাহ, ফরহাদ আহমেদ, শারমিন আলম রুম্পা, হুমায়ুন কবির মেহেদী, আফিয়া জাহান রুশমি, জায়েদ উদ্দিন, আরিফুল ইসলামকে পরিচালক করে ১৯ সদস্য বিশিষ্ঠ নির্বাহী কমিটি গঠন করা হয়। উক্ত কমিটি পরবর্তীতে আরো সদস্য কো-অপ্ট করা হবে এবং অন্যান্য কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে এর শাখা কমিটি গঠন করবে।



মন্তব্য চালু নেই