শেখ হাসিনার সফরে বৃহত্তম প্রতিরক্ষা চুক্তি চায় ভারত

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন ভারত সফরে বড় প্রতিরক্ষা চুক্তি করতে জোর তৎপরতা চালাচ্ছে নয়াদিল্লি। প্রস্তাবিত ২৫ বছর মেয়াদি এই চুক্তির মাধ্যমে ভারত বাংলাদেশে অস্ত্র (মিলিটারি হার্ডওয়্যার) বিক্রি করতে চাইছে। সেই সঙ্গে দু’দেশের হুমকির বিরুদ্ধে একযোগে অভিযানে যেতে চাইছে। এই চুক্তি হলে ভারত অস্ত্র কেনার শর্তে বাংলাদেশকে ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ (লাইন অব ক্রেডিট) দেবে, যা দিয়ে ভারত থেকে অস্ত্র কিনতে হবে। তবে বাংলাদেশে ব্যাপক ভারতবিরোধী মনোভাব থাকায় ও বাংলাদেশের প্রত্যাশিত তিস্তা চুক্তি না হওয়ার নতুন এ চুক্তিতে সম্মত হতে দ্বিধায় রয়েছে ঢাকা। সোমবার হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে।

কয়েক দফা তারিখ পরিবর্তনের পর এপ্রিলে ভারত সফরে যাওয়ার কথা রয়েছে শেখ হাসিনার। এই সফরে যেভাবেই হোক প্রতিরক্ষা চুক্তিতে হাসিনার সই করানোর চেষ্টায় ভারত। এই চুক্তি সম্পন্ন হলে এটাই হবে কোনো দেশের সঙ্গে নয়াদিল্লির সবচেয়ে বড় আকারের প্রতিরক্ষা চুক্তি। দুই দেশের কূটনীতিকরা চুক্তির শর্ত নিয়ে দরকষাকষি চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে এখনও চূড়ান্ত সমঝোতায় পৌঁছাতে পারেননি তারা। এপ্রিলের আগেই এ ব্যাপারে চূড়ান্ত পদক্ষেপ নেয়ার প্রত্যয়ে এগুচ্ছে নয়াদিল্লি।

হিন্দুস্তান টাইমস জানায়, গত নভেম্বরে চীনের কাছ থেকে দুটো সাবমেরিন কেনায় বাংলাদেশের ওপর ক্ষুব্ধ ভারত। ঢাকার সবচেয়ে বড় সামরিক অস্ত্র জোগানদাতা চীন। গত বছর চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ঢাকায় এসে ৫ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিলেন। ভারত মনে করে, এতে চীনের আঞ্চলিক প্রভাব বেড়ে যাচ্ছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য এই প্রতিরক্ষা চুক্তিতে স্বাক্ষর করা অতটা সহজ নয়। হাসিনাকে ভারতপন্থী নেতা বলে সমালোচনা করছে বিরোধীরা। তারা বলছেন, বাংলাদেশ ভারতকে যতটা দিচ্ছে, তার সিকিও আনতে পারছে না। গত কয়েক বছরে শেখ হাসিনা ভারতের স্বার্থে অনেক বড় বড় পদক্ষেপ নিয়েছেন। সীমান্তে ভারতবিরোধী বিদ্রোহী দমনসহ কানেকটিভিটি চুক্তি করে ভারতকে সুযোগ দিয়েছেন। কিন্তু বাংলাদেশের বহুল প্রত্যাশিত তিস্তা চুক্তিতে নয়াদিল্লি স্বাক্ষর করেনি। ২০১১ সালে এ ব্যাপারে একটি সমঝোতা হলেও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির বিরোধিতায় শেষ পর্যন্ত চুক্তি স্বাক্ষর হয়নি। ১৯৯৬ সালের গঙ্গা পনিচুক্তি অনুযায়ী তিস্তা নদীর পানির ফিফটি-ফিফটি শেয়ার চায় বাংলাদেশ।



মন্তব্য চালু নেই