শেষ পর্যন্ত হেরেই গেল বাংলাদেশ

মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে টসে জিতে ব্যাটিং করতে নেমে ১ উইকেটে ৩৩২ রান সংগ্রহ করে শ্রীলঙ্কা। ৩৩৩ রানের লক্ষ্যমাত্রায় ব্যাটিং করতে নেমে ৪৭ ওভারে ২৪০ রানে থেমে যায় বাংলাদেশের ইনিংস। শেষ পর্যন্ত লঙ্কানদের কাছে ৯৩ রানে হেরে যায় মাশরাফি বিন মুর্তজার দল।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের শুরুটা মোটেই ভালো হয়নি। দলের স্কোরশিটে কোনো রান যোগ না হতেই প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন তামিম ইকবাল। লাসিথ মালিঙ্গার বলে সরাসরি বোল্ড হন তিনি। হতাশ করেছেন ভক্তদের। দলের রেখে এসেছেন চরম বিপদে।

এরপর অবশ্য সৌম্য সরকার ব্যাটিংয়ে ঝড় তোলেন। কিন্তু তার ব্যক্তিগত ইনিংস থেমে যায় ২৫ রানে। ১৫ বলে ৫টি চারের মারে এই রান করার পর অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসের বলে কুমার সাঙ্গাকারার তালুবন্দি হন তিনি।

এদিকে ব্যাটিং অর্ডারে পরিবর্তন এনে মুমিনুল হককে নামানো হয়। তিনিও নামের সুবিচার করতে পারেননি। দলের স্কোরশিটে ১ রান যোগ করে সুরেঙ্গা লাকমলের বলে ধরাশায়ী হন তিনি।

চতুর্থ উইকেট জুটিতে বড় স্কোর গড়ার স্বপ্ন দেখেছিল বাংলাদেশ! কিন্তু রানআউটের খড়গে পড়েন এনামুল হক বিজয়। ৪৩ বলে ১টি চার ও ১টি ছক্কার সাহায্যে ২৯ রান করেন উদ্বোধনী এই ব্যাটসম্যান। বিদায়ের আগে মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে ৪৩ রানের জুটি গড়েন তিনি।

এরপর ব্যর্থতার মিছিলে যোগ দেন দলের অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও। থিসারা পেরেরার বল উড়িয়ে মারতে গিয়ে রঙ্গনা হেরাথের হাতে ক্যাচ দেন তিনি। তার ব্যাট থেকে আসে ২৮ রান। ৪৬ বলে ৩টি চারের মারে এই রান করেন মাহমুদউল্লাহ।

অভিজ্ঞতার প্রমাণ দিয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেও ভালো খেলছিলেন সাকিব ও মুশফিক। ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ৬৪ রান দলের স্কোরশিটে যোগ করেন তারা। কিন্তু বাংলাদেশের এই লড়াইটা বেশি দূর স্থায়ী হতে দেননি তিলকারত্নে দিলশান। সাকিবকে সাজঘরে পাঠান তিনি। হাফ সেঞ্চুরি থেকে ৪ রানের আক্ষেপ বিদায় নেন বাংলাদেশের এই অলরাউন্ডার। ৫৯ বলে ৪ টি চার ও ১ টি ছক্কায় ৪৬ রান করেন তিনি।

সাকিবের বিদায় পরও বাংলাদেশের আশা একদম ফিকে যায়নি। কেননা তখনও মাঠে ছিলেন দুর্দান্ত ফর্মে থাকা মুশফিকুর রহিম। কিন্তু আশার প্রতীক মুশফিকও যে পারলেন না ক্রিজে থাকতে। দলীয় ২০৮ রানের মাথায় লাকমলের বলে সরাসরি বোল্ড হন তিনি। অবশ্য দলের প্রয়োজনে মেরে খেলতে গিয়েই তার এই পরিণতি! প্যাভিলিয়নের পথ ধরার আগে ৩৯ বলে ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ৩৬ রান করেন মুশফিক।

মুশফিকের বিদায়ের পর জয়ের স্বপ্ন ফিকে হয়ে গেছে বললেও ভুল হবে না। কারণ, এরপর যারা ব্যাটিংয়ে আসবেন তারা স্বীকৃত কোনো ব্যাটসম্যান নয়, বোলার। তাদের ব্যাট থেকে যে রান আসবে সেটাই বোনাস! এবার ব্যাটিংয়ে আসলেন দলীয় অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। কোনো কোনো ম্যাচে তার ব্যাট হাসলে বাংলাদেশের স্কোরটা বেশ সমৃদ্ধ হয়। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তেমনই এক ইনিংস প্রত্যাশা করেছিলেন ভক্তরা! হতাশ করলেন মাশরাফি। ৭ বলে একটি চারে ৭ রান করে দিলশানের বলে আত্মহূতি দিলেন তিনি।

ওভাবে না খেললেও পারতেন মাশরাফি। যে বলে তিনি আউট হলেন, তার আগের বলটি ছিল নজরকাড়া ওয়াইড! মাশরাফিকে আউট করতে ফন্দি এঁটেছিলেন দিলশান। মাশরাফি বারবার ক্রিজ ছেড়ে বের হয়ে আসছিলেন বলেই ক্রিজে বাইরে বল দেন লঙ্কান অলরাউন্ডার। যার করার তা-ই করলেন মাশরাফি। দিলশানের বলে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে আসায় স্টাম্পিংয়ের শিকার হন টাইগার দলতি।

এরপর বাংলাদেশ দলের পাওয়া সাব্বির রহমানের হাফ সেঞ্চুরি। ৬১ বলে ৫৩ রান করে মালিঙ্গার বলে সাঙ্গাকারার হাতে ক্যাচ দেন তিনি। এর ঠিক পরের বলেই তাসকিনকে সাজঘরে ফেরান মালিঙ্গা। বাংলাদেশ পুরো ৫০ ওভার ব্যাট করতে পারেনি। ৪৭ ওভারে টাইগারদের ইনিংসে সমাপ্তি ঘটে ২৪০ রানে।

৯ ওভারে ৩৫ রান খরচায় ৩ উইকেট নিয়ে শ্রীলঙ্গার সেরা বোলার লাসিথ মালিঙ্গা। সমান দুটি করে উইকেট পকেটে পুরেছেন তিলকারত্নে দিলশান ও সুরেঙ্গা লাকমল। আর থিসারা পেরেরা ও অধিনায়ক অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসের ভান্ডারে জমা হয় ১টি করে উইকেট।



মন্তব্য চালু নেই