শ্রীপুরে রাষ্ট্রীয় সুবিধাভোগী ৩০ ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা

গাজীপুরের শ্রীপুরে ৩০ ব্যক্তির বিরুদ্ধে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা তালিকাভুক্তির মাধ্যমে সরকারি সুযোগসুবিধা ভোগ করার অভিযোগ উঠেছে।

শ্রীপুর উপজেলার সাবেক কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার, মুক্তিযোদ্ধের সংগঠকসহ একাধিক মুক্তিযোদ্ধারা লিখিতভাবে এ অভিযোগ করেন। মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়কে দেয়া অভিযোগের অনুলিপি কেন্দ্রীয় কমাণ্ড কাউন্সিলের চেয়ারম্যানসহ ঊর্ধ্বতন সব ইউনিট এবং গাজীপুর জেলা প্রশাসকের দপ্তরে দেয়া হয়েছে।

অভিযোগে বলা হয়েছে, রাজাকার পরিবারের সন্তান, মুক্তিযোদ্ধে অংশগ্রহণ নেই, যুদ্ধকালীন ভারতের প্রশিক্ষণ নেই বা ভারতে যাননি এমন ব্যক্তিরা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সনদপ্রাপ্ত হয়েছেন। বিভিন্ন সময়ে স্থানীয় কয়েকজন অসৎ ব্যক্তি তাদের নামে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে কাগজপত্র তৈরি করে দেন।

যারা এসব কাজে সহায়তা করেন তারা মুক্তিযোদ্ধা নামধারী অসৎ মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে এলাকায় পরিচিত। অভিযুক্ত ৩০ ব্যাক্তির মধ্যে একাধিক ব্যক্তি গাজীপুরের বাইরের জেলার বাসিন্দা। পরে তাদের শ্রীপুরের ঠিকানায় মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়।

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, ওইসব ব্যক্তিরা মুক্তিযোদ্ধার সনদ ব্যবহার করে সমাজসেবা কার্যালয় থেকে সরকারি ভাতা উত্তোলন করে আসছেন। ওইসব অভিযুক্তরা কাদের সঙ্গে যুদ্ধ করেছেন এমন প্রশ্নের জবাবে সহযোদ্ধাদের নামও বলতে পারেন না। তবে কেউ কেউ মৃত মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোদ্ধা হিসেবে বলে বেড়াচ্ছেন।

অভিযুক্ত মো. আব্দুল মালেক মণ্ডল। তার বাবা মৃত আজিজ মণ্ডল। তিনি শ্রীপুর পৌর শহরের বাসিন্দা। তিনি সাংবাদিকদের প্রয়াত দু’জন মুক্তিযোদ্ধাকে সহযোদ্ধা হিসেবে দাবি করেন। এদের মধ্যে শ্রীপুর উত্তরপাড়া গ্রামের আব্দুল বারেক এবং চন্নাপাড়া এলাকার মো. বকুল।

মো. আনোয়ার হোসেন। তার বাবা মৃত মজলিশ উদ্দিন। তিনি বর্তমানে শ্রীপুরের বাসিন্দা। যুদ্ধকালীন তিনি ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার মশাখালী এলাকার বাসিন্দা ছিলেন।

মো. রবিউল্লাহ। তার বাবা মৃত আব্দুল হাশিম। তিনি বর্তমানে শ্রীপুরের ভাংনাহাটী গ্রামের বাসিন্দা। যুদ্ধকালীন তিনি নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলার বাসিন্দা ছিলেন।

আব্দুর রশীদ। তিনি চিনাশুখানিয়া গ্রামের সুবেদ আলীর ছেলে। তার নামে গেজেট প্রকাশ হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধারা দাবি করেন তিনিও মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেননি।

মুক্তিযোদ্ধারা আরও দাবি করেন, শ্রীপুরের লতিফপুর গ্রামের মৃত মোসলেহ উদ্দিন মুন্সির ছেলে আব্দুল বাতেন মুন্সি একজন স্বাধীনতাবিরোধী গ্রুপের সদস্য। এছাড়া শ্রীপুরের নারায়ণপুর গ্রামের কেরামত আলী একজন প্রকৃত রাজাকার। তিনি ইজ্জতপুর সেতুর কাছে পাহারারত ছিলেন। মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় এরকম ব্যক্তিদের নাম দেখে মুক্তিযোদ্ধারা বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।

এ ব্যাপারে শ্রীপুর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা শংকর শরণ সাহা জানান, অভিযুক্ত কারো ভাতা বন্ধ হয়নি। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ পেলে সে মতাবেক কাজ করব।

গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মাহমুদ হাসান জানান, তদন্তের জন্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ পাওয়া গেছে। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই