শৈলকুপায় কুমার নদের উপর সেতু না থাকায় চরম দুর্ভোগ জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা
ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার দক্ষিণে ১৩ নং উমেদপুর উত্তরে ৯ নংমনোহরপুর ইউনিযন। মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে কুমার নদ। এ নদে কোনো সেতু নেই। পারাপারে বিড়াম্বনার শিকার হচ্ছে প্রায় ২০টি গ্রামের মানুষ। এলাকা বাসীরদাবী আড়িয়াকান্দি ঘাটে একটি সেতু নির্মাণ হলে সমস্যার স্থায়ী সমাধান হতে পারে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, শৈলকুপা উপজেলার আড়িয়াকান্দি এলাকায় কুমার নদের ওপর রয়েছে একটি বাঁশের সাঁকো। এর কিছু অংশ ভেঙে গেছে পানির স্রোতে । ভাঙা স্থানটি দিয়ে পানিতে ভিজে পার হচ্ছে পথচারী ও কোমলমতী স্কুলের শিক্ষার্থীরা। উমেদপুর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বই-খাতা নিয়ে পানির মধ্যে নেমে নদী পার হচ্ছে। এভাবেই প্রতিনিয়িত পানিতে নেমে তাদের যাতায়াত করতে হয়।
এলাকার অনেকে জানান, এই কুমার নদ তাঁদের এলাকার উমেদপুর আর মনোহরপুর ইউনিয়নকে আলাদা করে রেখেছে। উমেদপুর ইউনিয়ন ও মনোহরদি এই দুই ইউনিয়নে রয়েছে বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যার যাতায়াতের একমাত্র পথ কুমার নদ পারাপার। উমেদপুর ইউনিয়নে আড়িয়াকান্দি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উমেদপুরমাধ্যমিক বিদ্যালয়, উমেদপুর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, বয়েড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, রয়েড়া দাখিল মাদ্রাসাসহ বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। নদের দুই পাশে রয়েছে রয়েড়া বাজার,কৃষ্ণপুর বাজার, নাগিরহাট বাজার, শিতালী বাজার। উলে¬খিত ২০ গ্রামছাড়াও পাশের কিছু গ্রামের মানুষ বাজারগুলোতে প্রতিনিয়ত কেনাবেচা করে থাকে। তাদের পণ্য আনা-নেওয়া করতে হয় ১৫-১৬ কিলোমিটার দূরের ফাজিলপুর বাজার ঘুরে। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা মালামাল পার করে ডিঙ্গি নৌকায়।
এভাবে কষ্টকরে বছরের পর বছর চলতে হয় হাজার হাজার মানুষকে। আড়িয়াকান্দি গ্রামের নজরুল ইসলাম বলেন,প্রয়োজনের তাগিদে তাঁরা বাঁশের সাঁকো তৈরি করে নেন। বছরের সব সময়ই এই নদে পানি থাকে, কিন্তু সাঁকো থাকে না সারা বছর। তৈরির অল্প দিনেই ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যরে বাঁশের সাঁকো ভেঙে পড়ে যায়। সাধারণ মানুষকে নদের পানি ভেঙে চলাচল করতে হয়।
আবার সাঁকো দিয়ে পার হতে গিয়ে বয়োবৃদ্ধ এবং স্কুলের অনেক ছেলে মেয়ে অনেকেই পানিতে পড়ে যায় ফলে এলাকার মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই। এ ছাড়া বর্ষাকালে পারাপারের একমাত্র মাধ্যম হয়ে ওঠে ডিঙ্গিনৌকা। তখন ভোগান্তি আরও চরমে ওঠে। এভাবেই বছরের পর বছর চলাচল করছে এলাকার মানুষ। এলাকাবাসীর জোর দাবী আড়িয়াকান্দি-বিষ্ণুদিয়া ঘাটে একটি সেতু তাদের দীর্ঘদিনের দাবি ।
সরকার আসে সরকার যায়,কিন্তু,কোন সরকারীই কোন উদ্দোগ গ্রহন করেনি আড়িয়াকান্দি-বিষ্ণুদিয়া ঘাটে সেতু নির্মানের । উমেদপুর গ্রামের বাসিন্দা মনিরুল ইসলাম জানান,সেতু না থাকায় তাঁদের জীবনযাত্রার ব্যয় খুব বেশি। উমেদপুর বালিকাবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী শিখা খাতুন জানায়, সেতু না থাকায় তাদের চলাচলে খুবই কষ্ট হয় বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে। তিনি আরও জানান মাঝে মধ্যে সাঁকো পার হওয়ার সময় পানিতে পড়ে বই-খাতা নষ্ট হয়।
সেতু সম্পর্কে জানতে চাইলে ঝিনাইদহ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিব-উল-হাসান বলেন, আড়িয়াকান্দি-বিষ্ণুদিয়া ঘাটে সতু নির্মাণের পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে। এজন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ঢাকাতে পাঠানো হয়েছে। আশা করছি, অচিরেই এই এলাকার মানুষের দুর্ভোগ কমাতে আড়িয়াকান্দি-বিষ্ণুদিয়া ঘাটে সেতু নির্মাণ হবে।’
মন্তব্য চালু নেই