শেষ বুলেট থাকা পর্যন্ত নির্বাচনে অনিয়ম ঠেকাতে হবে

আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না- বিএনপি বারবার এমন আশঙ্কা প্রকাশ করলেও প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিব উদ্দিন আহমদ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের নির্দেশ দিয়েছেন- শেষ বুলেট থাকা পর্যন্ত নির্বাচনে অনিয়ম ঠেকাতে হবে। নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র দখল, ব্যালট বাক্স ছিনতাই এবং কারচুপি রোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উদ্দেশে এমন কঠোর বার্তা দিলেন তিনি।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর শেরে বাংলা নগরের জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি) সম্মেলন কক্ষে ইউপি নির্বাচন নিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান সিইসি।

তিনি বলেন, ‘এর আগে পৌরসভা নির্বাচনে দু’একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও একই রকম ঘটনার নজির আছে। তবে এবারের ইউপি নির্বাচনে এরকম একটা ঘটনাও বরদাশত করা হবে না। সবাইকে নিরপেক্ষভাবে কাজ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নিয়ে কমিশনের ওপর কোনো চাপ নেই। বর্তমান নির্বাচন কমিশন স্বাধীন বলেও দাবি করেন সিইসি।

প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে বেলা ১১টার দিকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বৈঠকে বসে ইসি। এতে সভাপতিত্ব করেন সিইসি।

বৈঠকে অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার ছাড়াও ইসি সচিব উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, চার নির্বাচন কমিশনার, সশস্ত্র বাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অব অফিসার, পুলিশ, বিজিবি, আনসার, এনএসআই, ডিজিএফআই, ডিবি ও কোস্টগার্ড, নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ সব বাহিনীর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকের কার্যপত্র থেকে জানা গেছে, প্রথম ধাপে ৬৩৪টি ইউপিতে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রায় ৭ হাজার ভোটকেন্দ্র রয়েছে। এক্ষেত্রে নির্বাচনের দিন সাধারণ ভোট কেন্দ্রে ১৭ জন করে পুলিশ ও আনসারের ১৯ জন করে ফোর্স মোতায়েনের পরিকল্পনা নিয়েছে ইসি। আর ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে ফোর্স রাখার পরিকল্পনা রয়েছে ১৯ জন করে।

অর্থাৎ নির্বাচনের দিন ভোট কেন্দ্রেই ফোর্স থাকছে ১ লাখ ২০ হাজারের মতো। তবে এ নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের বিষয়ে কার্যপত্রে কিছু উল্লেখ করা হয়নি। এতে বলা হয়েছে, ২০১১ সালের ইউপি নির্বাচনের সময় র্যাব, আর্মড পুলিশ ব্যাটেলিয়ান, বিজিবি, কোস্টগার্ড এবং সীমিত পরিসরে সেনাবাহিনী ও নৌ-বাহিনীর মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে রাখা হয়েছিল। এবার পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটেলিয়ান আনসারের সমন্বয়ে প্রতি ইউনিয়নে একটি করে ৬৩৯টি মোবাইল ফোর্স, প্রতি তিন ইউপির জন্য স্ট্রাইকিং ফোর্স রাখার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।

অন্যদিকে প্রতি উপজেলায় দুটি করে র্যাবের মোবাইল টিম ও একটি স্ট্রাইকিং টিম এবং প্রতি উপজেলায় দুই প্লাটুন বিজিবি মোবাইল ও এক প্লাটুন স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে রাখার কথা ভাবা হচ্ছে। আবার উপকূলীয় অঞ্চলে প্রতি উপজেলার জন্য কোস্টগার্ডের দুই প্লাটুন মোবাইল ফোর্স ও এক প্লাটুন স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকছে। যারা ভোটের দু’দিন আগে থেকে পরে একদিন মোট চারদিনের জন্য নিয়োজিত থাকবে।

এবার মোট ছয় ধাপে সারাদেশে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে ইসি। প্রথম ধাপে ভোটগ্রহণ ২২ মার্চ। এরপর ৩১ মার্চ, ২৩ এপ্রিল, ৭ মে, ২৮ মে এবং ৪ জুন বিভিন্ন ধাপে স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচনের আয়োজন হবে।



মন্তব্য চালু নেই